মেহেফিল -এ- শায়র আবদুল লতিফ জনি (নির্বাচিত কবিতা)
লালমাই-এর দেশে
সৌরভ-গৌরব ‘কুমিল্লা’ নামটি ঘিরে;-
গড়ে উঠা প্রাচীন নগর গোমতী নদীর তীরে।।
একদা ছিল যাহা সমতট নাম তার;-
ত্রিপুরাতে যোগ হলো অধীন মানিক্য রাজার।।
বৌদ্ধ, জৈন, সনাতন, ‘ইসলাম,’ ধর্মের;-
হাজারো সাল পুরানো শতকীর্তি কর্মের।।
শাহ সুজার ত্রিপুরা জয়, শমসের গাজীর রণে;-
কুমিল্লা জেলার নামটি হলো ১৯৬০ সনে।।
টমছম ব্রীজ, ঠাকুর পাড়া, পুরানো কারাগারে;-
কবি নজরুলের প্রেমকাহিনী ঘুরছে হৃদয় দ্বারে।।
শীতল ভান্ডার, মাতৃভান্ডার,মিষ্টি রসের খ্যাতি;-
মোঘলটুলী ‘শাহ সুজার ‘অমর কাজের স্মৃতি’।।
মেঘনা, গোমতী, ডাকাতিয়া কিংবা ধর্মসাগরের জলে;-
শমসের গাজীর শত-দীঘিতে শাপলা-শালুক ফলে।।
নওয়াব ফয়জুন্নেসার ‘নবাব বাড়ী’ ডাকাতিয়ার কুলে;-
প্রজাহিতৈষী অভিযোগের ঘন্টা, ফটকে থাকিতো যে ঝুলে।।
“ময়নামতি “সেনানিবাসে – বিশ্বগোরস্তান;-
শিখ, জৈন, হিন্দু, এ্যাংলো, জাপানি আর মুসলমান।।
গাছের ছায়ায় চির শান্তিতে সবাই যে ঘুমিয়ে আছে;
মা আর বাবা কিংবা স্বজন, কোথায়ও কি তারা আছে?।।
লালমাই পাহাড়ে ‘শালবন বিহার’ করিতেছে আলো দান;-
চৌদ্দগ্রাম-এর ‘কাজী বাড়ী’ আর ‘জগন্নাথ দীঘি’র মান।।
‘বেঙ্গল রেজিমেন্ট’-এর প্রতিষ্ঠাতা, মেজর গনির নাম;-
পাক-ভারতে করলো উঁচু বাংলা-মাটির দাম।।
চাঁদপুরে ‘চাঁদের বুড়ী’করছে লুকোচুরি;
নদীর তটে জেলের নৌকায় ইলিশ মাছের ঝুড়ি।।
ব্রাহ্মণপাড়ার মাঠে করে নানা ফসলের চাষ;-
শীত, হেমন্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা বিকায় বারো মাস।।
ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার ব্রাহ্মণ ছুটে কসবা শশ্মান ঘাটে;-
দাউদকান্দির ফসল বিকায় বুড়িচং-এর হাটে।।
মেঘনা নদীর খর স্রোতে চলে জলযান;-
মিহি-সুতার খাদি কাপড় করছে মহিয়ান।।
কুমিল্লাতে খাবার হোটেল বড্ড রুচিকর;-
সারি-সারি দালান কোঠায় জ্বলছে বাতিঘর।।
বিদ্যা-শিক্ষায় জ্ঞান গরিমা, সবি তাদের আছে;-
ধনী-গরীব এক পাড়াতেই থাকে সবাই কাছে।।