সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে দীপান্বিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব – ১২)

ঢেপ্সির প্রেমকাহিনী

দ্বাদশভাগ

আমার টার্গেট ছিল ঢেপ্সীর থেকে আসল ঘটনা টেনে বের করা। ওর সঙ্গে আমি গল্প করতে শুরু করলাম একথা সেকথায় ওকে জিজ্ঞাসা করলাম কিরে অজয়ের সঙ্গে তোর রিলেশনশিপের কী খবর বল। কথাটা শুনে বান্ধবী চুপসে গেল। তেঁতো গলায় বললো “আছে,চলছে।” আমি বললাম “এভাবে বলছিস কেন? আছে! কেন ভালো নেই? তুই ওর সাথে ভালো নেই? সত্যি করে বল”। এই কথাটা বলা মাত্রই ঢেপ্সী কাঁদতে শুরু করল। আমি তো কিছুই বুঝতে না পারার ভান করলাম। আমি বললা না কেঁদে আমাকে খুলে বল কী হয়েছে। ঢেপ্সী কাঁদতে কাঁদতে বললো “আমি ওর সঙ্গে ভালো নেই রে। আমি সব বুঝতে পারি কিন্তু কী করব। আমার ফিরে আসার কোনো উপায় নেই।” আমার সত্যি টেনশন হতে শুরু করলো।আমি বললাম “মানে কী বলতে চাইছিস তুই? আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।” ঢেপ্সীকে জল দিলাম। জল খেয়ে চোখ মুছে বলতে শুরু করলো “অজয় হয়তো আমাকে খুব ভালোবাসে বা হয়তো বাসে না। আমি সেটা আজও বুঝতে পারিনা।” আমি জানতে চাইলাম কেন এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? কাকু মারা যাবার পর তোদের বাড়িতে তাকে তো ভীষণ অ্যকটিভ দেখলাম। তাহলে তোদে দ্বন্দ্বের কারণ কী? আমার তো মনে হলে তোকে যথেষ্ঠ ভালোবাসে ছেলেটি। ঢেপ্সী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল আদতে সর্ষেফুল দূর থেকে ঘন দেখায়। আমি বললাম তোদের রিলেশনশিপ নিয়ে আমি কোনো কিছু বলবো না। যখন তোর সাথে ভালো বন্ধুত্ব ছিল তখন এর জন্য আমাকে বহু খেসারত দিতে হয়েছে তাই আমি এখানে কোন মন্তব্য করব না। ঐ সমস্ত কথা যা হয়ে গেছে তা অতীত। পাস্ট ইজ পাস্ট। আমি তোর সঙ্গে ফ্রেন্ডশিপটা আর নতুন করে নষ্ট করতে চাইনা।
এর মধ্যে হঠাৎ আমার মা দুজনকে নিচে ডাকল। আমরা গেলাম গিয়ে চা সিঙ্গারা খেলাম। তারপর আবার উপরে উঠে এলাম। ঢেপ্সীর কথাগুলো মন দিয়ে শুনছি সেই সময় অজয়ের ফোন এলো। ফোনটা রিসিভ করে ঢেপ্সী বলল ও আমাদের বাড়িতে আছে। সেটা শুনে অজয় আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল কিন্তু আমার বিন্দুমাত্র কথা বলার মতো মানসিকতা ছিল না। আমি বাথরুম যাবার নাম করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। ফিরে আসার সময় শুনতে পেলাম ঢেপ্সী অজয়কে বলছে “তোমার স্বভাবটা এখনো গেল না। তুমি এতটা নোংরা ছেলে ছিঃ। তুমি আমার বন্ধুর দিকে হাত বাড়াচ্ছো!? আমার ভাবতে ঘেন্না লাগছে আমি তোমার মত একটা ছেলেকে ভালবাসি। আমার মধ্যে কী এমন নেই যেটা আমার বান্ধবীর মধ্যে আছে!?” আমি ততক্ষণে ঘরের মধ্যে চলে এসেছি ঢেপ্সী সেটা খেয়াল করেনি। পিছন ঘুরে কথা বলছিল সামনে ঘুরে আমাকে দেখে রীতিমতো চমকে গেছে। আমি ওকে বললাম “চমকে যাবার কোনো কারণ নেই। আমি সম্পূর্ণটাই শুনেছি। তুই আমাকে খুলে বল তোদের মধ্যে আসলে ঠিক কী হয়েছে। আর তুই যদি এটা না বলিস তাহলে আমি তোর সঙ্গে কোনদিন সম্পর্ক রাখবো না।”
