পরশে দ্বিতীয়া
— সে কি…. তুমি জানো এখন কটা বাজে…..?? বসে আছো যে…. ৯ টা ৪৩ এর টা পাবেনা, ১০ টা কুড়ির মাঝেরহাট লোকাল টা পেলেও পেতে পারো…. তাড়াহুড়ো করতে হবেনা, ধীরে যেও, কেমন…..
— হুম
— কি হয়েছে মামণ…. শরীর খারাপ লাগলে আজ বিশ্রাম নাও বরং….. আমি কি তোমার অফিসে ফোন করে দেবো….??
— না না, থাক…… পরে বলে দেবো
— আচ্ছা বেশ
— একটা কথা বলবো….??
— বলো
— আমার কাছে একটু বসবে বাবা….??
— আমি তোমার কাছেই থাকি সবসময়…… কাল রাতেও যে তুমি ঘুমোতে পারোনি, জানি….. এভাবে নিজেকে কেন কষ্ট দাও মামণ…. তোমাকে অনেক যত্নে বড়ো করেছি, যে কারনেই কষ্ট পাও না কেন, আমিও যে তোমায় দেখে কষ্ট পাই, তা জানো??
— কষ্ট নয় তো, শান্তি, অনেকটা
— বাগানের ঝুমকো জবার পাশে একটা হলুদ গোলাপের গাছ ছিলো, জানো নিশ্চয়ই….. আজ সকালে শেষ কুড়িটিও ঝরে পড়ে গেছে….. কেন জানো??
— না
— শান্তির খোঁজে প্রস্থান সমাধান হতে পারে পরিপ্রেক্ষির বদলে, কিন্তু নিশ্চিহ্ন হতে পারেনা অস্তিত্ব……. প্লাবিত হয়েও খড়কুটো আঁকড়ে বেঁচে আছে লাখো প্রাণ, কখনো সময় পেলে তাদের চোখে চোখ রেখো……. দেখবে, সেখানে না আছে অভিযোগ, না আছে অভিমান, না আছে ব্যথা, না আছে অনুশোচনা……. বেঁচে থাকতে হয় মামণ, নিজের জন্য না হলেও অন্য কারোর জন্য….. সে হয়তো তোমায় বেঁচে থাকে, আছে আজও…….
–……………………….……………….
— কিছু বলছো না যে…….
— তুমি বলো, শুনছি…….
— বিশ্রাম নাও এখন, বিকেলে আমার সাথে নার্সারি তে যেও, একটা হলুদ গোলাপের গাছ কিনবো…..
— সবার দ্বিতীয় জন্ম মেলে না…… জানো??
সবার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়না….. জানো??
সবার আকাশে রামধনু আসেনা.. জানো??
সবার পথচলার হদিস কেউ রাখেনা.. জানো??
সবার চোখে বিশেষ নামের কেউ থাকেনা.. জানো??
— ঠিক, দ্বিতীয় জন্ম, আকাশে রামধনু, পথচলার হদিস রাখার যত্ন, চোখের ভাষায় অনুভব এসব সবার মেলেনা……. মিলবেই বা কেনো, পরমেশ্বরের আশীর্বাদ কতিপয় মানব মানবীর ভাগ্যে লেখা থাকে……. তুমি আকাশ দেখো, রামধনু তিনি সাজাবেন……….
— দ্বিতীয় বিদায় সম্ভব, আর তা তোমার পরমেশ্বর সাজিয়েছেন……. তাকে বোলো, বিদায়বেলায় যেন আমি তোমার, শুধু তোমার আশীর্বাদ নিয়ে সদরঘাট পেরোতে পারি বাবা………
— “হৃদয়ের একুল ওকুল দুকুল ভেসে যায়” গান টা গাও তো মামণ……..