হঠাৎ করে আমাদের অভ্যস্ত জীবনটা না বলে কয়ে কোথায় দীর্ঘদিনের ছুটিতে চলে গেল ৷ আর আমরা দাবার গুটির মত ঘরে বন্দি হয়ে গেছি ৷ এখন শুধু সঠিক চালের অপেক্ষা, কবে সেই চাল দিয়ে ঘরের চৌকাঠ পেরবো !
আপনি যদি মনে করেন আমি মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে দর কষাকষি করতে কিছু লিখবো, আপনি ভুল ভেবেছেন ৷ পৃথিবী যখন অতিমারির কবলে, প্রতিদিন লক্ষ মানুষের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করছি, সেই মুহূর্তে মৃত্যু গুনতে চাইছি না আর, বলতে পারেন পারছি না ৷ তার চেয়ে, যে মানুষগুলো বেঁচে আছে, সেই মানুষগুলোকে নিয়ে ভাববার সময় নয় কি এখন ? W.H.O এর নির্দেশ অনুযায়ী বহু সংখ্যায় পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে কোভিড নাইন্টিনে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করে, তাদের দ্রুত আলাদা করে ( Isolation ) চিকিৎসা শুরু করার উদ্দ্যোগ নেওয়া, যাতে সংক্রমণ আটকানো যায় ৷ এই জীবানু মনুষ্য সৃষ্টি কিনা সে বাক-বিতন্ডায় না গিয়ে, এখন শুধু করোনার সঙ্গে সম্মুখ সমরে লড়াইয়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত থাকতে হবে সদা সর্বদা, W.H.O –এর নির্দেশিত পথ মেনে, আমাদের প্রাজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী চলে একং সর্বোপরি কেন্দ্র ও রাজ্যের নির্দেশিকাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করে ৷ এটা অনুধাবন করার বিষয়, পৃথিবীর সর্বোচ্চ উন্নতশীল দেশগুলো আমেরিকা,রাশিয়া, স্পেন, ইতালি আজ সব থেকে বেশি আক্রান্ত ৷ সেখানে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে সত্যিই কি সেই আর্থিক, সামাজিক এবং চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে, যদি এর উত্তর না হয় তবে আঙ্গুলটা সরকারের দিকে না তুল নিজের দিকেও ঘোরান এবার ! যথেচ্ছাচার বন্ধ করুন ৷ গরমের ছুটি কাটাচ্ছেন না ! প্রতিদিন ব্যাগ ভর্তি করে বাজার না করে, পিকনিক না করে, নিরন্ন মানুষের কাছে কি দাঁড়ানো যায় না ! সবশেষে বলব, করোনা মানেই মৃত্যু নয় ! তাহলে পৃথিবীতে ১,২০,৫৯৫ জন, দেশে ১৫২৬৭ এবং রাজ্যে ২৬৪ জন মানুষ সংক্রমণ মুক্ত হত না ৷ সরকারি এবং W.H.O-W.H.O-এর নিয়মবিধি মেনে চলুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, মানসিক নয় আর লক্ষণ দেখা দিলে অতি দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷ আপনার সদর্থক পদক্ষেপই এখন ভীষণ প্রয়োজন আমাদের আগের অভ্যস্ত জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য ৷ একটা ভ্যাকসিন বা মেডিসিন না বেরোনা পর্যন্ত আমাদের নিজেদের সুস্হতা, পরিবারের, রাজ্যের এবং দেশের সুরক্ষা আমাদেরকেই ভাবতে হবে ৷ এই যুদ্ধে লড়াইটা একা হয়েই লড়ার লড়াই ৷
আজকের গৃহবন্দি অবস্হাই কিন্তু আগামীর স্বস্তির এবং নিরাপদ জীবনের করোনা মুক্ত পৃথিবীর চাবিকাঠি ৷