ঢেপ্সী বললো “হ্যাঁ আমি তোকে বলতে পারি কিন্তু একটা শর্তে তুই এই কথাগুলো অন্য কাউকে বললে হবেনা”। আমি বললাম “না, এই কথাগুলো তোর আর আমার মধ্যেই থাকবে‌ কেউ কোনদিন কখনো জানতে পারবে না কথা দিচ্ছি। আর তুই জানিস আমি কথার খেলাপ করি না।” ঢেপ্সী যা বললো তার অর্থ এই অজয় আর ওর মধ্যে সেক্সচুয়াল রিলেশনশিপ হয়ে গেছে বহুবার আর ঠিক এই কারণেই সে সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। অজয় ওকে থ্রেট দিয়ে বারবার বলেছে যদি ঢেপ্সী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে ওর নামে স্ক্যান্ডাল ছড়িয়ে দেবে আর অজয় কে বিয়ে করলে কাকুর ব্যবসার সমস্ত কিছু দায়িত্ব অজয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। এটাই নাকি শর্ত।অজয়ের ঢেপ্সী ছাড়াও বহু মেয়ের সাথে প্রেম এবং শারীরিক সম্পর্ক আছে এই নিয়ে ওদের মধ্যে বহুবার তর্কাতর্কি ঝগড়া মারামারি হয়েছে কিন্তু অজয়ের একটাই বক্তব্য আমি তোমাকে ভালোবাসি, তোমার ভালবাসায় তো কোন অভাব পড়ছে না। এর বাইরে আমি আমার পার্সোনাল লাইফে কী করছি না করছি তোমাকে সেটা নিয়ে এতো ভাবতে হবে না। তুমি শুধুমাত্র তোমারটুকু বুঝে নাও। অজয় ফোনটোনও করেনা। যখন ইচ্ছা হয় যেদিন ইচ্ছে হয় ফোন করে না তো করেই না। ঢেপ্সীর খুব খারাপ লাগে, খুব কষ্ট হয়। এই নিয়ে কিছু বলতে গেলে অজয় বলে তুমি সাইকো। তুমি ডাক্তার দেখাও। সম্পর্কে থাকতে গেলে যোগাযোগ করতে হবে, ফোন করতে হবে এমন কোথাও লেখা আছে নাকি? আমি ব্যস্ত থাকি তাই আমি যোগাযোগ করতে পারিনা।
আমি এই পর্যন্ত শুনে বললাম “একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে কেউ ভার্জিন কি ভার্জিন না এই নিয়ে মাথা ঘামায় না। আর অজয় তোকে যে থ্রেটটা দিয়েছে এজন্য তো পুলিশ আছে। তুই পুলিশে গেলে বা সাইবার ক্রাইম রিপোর্ট করলে তুই যথেষ্ট পরিমাণে হেল্প পাবি। তুই যাচ্ছিস না কেন? তোর যখন মনে হচ্ছে যে তুমি এই রিলেশনশিপ কন্টিনিউ করলে তোর লাইফে বড় বিপদ নেমে আসবে তখন তুই কেন আছিস সেখানে? বেরিয়ে আয়, আজকে তোদের মধ্যে বিয়ে হয়নি তাতে ও তোর সঙ্গে এরকম করছে। কিন্তু একবার যদি বিয়ে হয়ে যায় তোদের একটা বাচ্চা হয়ে গেল তখন তুই বেরিয়ে আসতে পারবি? তখন তো তোর সামনে সুইসাইড ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এখন বেরিয়ে আসাটাই বেটার আর এখন থেকে যদি ওই ছেলের হাতে ব্যবসার দায়িত্ব তুলে দিস তাহলে তোর মায়ের জীবনটা কি হবে তুই বুঝতে পারছিস? আমি ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি তোর মত একটা বিচক্ষণ মেয়ে এইরকম একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক এতদিন বয়ে নিয়ে চলল কীভাবে? এখনো বলছি সময় আছে তুই বেরিয়ে আয়। মনে রাখিস যে মেঘ যত গর্জায় সে মেঘ ততবেশি বর্ষায় না। ওই ছেলে তোর কিছুই করতে পারবে না। তুই বেরিয়ে আয় তুই পড়াশোনায় ভালো। তুই লাইফে ঠিক সেটেল করতে পারবি। তোর নিজের জীবনটা নিজের মতো করে শুরু কর। অলরেডি অনেক দেরি হয়ে গেছে রে।” ঢেপ্সী উদাস হয়ে বললো “মনে হয় আমি ওর থেকে বেরোতে পারবোনা। সুইসাইড হয়তো আমার জীবনের আল্টিমেট পরিণতি।”
