• Uncategorized
  • 0

দৈনিক ধারাবাহিক উপন্যাসে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ২১)

পর্ব – ২১

১২০
“শ্যামলী তুমি খেয়াল করেছিলে তোমার কারখানার অনেকেই তোমার সাথে সত্যাগ্রহে যায় নি।”
” হ্যাঁ, খেয়াল করেছিলাম।কিছু করার নেই। আমি ওদের জোর করতে পারি না।”
“আবার সকালে রামধুন গেয়ে রাস্তা চলছ দেখে অনেক ভক্ত মানুষ জুটে গিয়েছিল মিছিলে।”
“হ্যাঁ, তাও জানি।”
” তার মানে তোমার মিছিলে কারা থাকবে, কারা থাকবে না, এই নিয়ে তোমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না।”
শ্যামলীর মনে প্রশ্ন উথাল পাথাল করে।
ভেতর থেকে আবার প্রশ্ন ওঠে ” তুমি তো দেখেছিলে একটা শ্রমিক নেতা হঠাৎ জুটে গিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেছিল।”
” হ্যাঁ, তখুনি তো আমি হস্তক্ষেপ করলাম। ওকে তো বলতে দিই নি।”
” না। ঠিক সেই সময় পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তার আগে সাদা পোশাকে পুলিশের লোক তোমায় সতর্ক করতে চেয়েছিল। তুমি থামো নি।”
শ্যামলীর নাকের পাটা ফুলে উঠলো। ফুঁসে উঠলো সে। “কেন, থামতে যাব কেন?”
” যদি আন্দোলন তোমার হাতের বাইরে বেরিয়ে যেত ?”
” কি করে যাবে? আমি তো পুরোমাত্রায় নিরস্ত্র ছিলাম। মনে প্রাণে আমি অহিংস।”
” আরে, তোমার কথা কে বলছে? তোমার মনে নেই, তোমার কারখানার বাচ্চা সেই শ্রমিকটাকে, যে তোমায় দারুণ ভালবাসে বলে পকেটে ছুরি রাখত!”
শ্যামলী ভেতরে ভেতরে ঘামতে থাকে। বিড়ি সিগারেটও অনেকে খায়। মাথা গরম করে ফেলে আগুন লাগিয়ে ফেলা বিচিত্র নয়। আমাদের দেশের গরিব মানুষও সদা সর্বদা অহিংস থাকে না। রাস্তার কুকুর এবং পাগলিকে অকারণে ঢিল ছোঁড়া, দল পাকিয়ে পূজার চাঁদা তোলার নামে হুজ্জুতি করা, এমন কি ডাইনী বলে গণহত্যা এ দেশে অচেনা নয়।
” তুমি সাংঘাতিক একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারতে শ্যামলী।”
নিজের ভেতরের মানুষটার কাছে মুখ গোঁজ করে চায় শ্যামলী। ” তাহলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে বলো !”

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।