জন্ম ১৯৬৭ সালের ২ জানুয়ারি হুগলী জেলার ধনিয়াখালি গ্রামে। লেখালিখির শুরু খুব ছোটবেলা থেকেই। ছাপার অক্ষরে স্কুল ম্যাগাজিনে চিরাচরিত নিয়ম ভেঙেই প্রথম প্রকাশিত হয় "কেয়া" নামের একটি প্রেমের কবিতা। সাহিত্য নিয়েই পড়াশোনা। পেশায় গৃহশিক্ষক হলেও সাহিত্যই চব্বিশ ঘণ্টার ধ্যানজ্ঞান। মাসিক কৃত্তিবাস, একুশ শতক, ভাষাবন্ধন, প্রমা, কথাসাহিত্য প্রভৃতি পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তুমি অনন্ত জলধি (কবিতা), বিমূর্ততার অনন্ত প্রবাহে (কবিতা সংক্রান্ত গদ্য)। সম্পাদিত পত্রিকা : ছায়াবৃত্ত এবং কাটুম কুটুম।
বিন্দু আলোর রহস্যে নিমজ্জিত প্রাপ্তি সংবাদ
প্রতিদিন আমার ব্যাগ থেকে কিছু না কিছু একটা হারিয়ে যায়। কিন্তু তারা যে কোথায় যায় আমি আজ পর্যন্ত তার কোনো হদিস পাই নি। অথচ ব্যাগে যখন সংখ্যা গুনতে যাই তখন দেখি সব ঠিক আছে। কিন্তু দুপুরবেলা জানলা দিয়ে যখন রোদ আসে তখন আমি উঠে গিয়ে তাদের আসার রাস্তা করে দি। মনে হয় জানলাটাকে এমনভাবে খুলে দিই যেন পৃথিবীর গা থেকে সবটুকু জামা উঠে আসে। পুরোটাই আদুল হয়ে গিয়ে চারপাশ দিয়ে যেন রোদ ফোয়ারার মতো ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু খুলতে গিয়ে তো আর জানলা খুঁজে পাই না। আসলে এই খুঁজে পাওয়াগুলো অনেকটাই নির্ভর করে নিজেকে গুটিয়ে আনার ওপর। ছড়িয়ে গিয়ে কে আর কবে সবকিছু ধরে আনতে পেরেছে। এখানে একটা বিন্দু আলোর মতো উঠে আসে। নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়ে যতক্ষণ না ওই বিন্দুটিতে গিয়ে হাজির হচ্ছি ততক্ষণ আমার সামনে একজনও কেউ হাজির হবে না। এসব হারিয়ে যাওয়া, খুঁজে পাওয়া তো তাদের উঠোনের খবর যেখানে জল মাছ সব একসঙ্গে মিশে গিয়ে নদী হয়ে যায়। যেন তারা দুজনে একটা পরিক্রমায় বের হয়েছে। নদী তার নিজের ঢঙে হেঁটে যাবে আর অন্যদিকে মাছ নদীর কাছ থেকে জেনে নেবে সেই বিদ্যে যার সাহায্যে সে বাঁকের মুখগুলোতে নিজের গতি দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করে কাউকে বুঝতে দেবে না তার পিছুটান আছে। এই যে দুজন প্রতি মুহূর্তে নিজেদের তৈরি করে নিচ্ছে সাঁতার কাটার জন্যে এটা তো এসেছে একটা আকাশ থেকেই। তাই এখানে লম্বা – বেঁটে, ছোটো – বড় সব অন্ধকার গলির রোগা রোগা রোদ্দুরের মতো। কেউ কারও কাছে বন্ধ নয়। তাই বারবার নতুন নতুন রূপে খুঁজে পেতে চায় বলে বারবার হারিয়ে যায়। আসলে এই হারিয়ে যাওয়া মানে নদীপথ ধরে নিরুদ্দেশের দেশে পাড়ি দেওয়া নয়। এই হারিয়ে যাওয়া আবার নতুন করে ফিরে আসার এক যজ্ঞ। প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে ধুয়ে মুছে সাদা পাতায় নতুন করে আঁকতে চাই বলেই বারবার হারিয়ে যাই।