অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় দিলীপ কুমার মিস্ত্রী
by
·
Published
· Updated
নিউ ডিজিজ
সাইকিয়াট্রিস্ট ডক্টর কর্মকারের চেম্বারে মুখোমুখি বসে রয়েছেন অধ্যাপিকা মিসেস মিত্র। না, ওঁনার নিজের কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা পুত্র অনুময়কে নিয়ে। আঠাশ বছরের ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেটা বরাবরের মেধাবী,বাধ্য এবং শান্তশিষ্ট। কিন্তু কিছুদিন হল, সে ভীষণ অসংলগ্ন আচার–আচরণ করছে। দু’জনের আলোচনা চলছে।
‘সমস্যাটা কতদিনের ?’
‘এইতো, অল্পদিনের।‘
‘হঠাৎ এমন যে হল,কী কারণ হতে পারে ? আপনার নিজের কী মনে হয় ?’
‘কি বলবো বলুনতো। হঠাৎ কী করে, কী যে হয়ে গেল,আমি কিছুতেই কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। ছেলেটা বরাবরই সকলের খুব বাধ্য ছিল। মাত্র কয়েকটা দিনের মধ্যে কেমন হয়ে গেল।‘
‘একমাস ধরে তো লকডাউন চলেছে। ও তো এতোদিন গৃহবন্দী হয়েই ছিল। তাহলে,কী করে হল এমন পরিস্থিতি ?’
‘আমি তো আপনাকে ওই লকডাউনের কথাটাই বলতে চাইছি। আমার মনে হয়, ওটাই এর মূল কারণ।‘
তাই ! কিন্তু এমনটা ভাবছেন কেন ? লকডাউনের সঙ্গে ছেলের এমন বদলে যাওয়ার সম্পর্ক কী থাকতে পারে ?’
‘দেখুন,ঐ সময়ে সমস্ত মিডিয়ায় ডাক্তারবাবুরা বারবার পরামর্শ দিচ্ছিলেন, একঘন্টা অন্তর হাত–ধোয়া খুবই জরুরী। ব্যাস, বাজার থেকে সমস্ত হ্যান্ডওয়াস, স্যানিটাইজার উধাও হয়ে গেল নিমেষে। তখন ছেলে আমার এক ডাক্তার–বন্ধুর কথামতো অ্যালকোহল জাতীয় কোনো ড্রিংকস নিয়ে এসেছিল। ওদিয়েই হাত ধুচ্ছিল। তারপর, গৃহবন্দী থাকার অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে, মাঝে–মধ্যে ওই চাই–পাঁষ খেয়ে ফেলছিল। ব্যস ! সেটাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। এখন ওটা পাচ্ছে না বলেই—-! ডক্টর,আমি বলছি আপনাকে,ঐ লকডাউন ব্যাপারটা না এলে, আমার ছেলেটার এমন রোগ হোতোই না।‘
‘রাইট ইউ। আই অলসো সাসপেক্ট দ্য সেম । রোগটা করোনা রিলেটেড এবং লকডাউনের সাইড এফেক্ট মনে হচ্ছে। মোস্ট ক্রিটিক্যাল আই থিংক ! বাট কিউরিবেল্। ডোন্ট অরি মিসেস মিত্র।