• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় জয়ন্ত দত্ত

কৃষ্ণকলি

বহুদিন আগের কথা।সদ্য কলেজে প্রবেশ করেছি।ততদিনে জেনে ফেলেছি পূর্বরাগের রাধাকে।তবু বুঝিনি কেন বৃষ্টি মাথায় করে অন্ধকারেই যেতে হয় অভিসারে।বুঝিনি বিরহী যক্ষ কেনই বা মেঘকে দূত করে বার্তা পাঠায় যক্ষপ্রিয়ার কাছে।বুঝলাম অবশেষে বৃষ্টিস্নাত এক আষাঢ় সন্ধ্যায়।
কলেজ থেকে ফেরার পথে সেদিন মুষলধারে বৃষ্টি।দূরের বাড়ি গাছপালা সব অস্পষ্ট ছবির মতন।আটকে পড়ি বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরের বাসস্টপে।বাস নেই।সকলেই বাড়ি ফিরতে মরিয়া।বাসস্ট্যান্ডে বিরক্ত মুখে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ।হঠাৎই চোখ চলে যায় দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির দিকে।মনে হল –পাড়ায় আসা নবাগত পরিবারের সেই মেয়েটি নয়তো!যাকে নিয়ে বন্ধুমহলে কৌতূহলের শেষ নেই।ভাবলাম দেখার ভুল হল বুঝি!কাছে যেতেই ভুল ভাঙলো।এ যে মেঘ না চাইতেই জল।আকাশের দিকে মুখ তুলে বলি,’ আল্লা ম্যাঘ্ দে ,পানি দে…।’

সোজা এগিয়ে যাই তার দিকে।আপনির কোনো বাধা না রেখে প্রথমবারেই –সোজা তুমি!ততদিনে মাথায় ভর করেছে রবিবাবু।গায়ের রঙ একটু চাপা –তাই আমার কাছে সে কৃষ্ণকলি।আর যা বলে বলুক লোকে।বুঝলাম আমাকে দেখে বেশ ভরসাই পেয়েছে সে।আমিই তখন তার উদ্ধারকর্তা।এই শহরের গাইড।পাড়ায় ঢুকতেই দেখি সকলের চোখ ছানাবড়া!গলি মুখে  জমা জলে যাতে পা হড়কে না যায়,তাই হাত ধরে এগিয়ে দিই কৃষ্ণকলিকে।পাড়ার চায়ের দোকানে বসে থাকা বন্ধুদের মাথায় অবশ্য ভরা বর্ষাতেও বিনা মেঘে বজ্রপাত।

কৃষ্ণকলির হাত ধরে ভিজতে ভিজতে চলেছি –আর কতজনের স্বপ্ন  কাচের মত ভেঙে পড়ছিল ঝনঝন করে!বৃষ্টি তখন ও প্রবল ভাবে ঝরছে।বাইরে এবং ভেতরেও…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।