আমি শ্রেয়ানকে জিজ্ঞাসা করলাম “বস্ বিকালে ফ্রি আছিস?” শ্রেয়ান আমতা আমতা করে বলল, “কেন বলতো? আসলে একটা অ্যাপো ছিল” আমার বেশ রাগই হল। বললাম, “রাখতো তোর ফ্লার্টবাজি। কটা কাজ আছে। আমাকে বাইকে নিয়ে চল্ গায়ে, হাত, পায়ে যা ব্যথা। হাঁটতে খুব কষ্ট হবে। শ্রেয়ান বলল, “আরে, অনেক কষ্টে সিক্তাকে আজ বেরোনোর জন্য। আজ বিকালে আমাদের সাউথ সিটি যাওয়ার কথা আছে। আমি হেসে বললাম, “ও হো! আচ্ছা আমি একটা ট্ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছি। তুই জাস্ট একটা কাজ করে দে ভাই”। শ্রেয়ান বলল “বলিয়ে হুজুর। জান হাজির। আচ্ছা, আগে বলো তো কোথায় যাবে? কেসটা ইনটারেস্টিং হলে মেয়েটাকে কাটিয়ে দিচ্ছি। কত এল আর কত গেল”। আমি বললাম “না না, আমি ম্যানেজ করে নেব। আগে আমাকে একটু কসবা থানায় যেতে হবে। মানি ব্যাগে ডেবিট আর ক্রেডিট কার্ড ছিল। সেগুলোর জন্য এবং মোবাইলটার জন্য ডায়েরি করতে হবে। পুরো ঘটনা যদিও বলব না”। শ্রেয়ান বলল “কিন্তু বস্ এই ঘটনাতো পুলিশকে জনানো উচিত। তাহলে কেন বলবে না?” আমি বললাম “না রে ব্যাপারটা বেশ জটিল মনে হচ্ছে। এইসব লোকাল থানার পুলিশকে জানানো ঠিক হবে না। তাই তোর থেকে একটা ফেভার চাইছিলাম। একটু কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইট খুঁজে একজন আই. পি. এস. অফিসারের কনট্যাক্ট নাম্বারটা জোগাড় করে দিতে হবে”। শ্রেয়ান- “কে, তোমার শ্বশুর? যে তোমায় ফোনে এনটারটেন করবে?” আমি- “না, সেই চান্স নেই। ও কোনোদিন শ্বশুর হতে পারবে না। ওর নাম আর্যমা ব্রম্ভচারী”। শ্রেয়ান- “ওরে কাকা, কে গো সে? তোমার গার্লফ্রেন্ড? নাম শুনেই কোন মুনি ঋষির বউ মনে হচ্ছে”। আমি বললাম, “আমার ক্লাসমেট। দিল্লিতে আমরা একসঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন করেছি। তারপর মাস্টারস্ করে ও আই. পি. এস. ক্লিয়ার করে পুলিশ সার্ভিসে জয়েন করে। কলকাতায় পোস্টিং হয়েছে কিছুদিন হল খবর পেয়েছি। ও আমার খুব ভাল বন্ধু ছিল। ওর সঙ্গে একবার ব্যাপারটা আলোচনা করতে হবে”। শ্রেয়ান বলল, “যাই বল গুরু নামটা যা বললে না! আর্যমা ব্রহ্মচারী নামটার সঙ্গে খাকি ড্রেসটা একদমই খাপ খাচ্ছে না। ঠিক ভিসুয়ালাইজ করতে পারছি না। শুধু মনে হচ্ছে গেরুয়া শাড়ি পরা, উইদাউট ব্লাউস আর ব্রহ্মতালুর ওপর খোপা বাঁধা এক দেবী”।
আমি- “শুধু ফাজলামি করিস্ না তো। ওর সঙ্গে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে”। শ্রেয়ান- “ও. কে.! তাহলে শুধু তো থানায় যাবে? আমি তোমায় ড্রপ করে সাউথ সিটি কেটে পড়ব”। আমি- “ও. কে. গুড্। বাট আমার আর একটা কাজও আছে। একটু ধাপার মাঠে যেতে হবে। আর একবার। একটা খটকা লাগছে”। শ্রেয়ান দাঁড়িয়ে পড়ে বলল, “আরেব্বাস! এ তো ডিটেকটিভের মতো ডায়লগ দিলে”, তারপর কিছুক্ষন ভেবে বলল, “আরে দাঁড়াও দাঁড়াও। গুরু আমার একটা বন্ধু আছে। ওর ধাপার ওদিকে ব্যাপক রেপো। ওকে তুলে নিয়ে যাব”। আমি বললাম, “মানে? কি করে ?” শ্রেয়ান- “আরে, ও ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের ওপর কাজ করে। তাই ওদিকে ওর বেশ যাতায়াত আর পরিচয় আছে”। আমি বললাম, “ওকে আর জড়াস না। জাস্ট ওর কাছ থেকে ওখানকার কোনো লোকাল লোকের নাম্বার নিয়ে নে। গিয়ে ওর পরিচয় দিয়ে দেখা করে নেব। আমি ব্যাপারটা এখন একদম ছড়াতে চাইছি না”।