• Uncategorized
  • 0

উলি বাবা লে -তে তুলি রায়

তিন্নি

ছোট্ট বন্ধুরা কেমন আছো সবাই? পুজোর ঢাকে কাঠি পড়লো বলে,আর মাত্র একটা মাস।  কিন্তু ছোট্ট তিন্নি, তার এসব ভাবার একটুও উপায় নেই কারণ সামনেই এক্সাম।  উফ্ স্কুলে কেন যে এমন সময় এক্সাম আসে। কয়েক মাস আগেই কাশ্মীর থেকে ঘুরে এসেছে মা,পাপার সাথে। চোখ বুজলে এখনও সে বরফ দেখতে পায়, ম্যাথের খাতায় সে দেখতে পায় একটা পাহাড়ের মাথায় বসে আছে শিব ও পার্বতী ঠাকুর। ও তাদের চারপাশে দৌড়চ্ছে আর একবার করে ছুঁয়ে আসছে, আবার দৌড়চ্ছে আবার ছুঁচ্ছে। কী অদ্ভুতভাবে তার একটুও ঠান্ডা লাগছে না। বরফ নিয়ে খেলছে, তার উপর গড়াগড়ি দিচ্ছে, বরফ নিয়ে গোলা বানাচ্ছে, পুতুল বানাচ্ছে, তাতে চোখ আঁকছে, মুখ আঁকছে, বানিয়ে দিচ্ছে মাথার চুল, বাগান থেকে ফুল তুলে নিয়ে তার মাথায় পরিয়ে দিচ্ছে। এসব করে সে নিজেই খিলখিলিয়ে হাঁসছে, আনন্দে হাততালি দিচ্ছে।  এমন সময় গনেশ ঠাকুর এসে হাজির।  সে তিন্নির এই কাণ্ডকারখানা দেখে নিজেই খেলতে বসে গ্যালো ওর সাথে। ভালোই হলো, তিন্নির’ও একটা খেলার সঙ্গী হলো। হঠাৎ তিন্নি কেঁদে উঠলো।  শিব ঠাকুর ও পাবতী দূর থেকে এতক্ষণ সবকিছুই দেখছিল কিন্তু হঠাৎ তিন্নির কান্নায় তাঁরা বুঝে উঠতে পারলেন না কী হয়েছে, গনেশও অবাক।  তিন্নি কেঁদেই চলেছে, তার কান্না আর থামে না। অবশেষে পাহাড় থেকে নামলেন শিব ঠাকুর এবং তিন্নির কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন তোমার কী হয়েছে? তাতে করে কান্নার জোর আরো বেড়ে গ্যালো তিন্নির। ওর কান্নার আওয়াজে পাহাড়ে তখন কান পাতা দায়। গনেশের বেচারি হালাত খারাপ তখন। একে সে নিজেও ছোট তার উপর এত বড় বড় কান তার।  সব আওয়াজ গিয়ে যেন তার কানেই ঢুকে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে সে একটা ইয়া বড় একটা  হেডফোন পরলো কানে আর তাই দেখে তিন্নি কান্না গ্যালো ভুলে।  এক দৌড়ে এসে বসে পড়লো গনেশের পাশে, তারপর চোখ বড় বড় করে বললো গেম খেলবি? ব্যাস দুজনে লেগে পড়লো ‘ক্রাউড সিটি’ খেলতে।  এদিকে দিন গড়িয়ে কখন যে দুপুর হয়ে গ্যাছে সে খেয়াল আর কই।  হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি তে তিন্নি চমকে গ্যালো, খুলে গ্যালো চোখ। কোথায় বরফ, পাহাড় কই গ্যালো? আর শিবপার্বতী ঠাকুর? গনেশই বা কই গ্যালো? ওকি তাহলে  ঘুমোচ্ছিল ম্যাথ কপি’র উপর মাথা রেখে? বিকট আওয়াজে বেচারী কেঁপে গ্যালো।  কে যেন বললো এসব কী করেছিস খাতায়? তোকে না ম্যাথ করতে দিয়েছিলাম? রাত পোহালে তোর না এক্সাম! ওমাগো, আমি এ মেয়েকে নিয়ে কী করবো ঠাকুর বলে দাও….
পুনশ্চ: যাবার আগে চুপিচুপি বলে যাই, তোমরা ছোটরা যাখুশি আঁকো কিন্তু তা কখনই ম্যাথের খাতায় নয়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।