ভোরের ছোট বেলা থেকে অভ্যাস ছিল দেশলাই বাক্স র উপরের ছবিটা জমানো। বাক্সের ছবিটা তার কাছে বন্দি রাজকন্যার পৃথিবী দেখার চোখ ।সেই চোখ দিয়ে সে পৌঁছে যেত পাহাড় অরণ্য নদী কিংবা জনসমুদ্রে।খুঁজে নিত অজানা মানুষের কাহিনী ।
ভোরের বাবা দেশ বিদেশ থেকে আদরের মেয়ের জন্য নিয়ে আসত হরেক রকম দেশলাই বাক্স।
ভোর সেগুলোকে তার মোটা বাঁধাই করা খাতায় তুতের আটা দিয়ে সেঁটে দিত। প্রতিটা ছবির নিচে লিখে রাখত কোথা থেকে সেটা আনা হল আর সেদিনের তারিখটা।
পনেরো বছর বয়সে ভোরের বাবা যখন চলে গেলেন ঘুমের দেশে তখন মুখাগ্নির সময় ভোর প্রত্যক্ষ করল দেশলাইয়ের জোর আর আগুনের মহিমা।
আরো পরে মা যখন বিষ খেল সমাজের নানা প্রলোভনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে তখন ভোর তুতের আঠার শক্তি বুঝল।
সেই থেকে ভোর একা।মাঝে মাঝে সে বুঝে উঠতে পারে না জীবনে বেঁচে থাকার জন্য কোনটা বেশি দরকার! আটার মত লেগে থাকা নাকী আগুনের মত জ্বলে ওঠা !
তবে ইদানিং সে বুকের মধ্যে আগুনটা জ্বালিয়ে রেখে দেশলাই বাক্স খেকে কাঠিটা আর বের করে না। কে জানে কবে বের করার দরকার হয়ে পরে।