“এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো” বিশেষ সংখ্যায় সাত্বকী বসু

প্রিয়তমা
সু,
তুমি খুব ভালো করে জানো,এই পাঁচটা বছর ধরে আমি তোমায় একতরফা ভালোবাসি। এই পাঁচটা বছরে আমি একবারও তোমার উত্তর জানতে চাইনি।শুধু একতরফা ভালোবাসাতে একটা আলাদা আনন্দ আছে,একটা আলাদা তৃপ্তি আছে,যেটা কারুর সাথে ভাগ করে নেওয়া যায় না,সেটুকু চুটিয়ে উপভোগ করেছি। তুমি সবটুকু জানতে তাও কিচ্ছু বলোনি,যদি নাই জানতে, তুমি স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফর্মে সেদিন বসেছিলে আমি যখন তোমায় একদৃষ্টে দেখছি,তুমি অমন রাগী রাগী দৃষ্টিতে দেখলে কেন অমন করে,যদি তুমি নাই জানতে সেদিন রিক্সা স্ট্যান্ডে আমায় দেখে অমন করে চুল উড়িয়ে মুচকি হেসে কেন ছেড়ে গেলে আমায় ? আমি তোমার কাছে কোনোদিন এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করিনি,যে ভালোবাসো কিনা ? কিন্তু আজ করছি,আজ উত্তর চাইছি। আমি তোমার কাছ থেকে উত্তর চাইছি,কারণ আর বেশী দেরি হয়ে যাক সেটা আমি চাইনা।এবার ভালোবাসা হোক,আমি চাইছি খুব করে।কেন চাইছি জানিনা ! আমি এটাও জানি তোমার প্রত্যেকটা শখ,প্রত্যেকটা আল্লাদ,প্রত্যেকটা চাওয়াপাওয়া মেটানোর মতো সাধ্য আমার নেই,কিন্তু তোমাকে এই বুকে ভীষণরকম ভালোবেসে আগলে রাখার ক্ষমতা আমার আছে,এটা আমি জানি।এতটাই কি যথেষ্ট নয় ? এতদিন ব্যাস্ত রেল প্লাটফর্মে,ট্রেনের কোম্পারমেন্টে তোমার খোলা চুলে, তোমার গোলাপী ঠোঁটে আমি চোখ সার্থক করেছি,তোমার রূপে মুগধ হয়েছি।সেই তোমার ছটফটে ফড়িংয়ের মতন চলন, আমার মনের ভিতর উথালপাথাল অনেক হয়েছে ।আমি জানিনা যখন তুমি আমার সামনে আসবে কোনো কফিশফে তোমার নরম ঠোঁট গরম কফির কাপে চুমুক দিয়ে চমকে উঠবে,আমি কিভাবে নিজেকে সামলে নেব।স্বপ্ন দেখা সহজ,কিন্তু সেই স্বপ্ন সত্যি হলে তাকে উপভোগ করার মতো ক্ষমতা চাই।আমি জানি আমার সেই ক্ষমতা আছে,এতদিন যখন একতরফা ভালোবেসেছি,তখন এতটুকু সত্যি সহ্য করার ক্ষমতা আমার আছে।আমি জানিনা কেমন করে বলতে হয় ভালোবাসি,আমি জানিনা প্রেমিকাকে নিজের প্রেয়সীকে ঠিক কোন উপহারটা দিলে সে সবথেকে খুশি হবে।আমি শুধু ভালোবাসতে জানি।আমি তোমায় রাতের গভীর ঘুমের মধ্যে উপলব্ধি করতে জানি,চোখ বুজে তোমার হাসি হাসি,দুষ্টুমি মাখানো মুখটা ভাবতে ভীষন ভালো লাগে। বিশ্বাস করো তোমার ওই সুখে গড়া জগতটায় আমার ঢোকার কোনো ইচ্ছে নেই,শুধু তুমি একটাবার আমার কথা ভেবো,খুব যেদিন কষ্ট পাবে আমায় মনে করে একটাবার ফোন করে খুব কেঁদো, তোমার আনন্দের সঙ্গী ওরা হোক,আমি তোমার দুঃখবিলাসী দিনের মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হতে চাই। এতদিন আমি তোমায় একলা একলা উপভোগ করেছি,ফাঁকা ট্রেনে পাশের সিটটায় তোমার উপস্থিতি চিন্তা করে আমি আবেগে ভেসেছি,আমি জানি এগুলো অন্যায়,খুব বড় ভুল, পারলে একটিবার ক্ষমা করে দিও।
আমি যে প্রতিদিন তোমায় ভালোবেসে স্বপ্ন দেখি সু,একটিবার ভেবে দেখো।আমি জানি তুমি আমায় ফেরাবে না,আর ফেরালেই বা খুব ক্ষতি হবে আমার ?
