ছটা বাজতেই সুমনা পা চালিয়ে গলির মুখে এলো। এই ভাবে বাড়ি থেকে মিথ্যা বলে বলে বেরোনো হয় নাকি! দেবায়নের উপর বিরক্ত ধরে যাচ্ছে দিন দিন! আজ এসো, কাল এসো! আর নিজের বাড়ির বেলায় জম্মের ভয়!
— আরে, এখানে দাঁড়িয়ে করছ!
উফফ পাড়ার লোককে এমনি ভয় সুমনার এড়িয়ে চলতে পারলে বাঁচে তার মধ্যে এই লোকটা বহু দিন ধরেই সুমনার প্রীতি পাগল! যাক গে, এ তাও বোকা বোকা টাইপের আছে!
— আরে, এই তো মেয়ে কে আনতে যাচ্ছি, টিউশন থেকে
— এদিক দিয়ে! এখানে পড়ে নাকি
— না না, এদিক দিয়ে শর্ট হয় তো!
— ও আচ্ছা আচ্ছা যাও! বোকা বোকা প্রেমিক হাসি হাসলো লোকটা!
যাহ, দেবায়নের জ্বালায় ভালো মানুষ কেও মিথ্যে বলতে হয়! সুমনা লজ্জিত হলো মনে মনে
দেবায়ন হাতের মুঠো খুলে একটা কাগজের মোড়ক দিল সুমনার হাতে
— এটা কি!
— দেখো না!
— ওমা আবির! এই জন্য তুমি জোর করে আসতে বলেছিলে! উফফ!
— হ্যাঁ! কিন্তু এটা তোমার না! তোমার অন্য টা!
— এমা এটা তো গোলাপি আবির, আমার হলুদ রঙ টাই পছন্দ ছিল।
— হোক! দেবায়ন ভুরু কোঁচকালো। তুমি কি আমার বন্ধু নাকি হলুদ রং দেব!
সুমনা হাসলো, হাসি ছড়িয়ে পড়ল বিস্তারে সন্ধ্যার আস্ত থালার মত বড় চাঁদের কাছে!
— আমি কি তবে!
— উত্তরের বদলে গাল এগিয়ে দিল দেবায়ন
— মাগো! এই রাস্তায়!
দুজনের জোরে করে হেসে উঠল
এক মুঠো বসন্ত বুকে নিয়ে ফিরছে সুমনা, গলির ঠিক মুখে ঘুরতেই দেখল লোকটা দাঁড়িয়ে!
আমি কিছু দেখিনি, আসলে এদিক টা আর একবার আসার দরকার হয়ে পড়েছিল!
সুমনা দেখল ক্যাবলা লোকের পরিচিত হাসিটি উধাও, বদলে ক্রুর হাসি ঠোঁটের কোণে!
কাল ফোন করবো, আমার ফোন টাও একটু ধোরো প্লিজ! বিশ্বাস করো, আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি!
সুমনা দরদর করে ঘামছে! কপালে হাত দিয়ে দেখল দেবায়নের দেওয়া আবির গলতে শুরু করেছে।