• Uncategorized
  • 0

অনুগল্পে আলোক মণ্ডল

ব্ল্যাক লিস্টেড

প্রতিটা পোস্টে এতো করে লাইক দিলাম তবু আমাকে বলল না!  এক গভীর হতাশার সুরে একথা বলেছিল অনির্বাণ।
রাস্তার গাড়ির ঠেকে চা খেতে খেতে কত কিছুই তো আলোচনা হয় এক সংগে সবাই বসি, খাই,রাগ-অভিমান করে কেউ কেউ চলেও যাই আবার ফিরে আসি।এই ঠেকের টান এতো অমোঘ যে একদিন কেউ কিছুক্ষণের জন্যও অন্তত না এসে থাকতে পারে না।
এই ঠেকের মধ্যেই   আবার কত ছোট ঠেক,একজন চলে গেলেই আর একজনের নিয়ে কত আলোচনা কত, কত কানাকানি,কত কুটকাচালি!  তবু কেউ বিপদে পড়লে সব-ছোট ঠেকই এক হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাহায্যের ডালি নিয়ে।ঠেকে প্রতিদিন নানা বিষয়ে আড্ডা হয়,কখনও মহাকাশ তো কখন সেতার কখনও বা নিছকই আড্ডা পেছুনে লাগা!
সেদিনের আড্ডার বিষয় ছিল এই ফেসবুকে কে কেমন রিযাক্ট করে – তাই নিয়ে।
অনির্বাণ  বলল,তোমার পোস্টে লাইক দিলাম মানে আমি পড়ি বা না পড়ি তোমার সাথে আছি, সবটাই বিশ্বাস, মানে ভালোবাসা আর কি! বলতে পারো পুরোপুরি ভরসা। আর লাল হরতন মানে মনে প্রাণে আছি তবে তোমার বক্তব্য  যে পড়েছি তা বলা যায় না,তবে ভালোবাসা দেগে দিয়েছি অগাধ বিশ্বাসে!আরও আছে কান্না ঝরা মুখ, বিস্ময়ের মুখ,বিরক্তির মুখ। সচরাচর এগুলো খরচ করি না!
অনির্বাণের ঐ একটাই অভ্যেস না পড়েই লাইক মারা,আগাপাস্তলা কিছু  না ভেবে অন্য মুখগুলো না নিয়ে নাড়াচাড়া না করে শুধু বুড়া আঙুল দেখানোই ওর অভ্যেস। শুধুই লাইক মারা!
তার ফল পেয়ে গেল আজ হাতে-নাতে।নো নিমন্ত্রণ! এক্কেবারে ব্ল্যাক লিস্টেড!
হয়েছে কি সুনির্মলের বাবা হঠাৎ গত পরশু গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রন্ত হয়ে মারা গেলেন। ওর বাবা ছিলেন জেলার এক নামী নাট্যকার তাই তার মৃত্যুর সংবাদটা অনির্বাণকে ট্যাগ করেই একটা মর্মস্পর্শী পোস্ট  দিয়েছিল অতনু। অনেকে  তা পড়ে আন্তরিক ভাবেই শোকজ্ঞাপন করে,অনেকে স্মৃতির সরণী বেয়ে  অনেক কথাই লিখেছিল,কেউ আবার  অতি।ব্যস্ততায় শুধু কান্নাঝরা মুখ  কমেন্টে বক্সে তুলে দিয়ে স্যাড মানে দুঃখ প্রকাশ করেছিল। আর অনির্বাণ অভ্যেস মতো তাতেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল অর্থাৎ  প্রিয়বন্ধুর বাবার মৃত্যুতে তার কাঁচকলা প্রদর্শন! তার অনিবার্য ফল  স্মরণ অনুষ্ঠান ও ভোজসভায়  সে ব্ল্যাকলিস্টেড!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।