যেমন করে এতগুলো দিন ভালোবেসেছি,বাকি দিনগুলোও সেভাবেই নাহয় কাটাবো। ভালো থেকো। তোমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম ।
ইতি
তোমার দ্বীপ
এতদূর পর্যন্ত চিঠিটা লিখে পেন থামলো জিতেন্দ্র ওরফে দ্বীপের,টেবিল ল্যাম্পের আলোছায়ায় কফির কাপ থেকে আর ধোঁয়া উড়ছে না।এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় কফিটা অনেকক্ষন আগেই জুড়িয়ে গেছে। দ্বীপ পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করে টেবিলের উপর রাখলো।একটা সিগারেট বের করে ধরাতেই ও বুঝতে পারলো ব্যাপারটা, এই ঘরে কেউ যেন রয়েছে।আগুন জ্বালাতেই যেন পাশের দিকে সরে গেলো সে।দ্বীপ সদ্য কলেজ শেষ করে,এখন চাকরির চেষ্টায়।সে সুতপাকে ভালোবাসে, সেই ক্লাস ইলেভেন থেকে,প্রথম কেমিস্ট্রি টিউশনে গিয়ে সুতপাকে দেখে ভালো লাগে তার,তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ও একবারও মুখ ফুটে বলতে পারেনি।স্কুল শেষ হতেই কেমিস্ট্রি টিউশন শেষ হয়েছে।কলেজে ঢুকে সুতপার খবর ও পায়নি বেশ কয়েকদিন।হটাৎ একদিন বর্ধমান স্টেশনে ও দেখতে পায় তার সুতপা ওরফে সু কে। সু নামটা তার ভালোবাসে দেওয়া।ও খবর নেয় সুতপার।সুতপা বর্ধমানেই পড়াশোনা করছে।এরপর ইন্সট্রাগ্রাম ও ফেসবুকে ঘুরঘুর করা,আর স্টেশনে দেখতে পেলে ক্যাবলার মতো সুতপার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া মুখচোরা জিতেন্দ্রর আর কিছুই করা হয়ে ওঠেনি।কিন্তু কাল অভীক যেভাবে প্যাঁক মরলো,অন্তত পুরুষমানুষ হলে কিছু একটা করা দরকার,এই চিন্তাভাবনা থেকেই চিঠিটা লিখে ফেলা ।চিঠিটা কিভাবে ওর হাতে পৌঁছে দেবে সেকথাও ভেবে রেখেছে দ্বীপ।শুধু সকালটা হওয়ার অপেক্ষা।
কিন্তু একটা ব্যাপার,দ্বীপের বারবার খটকা লাগার কারণ ওই যে তার কেমন যেন একটা মনে হলো,কেউ যেন ছিলো । ধূর কে থাকবে আবার ! যতসব মনের ভুল ছাড়া আর কিছুই না। এইভেবে চিঠিটা ভাঁজ করে সে ড্রয়ারে রাখলো।সিগারেটটা শেষ করে জানলা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে,টেবিল ল্যাম্পটা নিভিয়ে নাইট ল্যাম্প জ্বালিয়ে শুয়ে পড়লো সে।রাত প্রায় দুটো, মাথায় কিসের একটা ছোঁয়ায় সে হকচকিয়ে গেলো ঘুমটা ভেঙে গেলো দ্বীপের।ঠিক কে যেন তার মাথায় নরম হাতের স্পর্শে বিলি কেটে দিচ্ছে। ও চমকে উঠে বসতেই একটা ছায়ামূর্তি যেন ফস করে উধাও হয়ে গেলো। বেড সুইচ টিপে আলো জ্বালাতেই একরাশ আলো যেন লাফিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো তার সমস্ত অবসন্নতাকে। ধূর কিসব হচ্ছে আজ আমার সঙ্গে! যতসব আলফাল চিন্তা।এই ভেবে আবার আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লো দ্বীপ।সমস্ত ক্লান্তি যেন আবার তাকে জড়িয়ে ধরলো,ঘুমের অতলে তলিয়ে গেলো দ্বীপ।
সকালে ঘুম থেকে উঠতে বেশ বেলা হয়ে গেলো দ্বীপের,সারা গা হাত পায়ে একটা অদ্ভুত আড়ষ্টতা খেয়াল করলো দ্বীপ।এরকম তো হয়না সাধারণত।আড়মোড়া ভেঙে উঠতেই তার খেয়াল পরলো আজ তো তার পড়ানো আছে,অমিতদের বাড়ি।বেশ খানিকটা দেরী হয়ে গেছে তার। মাকে তাড়া দিয়ে জলখাবার খেয়ে তৈরী হয়েই বেড়োলো দ্বীপ।চিঠিটা পকেটে নিতে ভুললো না।পড়ানো শেষ হতে দ্বীপের বাজলো প্রায় সাড়ে এগারোটা।এরপর অতনুকে ফোন করলো দ্বীপ।
– কি রে ভাই,সব তৈরি তো ওদিকে ?
