সাতে পাঁচে কবিতায় অভিজিৎ কর্মকার
by
TechTouchTalk Admin
·
Published
· Updated
মাংসে স্বাদ হয়নি
মন দিয়ে মাংস রান্না করছিলুম, অনেকটা কষানোর পর মনে পড়লো তোমার কথা,
ও হ্যাঁ,ভুলেই গিয়েছিলাম কাল রাতে তুমি এসেছিলে বটে,
ঠিক ততটাই আক্রোশে যতটা আক্রোশে মাংস কেন,লবনভাতও আজ ওদের থালায় দেখতে পাওয়া যাবেনা।
হ্যাঁ,ঠিক তাই…ওরা অবুঝ,তোমার আসার খবর ওরা জানতো, তবু নির্লজ্জগুলো ঘর ছেড়ে যায়নি।
চোখের নিমেষে গুঁড়িয়ে যেতে দেখেছে ওদের মাটির দেয়াল,দরমার বেড়া, ত্রিপল জড়ানো রান্নাঘর-সবকিছু,
ওখানে ভালোবাসা বাস করতো;
তুমি জানো, বাচ্চাটার দুধ গরম হচ্ছিল আর অমনি তোমায় আসতে হলো!
ওর বাবা ভ্যান চালায়।
সারাদিন বৃষ্টির তোড়ে চল্লিশ টাকা রোজগার হয়েছে মোটে-এককেজি দুধের দাম;
পোয়াতি মেয়েটার উঠতে বারণ, আসন্ন নবজাতকের আশায় সে বেচারিও পড়িমরি ছুটছে,
আর ঠিক তখনই তোমায় আসতে হলো!
বেশি কিছু হয়নি,পিছলে পড়ে বেয়াড়া মেয়েটি এবারও তার স্বপ্ন হারিয়ে ফেলল, এই নিয়ে তিনবার।
তুমি এগুলো কিছুই জানতেনা,তোমার জানার কথা নয়
পঞ্চায়েত থেকে পরশুদিন একটা হুইলচেয়ার পেয়েছিল ছেলেটা,রোজগেরে তরতাজা যুবক
বাসে চাপা পড়ে সদ্য হ্যান্ডিক্যাপড…না,তুমি ওটিকেও ভেঙে ফেললে কোনো কারণ ছাড়াই;
এই দেখো, মাংসের টুকরোগুলো বেশ কেমন লাললাল হয়ে উঠেছে,ফি রবিবারই এটা হয়…
অন্যের স্বপ্ন,ক্ষুধা,বেঁচে থাকার লড়াই,মাথার ছাঁদ, ভিটে মাটি সবকিছুই গান্ডেপিণ্ডে গিলি ঝালঝাল মাংসের সাথে,
ঠিক যেমন তুমি গিলে ফেললে সব একসাথে,এক লহমায়।
মুখে দিয়ে দেখলাম মাংসে লবন ঝাল স্বাদ কোনোটাই হয়নি।
কোনো এক আম্ফান ওটা গতকালই চেখে নিয়েছিল।