• Uncategorized
  • 0

প্রবন্ধ – মৃদুল শ্রীমানী

“শঙ্খ” নামে কবিতা

১৩২১ বঙ্গাব্দের ১২ জ্যৈষ্ঠ একটি কবিতা লেখেন রবীন্দ্রনাথ। কবিতার নাম “শঙ্খ”। বলাকা কাব্যগ্রন্থে এটি সন্নিবিষ্ট। সঞ্চয়ি মিলেছে। কিন্তু এর পরেই বলাকায় কবির একটা বাঁক। কোনো জিনিয়াসই এক পথে বার বার ঘুরে মরেন না। নতুন নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করার স্পষ্ট দায়িত্ব কাজ করে বড় মানুষের মনে। কবিতার প্রথমেই তিনি বলেন.. তোমার শঙ্খ ধূলায় পড়ে… আরো বলেন বাতাস আলো গেল মরে …. একটা দুর্দিন যেন স্পষ্ট ঘনিয়ে এল। তৃতীয় পংক্তিতেই সোজা সাপটা একটা লড়াইয়ের ডাক অনুভব করেন ভিতর থেকে- সে লড়াইয়ে গানও সঙ্গী। গানও আয়ুধ। ক্রমেই নিশ্চিত টের পাব যৌবনের পরশমণি কবিকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে, রাঙিয়ে তুলেছে।
শঙ্খ কবিতার দ্বিতীয় স্তবকেই কিছু নিজস্ব গূঢ় যন্ত্রণার কথা বলছেন কবি। সারাদিন বিস্তর তাপ, গ্লানি মলিনতার মধ্যে কেটেছে যেন। আঘাতজনিত কিছু ক্ষত হয়েছে হৃদয়ে। গায়েও লেগেছে নানা মালিন্য আর কলঙ্ক। এসব থেকে রেহাই পাবেন আশা করে কবি নিজের মধ্যে নিজে ডুবে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ধূলায় পড়ে থাকা শঙ্খ তা হতে দিল না। বিরাম খোঁজা আর হলো না কবির। শান্তি খোঁজাও আর হল না। বাইরে নীরব হলেও চেতনার গভীরে শঙ্খ ভীষণ রকম করে ডাকল কবিকে। এখন আর তন্দ্রা নয়, এখন উদ্বোধনের সময়। দীপ্ত প্রাণে কবির জেগে ওঠা। আরাম আর নিভৃতিকে ছুঁড়ে ফেলে এক নতুন রণসজ্জা প্রার্থনা করেন কবি। আঘাত ব্যাঘাতের মধ্য দিয়ে এক অভয় জগতে চলার প্রত্যয় খুঁজে পান তিনি।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।