অতনু জানালো আজ সম্ভব নয়,সে খবর নিয়ে দেখেছে বেশ কয়েকদিন সুতপা ওদিকে যায়নি,আজ যে আসবে সেই সম্ভবনা কম,ও যেন কাল একবার খোঁজ নিয়ে দেখে,সুতপা এসেছিলো কিনা! বেশ মনখারাপ হলো দ্বীপের।ফোনটা রেখে সে চিন্তা করলো, একবার ঘুরে আসবে ? পরক্ষণেই ভাবে থাকে আগে অতনু কি জানায় দেখাই যাক।নাহলে অতটা সাইকেল নিয়ে গিয়ে শুধু শুধু ! এই চিন্তা করে সে ফিরে এলো বাড়িতে।চান খাওয়াদাওয়া,দুপুরে ঘুম,বিকেলে আড্ডা সবই হলো,কিন্তু মনটা কেমন যেন হয়েই রইলো সারাদিন।
রাতের খাওয়া শেষে সে ঘরে আসতেই কেমন যেন একাকীত্ব ঘিরে ধরলো তাকে।আলনায় ঝুলিয়ে রাখা প্যান্টটার দিকে তাকাতেই তার খেয়াল পড়লো,প্যান্টের পকেটে রাখা চিঠিটা তো বের করা হয়নি তার।সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে,সমস্ত পকেটগুলো খুঁজে ফেলেও সে কোনোভাবেই চিঠিটা খুঁজে পেলো না। মনটা যেন আরো ভেঙে পড়লো তার।সে পরক্ষণেই ভাবলো,চিঠিটা আদৌ নিয়ে বেড়িয়েছিলো তো সে।এইভেবে যে ড্রয়ারে সে চিঠিটা রেখেছিলো, সেই ড্রয়ারটা টেনে বের করলো সে।দেখে খুশিই হলো বেশ,চিঠিটা রয়েছে।কিন্তু চিঠিটা খুলতেই চমকে উঠলো সে,
সেখানে শুধু লেখা আছে
দ্বীপ,
আমি তোকে কিছু বলতে চাই।পারলে কাল রাত ঠিক সাড়ে দশটায় সদরঘাট ব্রিজে অপেক্ষা করিস।

ইতি
সুতপা
এটা কেমন ব্যাপার হলো।ও তো চিঠিটা এখনো পৌঁছাতে পারেনি সুতপার কাছে।আর এখানেই বা এই চিঠিটা বাড়ির সকলের চোখ এড়িয়ে রাখলোই বা কে ? আর অত রাতেই বা দেখা করতে কেন বলছে ও ?
ওর মনে একরাশ আনন্দ, আর চিন্তা মিলেমিশে সাঁতার কাটতে লাগলো। না আর পারা যাচ্ছে না। এবার একটু শোয়া যাক।চিঠিটা যখন এসেছে,ও দেখা করতে যখন চেয়েছে,একবার যাওয়াই যাবে,যাহয় তা দেখা যাবে।এই ভেবে আবার সে বিছানায় শুয়ে পরলো লাইট নিভিয়ে দিয়ে। শুতেই গাঢ় নিদ্রায় আচ্ছন্ন হলো দ্বীপ।
না সে রাতে আর ঘুমের অসুবিধা হয়নি দ্বীপের। পরেরদিন একেবারে সকাল আটটায় ঘুম ভাঙতেই গত রাতের চিঠিটার কথা মনে পড়ে দ্বীপের।ও ছুটে গিয়ে ড্রয়ার খুলে চিঠিটা খুলতেই দেখে হ্যাঁ ঠিকই আছে চিঠিটা,একইরকম।দ্বীপ আর কিছুই ভাবতে পারেনা।শুধু তার মাথায় একটা কথা তীরের মতো গেঁথে যায়,আজ রাতে তাকে যেকোনো প্রকারে বেরোতেই হবে।
একটা অবসন্নতা নিয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে ও।মাকে জিজ্ঞেস করে কাল কেউ বাড়িতে এসেছিলো কি না? মা না উত্তর দিতে,আরো চিন্তা বাড়ে।তবুও ফ্রেস হয়ে জলখাবার খেয়ে নেয়।গাড়ির চাবি নিয়ে গাড়িটা নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় দ্বীপ।একটা গোলাপ ফুলের তোড়া,আর একটা ক্যাটবেরি তো অন্তত নিতে হবে।যতইহোক প্রথমবার দেখা করতে চলেছে তারা।
