অণুগল্পে শ্রাবন্তী বটব্যাল

মা

সেজ কাকি। গ্রামের সকলের কাছেই সে সেজ কাকি।অশীতিপর মহিলা। ছেলেরা সবাই প্রতিষ্ঠিত। বাইরে থাকে।মায়েরখোঁজ তারা শেষ কবে নিয়েছে তা গ্রামের লোক জানেনা। জানেনা সেজ কাকিও, তার নাতি-নাতনিরা কেমন দেখতে হয়েছে। তাদের ব্যস্ত সময়ে কোথাও
সেজ কাকি নেই। সেই শুধু রয়ে গেছে ভিটের টানে একা। সেজ কাকির বাড়ির পাশে একটা বড়ো তেঁতুল গাছ।অবশ্য তার নিজের নয়। পাকা তেঁতুলের লোভে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা দুপুরবেলায় ভিড় জমায় তেঁতুলতলায়। কিন্তু সেজ কাকির অতন্দ্র চোখকে ফাঁকি দিয়ে তেঁতুল পাড়া যে কি কঠিন তা সবার জানা। গাছে ঢিল পড়লেই শুরু হতো সেজ কাকির চিৎকার গালিগালাজ। গাছ তার নয়, তেঁতুলগুলো তার কোনো কাজেই লাগবে না, তবুও সে কারুকে গাছ থেকে তেঁতুল পাড়তে দেবে না!
আসলে গাছটা ছিল তার কাছে তারই প্রতিরূপ। সে তার সন্তানদের রাখতে পারেনি নিজের কাছে, তাই প্রাণপণ প্রচেষ্টায় গাছের ফলগুলোকে আগলে রাখতে চেয়েছে। নইলে তেঁতুল গাছটাও তো তার মতোই একা হয়ে যাবে, একেবারে একা….
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।