মানিক পাঁচালী -তে মিলন কুমার মাজী

মাণিকবাবুর সাথে কাল্পনিক কথোপকথন

মাণিকবাবুঃ
কি হে, কেমন আছো তোমরা সকলে?
আমিঃ
ভালো নেই কত্তা মশাই, এক্কেবারে ভালো নেই।
মাণিকবাবুঃ
কেন হে, তোমাদের আবার কি হল? বেশ তো ছিলে।
আমিঃ
সে এক বিভীষিকা। শুনুন তাহলে..

মাণিকবাবুঃ
বেশ, বলো। শুনি।

আমিঃ
প্রথমেই আপনাকে আমাদের সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই কত্তামশাই।
এবার শুনুন –
এক আগন্তুক জৈব মারণ ভাইরাসের প্রকোপে ‘হীরক রাজার দেশ’ এ আজ হাহাকার।দেশে – বিদেশে প্রতিদিন অগনিত মানুষের মৃত্যুমিছিল। এই মারণব্যাধির ‘শাখা-প্রশাখা’ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
জনসাধারনের ‘ পথের পাঁচালী ‘ তে যে এমন ‘অশনি সংকেত’ আছে, তা বিশ্ববাসীর বোধগম্যও ছিল না।
‘সোনার কেল্লা’ ও আজ সুরক্ষিত নয়।
‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ আজ নিজেদের বাড়ির মধ্যে ‘সীমাবদ্ধ’ করে নিয়েছে।’চিড়িয়াখানা’র মর্ম আজ মানুষ হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে।
সেই ‘ জলসাঘর ‘, সেই ‘জনঅরণ্য’ ‘মহানগর ‘ আজ খাঁ খাঁ করছে।
আজ কেউ কারোর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ নয়, ‘কাপুরুষ’ ‘ মহাপুরুষ’ এর লড়াই নেই, বরং ‘গণশত্রু’ মারণব্যাধির বিরুদ্ধে সক্কলে একজোট।
‘পিকু’ এখন ‘ ঘরে-বাইরে’ করতে না পারার দরুণ ‘অপুর সংসার’ এ খুব টানাপোড়েন। মায়ের সোনার ‘বালা’ খানা বিক্রি করার কথাও ভেবেছিল ছেলেটা। কিন্তু তাও এখন সম্ভব নয়।
এবার আমার ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ‘অভিযান’ রদ করতে হল। খুব ইচ্ছে ছিল যাওয়ার।
অজিতবাবুর ‘তিনকন্যা’র বড় কন্যে ‘চারুলতা’ র এই বৈশাখ মাসে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সেই দরুণ সব বন্দোবস্ত করেও ফেলেছিলেন অজিতবাবু। অনেকগুলো টাকা খরচ হয়ে গেছে ওনার। পরিস্থিতির
চাপে এখন ওনার ‘মণিহারা’ফণি র অবস্থা।
বিশ্বসংস্থা ‘ দি ইনার আই’ র মতে এই বিপর্যয়ে – ডাক্তার,নার্স,পুলিশ, সাফাইকর্মীরা এই যুদ্ধের ‘নায়ক’ বা ‘ শতরঞ্জ কা খিলাড়ি ‘।
বিশ্ববাসীর কাছে ওনারাই দেব-‘দেবী’।
আশাকরি, আমাদের বিশেষজ্ঞ গবেষকরা দ্রুত এই রোগের বিরুদ্ধে ‘পরশপাথর’ আবিষ্কার করবেন। দ্রুত এই অতিমহামারীর ‘সমাপ্তি’ ঘোষণা হবে।
আপনি ও কামনা করুন যাতে এই ধরা তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভ করে।
আপনিও ভালো থাকুন। মণিকোঠায় এভাবেই বিরাজ করুন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।