এভাবে অসম্ভব একটা উৎকন্ঠায় দিন কাটার পর,রাত নামে।ডিনারটা যাহোক করে ও অপেক্ষা করতে থাকে,কখন সবাই ঘুমিয়ে পড়বে। সে সকলের চোখের অলক্ষ্যে বাড়ি থেকে বেরোতে চায়,আর এইসব ব্যাপারে কেই বা বাড়িতে বেশি জবাবদিহি করতে চায়।অবশেষে রাত ঠিক দশটা পঁচিশ,চুপি চুপি বাড়ি থেকে বেরোতে পারে।সাইকেল নিয়ে রাস্তায় যেতে যেতে রাতের হিমেল হাওয়া ওকে ছুঁয়ে বারবার মিলিয়ে যায়।অবশেষে ও গন্তব্যে পৌঁছায়।সদরঘাট ব্রিজের উপর থেকে গোটা মফঃস্বল শহরটা ভালোভাবে দেখা যায়,আলোর মেলায় যেন সেজেছে চারিপাশ। কিন্তু ব্রীজের উপরটা এদিকটা বেশ অন্ধকার।বেশ কয়েকমিনিট কাটলো এভাবেই।দ্বীপ ভাবে, কি হলো ব্যাপারটা ? ও কি আমার সাথে মজা করলো নাকি! বেশ খানিকক্ষণ একা একা দাঁড়িয়ে থাকার পর,বিরক্ত হয়ে ফিরতে যাবে,ঠিক সেই সময়
– কি রে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছিস বল ?
সুতপার গলার আওয়াজ,চমকে পিছনে ঘোরে দ্বীপ,দেখে সুতপা দাঁড়িয়ে।তবে মুখটা কিভাবে যেন ওড়নায় ঢেকে রেখেছে।
দ্বীপ আমতা আমতা করে জিজ্ঞাসা করে
– কো কোথায় থাকিস আজকাল ? মুখটাই বা ওভাবে ঢেকে আছিস কেন ?
ওর কথার উত্তর দেয়না সুতপা,শুধু বলে
– ভালোবাসিস আমায় ?
দ্বীপ এবার হকচকিয়ে গিয়ে উত্তর দেয়,
– হ্যাঁ তো ! সেই ক্লাস ইলেভেন থেকে,কিন্তু শোন না তুই,
দ্বীপকে মাঝরাস্তায় থামিয়ে দিয়ে সুতপা বললো,
– আমি জানি তুই আমায় সত্যি খুব ভালোবাসিস ? এখন আরো ভালো বুঝতে পারছি,কিন্তু আমি মরার আগে বলতে পারতিস।
দ্বীপ এবার চমকে যায়,
– মরার আগে মানে ? কি যা তা বলছিস! রাত দুপুরে কিসব ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি ! মুখটাও ঢেকে এসেছিস। দাঁড়া তোর জন্য একটা জিনিস এনেছি,
এই বলে দ্বীপ ঘুরতে যাবে, হটাৎ দেখে একটা ট্রাক ছুটে আসছে বিপরীত দিক থেকে,সুতপা পাগলের মতো ছুটে যাচ্ছে তার দিকে,
দ্বীপ চিৎকার করে ওঠে,
– সুতপা ! সুতপা !
সবকিছু যেন মুহূর্তের মধ্যে মিলিয়ে যায়,বাতাসে মিশে যায় একটা অদ্ভুত চামড়া পোড়া গন্ধ,সেই গন্ধে মাথা ধরে আসে দ্বীপের। দ্বীপ জ্ঞান হারানোর আগে কেবল একটা কথাই শুনতে পায়,
– আমি চলে গেছি রে দ্বীপ,তোর জীবনটা তো শুরুই হয়নি রে,সব আবার নতুন করে শুরু করিস।নতুন কাউকে ভালোবাসিস !
দ্বীপ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
সাইকেলের খাঁচায় রাখা ফুল আর চকোলেটগুলো হাওয়ায় মিশে যায় হটাৎ করে।
একটা প্রশ্ন বাতাসে ঘুরপাক খেতে থাকে পাগলের মতো,
– দ্বীপ কি পারবে,আবার নতুন করে কাউকে ভালোবাসতে ?

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।