এসব সময়ে রাগে,ঘেন্নায়,বিরক্তিতে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে একা একা জ্বলি। কষ্ট আর অপমানে এইসব জ্বলেপুড়ে যাওয়া- শুধুই কি মেয়েদের,আমাদের নয়? চেতনার আরম্ভ থেকে মধ্যযৌবন- নানাভাবে, নানা রূপে মেয়েদের ভালবেসে গেছি। মা,বোন,বান্ধবী,স্ত্রী,নিজের সন্তান- যখন ভাবতে যাই,মনে হয় বিপন্ন সবাই। ধর্ষক পুরুষ নয়,নারী নয়,তৃতীয় লিঙ্গেরও নয়- ঘৃণ্য এক জীব,আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র, দ্বিচারিতা,মেরুদণ্ডহীনতার বর্ম পরে নিরুদ্বেগ বাঁচে। ভাবতে লজ্জা হয় শিক্ষিত হয়েও আমার দেশের আজও অসংখ্য মানুষ এই হীন কাজকেও সামান্য ভাবেন,এই বর্বরতাকেও আশ্রয়ের পরিসর দেন। কদর্য নীচতা নিয়ে শুরু হয় কথা-কথান্তর। ‘সভ্যতা’ শব্দের পাশে উড়ে আসে একদলা থুতু। বিদগ্ধজনের দল মাথা উঁচু করে ধর্ষণের প্রধান দায় ধর্ষিতার কাঁধেই চাপান। নেড়েঘেঁটে দেখা হয় প্রিয়াঙ্কার পোড়া দেহে স্লিভলেস ছিল,নাকি যৌন উত্তেজক মিনিস্কার্ট! এখানেই শেষ হয় না,প্রশ্ন ওড়ে চরিত্র নিয়েও। রাতের আঁধার,সে তো পুরুষের আধিপত্যে ঘেরা,দুর্বল মেয়েরা কেন অত রাত্রে পথে পথে ঘোরে? এসব বিদ্রুপ ভাসে একুশ শতকে,শহরের চেনা পথঘাটে। লজ্জায় কুঁকড়ে যাই,ফিরে যাই অন্ধকার যুগে। মনে হয়,কেন বেঁচে আছি! ধর্ষকের জাতি নেই,ধর্ম নেই,লিঙ্গ নেই,বয়সও থাকে না। নৃশংস হত্যার চেয়ে কম শাস্তি তার প্রাপ্য নয়,ক্ষমা শব্দটি যেন কোনওভাবে এখানে না আসে।