• Uncategorized
  • 0

গুচ্ছকবিতায় মোস্তফা সোহেল

হাতে গোনা কজন সেরা গদ্যকারের মধ্যে মোস্তফা সোহেল অন্যতম। তার গদ্যে প্রেম, প্রকৃতি এবং নারী নিবিষ্ট শব্দচয়নে মুখর। তার লেখায় কখনো শহরের শূন্যতা, রাত্রির সঙ্গীত, অন্ধকারের প্রোট্রেট অথবা মগ্নচৈতন্যের শীষ ধ্বনি-আবার কখনো ইতিবাচক সম্ভাবনা আর আগামী দিনের স্বপ্নবিলাস পাঠককে নিয়ে যেতে পারে এক মুগ্ধ ভুবনে। লেখকের জন্ম ১২ জানুয়ারী যশোর শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর। ডেনমার্কের ওডেন্স এর নরডিক এগ্রিকালচার একাডেমি থেকে ফেলোশিপ পেয়েছেন প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্টে। ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর বহু দেশ। বর্তমানে উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন। তবে গদ্যের আগে কবিতা দিয়েই শুরু ছিলো প্রথমে। ১৯৯৯ সালে 'হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেবো' নামে প্রথম কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ২০১০ সালে 'নিঃসঙ্গ টারমিনাল' নামে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ২০১৮ সালে ' সাদা মেঘে ওড়াই মৌনতা' এবং ২০২০ সালে 'শহরে রটে গেছে আমাদের প্রেমের কথা' নামে মোট ৪ টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এ পর্যন্ত। দৈনিক প্রথম আলোর বন্ধুসভা থেকে গল্প লেখা-লেখি শুরু। তার আগেও ভোরের কাগজ, দৈনিক দেশ , আজকের কাগজ, সাপ্তাহিক চিত্রবাংলা, যায় যায় দিন-এ নিয়মিত নানা বিষয়ে লিখেছেন। ২০১১ সালে পলল প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তার দুটো উপন্যাস 'তুমি আমায় প্রথম ছুঁয়েছিলে ও ভালোবাসার এক রুপালি রাত , ২০১২ সালে জনান্তিক থেকে প্রকাশিত হয় 'আনন্দবাড়ি' ও বুনো জ্যোৎস্নায় নামে আরো দুটো উপন্যাস। এরপর বিজয় প্রকাশ থেকে পরপর ২০১৩ সালে মুখোশ , ২০১৪ সালে নেতা এবং ২০১৫ সালে সর্বাধিক বিক্রিত উপন্যাস ভালোবাসা ও একটি জলফড়িং প্রকাশিত হয়। ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তে প্রকাশিত হয় উপন্যাস -বধূ কোন আলো। ২০১৮ তে প্রকাশিত হয় আমি কান পেতে রই ও একদিন ঝুম বৃষ্টিতে নামে দুটো উপন্যাস। ২০১৯ এ মনপাহাড় এবং ২০২০ এ প্রকাশিত হয় চোখের আলোয় দেখেছিলাম ও সুন্দর তুমি এসেছিলে নামে দুটো উপন্যাস। ২০১২ ০ ২০১৩ সালে উপন্যাসের জন্য তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পুরস্কার লাভ করেন।

তোমাকে

শ্যামলী -কঠিন এক ওষুধের নাম
শুধু কাছে গেলে তার করমচা ঘ্রান
স্বপ্নগুলো হয়ে যায় ঝুম বৃষ্টি
কখনও বুকের ভেতর নীল ঝর্ণা
তুমুল গল্পের বাড়ি যেনো বসে থাকে মৌন অভিজ্ঞানে !
শ্যামলী, যে এখনও শান্ত ময়ূরাক্ষী নদী
খুব রাতে বুকের ভেতর জেগে থাকা মঙ্গলের একাকী আকাশ।

নীরবে

রিলকের দুঃখগুলো নিয়ে মেঘ তুমি উড়ে গেছো একলা পাখির মতো
চতুরঙ্গ খেলায় মেতেছে বৃষ্টি
অভিরাম হারিয়ে ফেলেছে উর্ণনাভ এর মোহনীয় চোখ।
হরিৎ বৃক্ষেরা নীরবে পান করে রমণীয় মধু
কখনো শরীর জুড়ে থাকে মরুময় আভরণ।
এইভাবে সুরাইয়া কখন বুকের মধ্যে ফুল হয়ে ফোটে।

টপ্পা

ঘুমিয়ে পড়েছো চারুলতা তুমি
আজ এই বিষন্ন শহরে, যেনো নিবিড় কোনও মায়া
ঝরে পড়ে জারুল ফুলের সাথে। যেমন মৌনতা কখনো কখনো
মুগ্ধতাকেও ছাড়িয়ে যায়!
ঘুমাও প্রিয়তা জলপ্রপাতের কোমল সিঁড়ি হয়ে
রাতভর বাজাও তুমি আজ অপরূপ টপ্পা।

যদি তোমার সাথে

যদি তোমার সাথেই ভালোবাসা হইতো হে প্রিয়তমা
তাহলে বেসিক ব্যাংক থিকা এক কোটি টাকা লোন তুইলা তোমারে নিয়া আবার যাইতাম আমার প্রিয় শহর ডেনমার্কের ওডেন্সে।
কি ভীষণ নিরীহ শহর। পথে পথে লাল গির্জা , হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের বাড়ি, মিউজিয়াম, রেলস্টেশন আর শপিং মলের মোড়ে ছোট্ট পাবলিক বার । বিকেল হইলেই তোমারে নিয়া সেখানে বইসা দুইজন রাতভর পান কইরা মাতাল হইয়া ফিরতাম বাড়ি। তারপর স্নিগধ বিছানায় তীব্র বরফের তোড়ে দুইজনা চুমোচুমি এবং আরো কিছু গোপন কাজকর্ম সুসম্পন্ন কইরা চাঁদের বাড়িতে ভাইসা যাইতাম বুনো জ্যোৎস্নার মতো।
জানি ভোর হইলেই তুমি গোলাপি রাজহাঁসের মতো ফাঁকি দিয়া উইড়া যাইবা কোপেনহেগেন।
আর আমিও তোমারে ভুইলা ব্যাংক লোন কেমনে শোধ করুম-তা নিয়া খুব বেশি ভাবতে থাকবো সারাদিন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।