• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় গৌতম বাড়ই

ভাঙ্গনের উপহার

কে ডি ঘাড় তুলে ব্যালকনী থেকে দেখলেন স্বভাবমতন উল্টো দিকের ব্লকের ঈশাকে।ঈশা বা ঈশাণী মিত্রকে।সকাল আটটা।কে ডি মানে কানন দাস আর এই নামেই ফেমাস তিনি এখানে।এই কো-অপারেটিভ সোসাইটির হাউজিং ব্লকটির বয়স তাও বছর ত্রিশতো হলোই।দুকাঠা জমিতে প্রত্যেকের নিজস্ব দোতলা বাড়ি বা একতলা।মাঝে কুড়ি ফুটের রাস্তা।ঐ কুড়ি ফুট ডিঙ্গিয়ে আজ এখনও  তার ঈশা মিত্রের সাথে দেখা করা হলো না।অথচ এই ঈশা মিত্র তার জীবনের অনেক কিছু ভাঙ্গা গড়ার সাক্ষী।
সাউন্ডলেস লাভ অনেক শুনেছি কিন্তু তোমরা কি কখনো সাউন্ডলেস টাচলেস টোয়াইন লাইফ শুনেছো?এ হলো তাই।আগে চোখের চোখাচুখি ছিলো চখাচখীর।সঙ্গোপনে।ইরা তো সেই গোপন ঈশারাও বুঝে গিয়েছিল।সেদিনের কথা মনে পড়লে কেডির ঠোঁটের কোণায় আজ এক শুকনো হাসি ফুটে উঠলো।একসময় যা ছিলো চরম বিপদের।ইরা এছাড়াও কত কাল্পনিক ব্যথা বুকে লুকিয়ে রাখতো।
এটা কি তোমার আই মিন কেডির মোবাইল নাম্বার?একটা এসএমএস।
হাঁ।আমি কেডি, আমার নাম্বার।লিখলো।
হাউজিং এর গেটের দারোয়ানের কাছ থেকে নিলাম।এবার থেকে এখানে শুধু মেসেজ করবে ঐ সর্ট মেসেজ।
ওকে।আচ্ছা।
ইরার শাসন বাঁধনের নাগপাশ থেকে কেডি তখন মুক্ত।হলে কি হবে? এতদিনের অভ্যেস সে নারী পুরুষ কেউই ভাঙ্গতে পারে না সহজে।কেডিও পারে নি।ঈশাণী মিত্র বাংলার দিদিমণি ছিলেন গার্লস হাই স্কুলের।কেডি ফিলোসফির প্রফেসর।দর্শন আর সাহিত্য মুখোমুখি থেকে গিয়েছে, সামনে এসে দাঁড়ায় নি কখনো।আজ ঘটনা নদীর প্রবাহের ধারায় জীবনে দুজন একাকী।তবুও এ জীবনে মুখোমুখি তারা এখনও।
গেট দিয়ে দুজন সিকিউরিটিদের জিগ্গেস করে কেডির ঘরের দিশা জেনে নিলো।বেল বাজতেই কেডি ধীর পদক্ষেপে দরজা খুলে দেয়।
স্যার আগামীকাল তাহলে সকাল আটটায় পাঠিয়ে দেবো।
একদম।সময়ের ব্যাপারে এলেবেলে হলে চলবে না মনে রাখবেন।
দুজন এরপরে বেরিয়ে গেলেন এ হাউজিং এস্টেট ছেড়ে। ওরা বেরিয়ে যাওয়ার পর কেডি ঈশাকে মেসেজ করে।কানন দাস কেডির মধ্যে আবর্তিত হতে হতে এই অবেলায় সোফায় বসে ঘুমে ঢলে পড়ে।ঈশা মেসেজ পেয়ে ব্যালকনীতে এসে দেখে কেডি তো নেই।ভেতরে ভেতরে চঞ্চল হয়ে ওঠে সে।
খুব ভোরে গন্ধরাজের সৌরভ ঈশার নাকে এসে লাগে।ছুটে এসে ভোরের ব্যালকনীতে বসে।আরে এত ভোরে কানন ও বসে আছে।অবাক
ভালোলাগায় বিভোর হয় সে।ভালোবাসায় শুধু তারুণ্য বলে কিছু হয় না!ছুটে গিয়ে মোবাইলটা আনতে যায় ঘরের ভেতর ঈশা।
মেসেজ করাই ছিলো।দরজা খুলে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে ছিলো ঈশা।বোকেটা হাতে দিয়ে কেডি জানালো,মেনী মেনী হ্যাপী রিটার্নস অফ দ্যা ডে।এবার আসি।
বসবে না? আজ তো একটুকরো মিষ্টি মুখ করতেই হবে।
সাউন্ডলেস টাচলেস টোয়াইন লাইফের আজ ত্রিশ বছর হলো।কেডি হাত বাড়িয়ে ঈশার সাথে সেকহ্যান্ড এ সেটাও ভেঙ্গে দিলো।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।