আমি ভীষণ রেগে গেলাম চিৎকার করে বললাম “তোর গালে এক থাপ্পর মারব। লজ্জা করছে না চোরের মত পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছিস সামনে থেকে লড়াই কর। তোর মধ্যে একটা লড়াকু ভাব আমি চিরকাল দেখে এসেছি। অজয় এর মধ্যে কী এমন দেখেছিস যে তুই ওর পায়ে ধরে পড়ে আছিস।” ঢেপ্সী মাথা নিচু করে বললো “জানিস তো আমি মোটাসোটা। আমাকে এই নিয়ে সারা জীবন কথা শুনতে হয়েছে সর্বত্র। অজয় হয়তো আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কিন্তু ও তোমাকে ভালবাসে।” আমি বললাম “তুই যেটাকে ভালবাসে বলছিস সেটা কি আদৌ ভালোবাসা নাকি শুধুমাত্র তোর বাবার অর্থ-সম্পত্তি আছে সেই লোভ? ওই ছেলে শুধুমাত্র তোর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে টাকার লোভে আর অন্য কোন কারন নাই।” ঢেপ্সী কিছু বলতে যাচ্ছিল ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম “যে ছেলে এখনও বিয়ে না হতেই সম্পত্তির ভাগ নেবো বলে আবার ব্যবসার কথা বলে সেই ছেলে আর যাই হোক তোকে কোনদিন ভালোবাসে বলে আমার তো মনে হয় না। তোকে আমি ভালো পরামর্শ দিচ্ছি তুই ওর থেকে বেরিয়ে আয় না তো তোর জীবনটা সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে। একটা থার্ড ক্লাস ছেলের জন্য নিজের জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিস না তুই। মোটাসোটা বলে একদম চিন্তা করিস না তুই ওয়ার্কআউট করলে ঠিক রোগা হয়ে যাবি। তুই শুধুমাত্র ওর গ্রিপ থেকে বেরিয়ে আয়। নিজের জীবনটাকে নতুনভাবে শুরু কর আর কাকুর ব্যবসাটা কারোর হাতে দিবি না তুই আর কাকিমা দুজন মিলে শুরু করবি আর আমার বিশ্বাস তোরা ঠিক ব্যবসাটা দাঁড় করাতে পারবি। তোকে শেষবারের মতো বলছি তুই যদি আমাকে বন্ধু ভাবিস তুই অজয়ের থেকে বেরিয়ে আয় বাবু। না হলে তোর জীবনটা শেষ হয়ে যাবে আর আমার চোখের সামনে আমার বান্ধবী জীবনটা শেষ হয়ে যাবে আমি দেখতে পারব না রে, আমার ভীষণ কষ্ট হবে বিশ্বাস কর।” এই কথাগুলো শুনে ঢেপ্সী আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো। আমি বললাম কাদিসনা বাড়ি যা ওর সঙ্গে একবার ঠান্ডা মাথায় কথা বল তারপরে সিদ্ধান্ত নে।
ঢেপ্সী ও কাকিমা বাড়ি চলে যাওয়ার পর আমি অনিরুদ্ধকে ফোন করলাম এবং ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা অনিরুদ্ধকে বললাম। অনি চিৎকার করতে করতে বলল “তোমার কি দরকার ছিল এই সমস্ত বুদ্ধি দেওয়ার? ঢেপ্সী একটা গাধা। এই সমস্ত কথা গিয়ে অজয় কে বলবে তারপর অজয়ের তোমার প্রতি চরমতম আক্রোশ বাড়বে আর যদি আমার চাকরিটা কনফার্ম হয় আমি যদি এখান থেকে চলে যায় তবে তোমাকে তখন কে প্রটেকশন দেবে? সত্যি তোমাকে নিয়ে আর পারি না তুমি এত বাচ্চা ছেলের মত কাজ করো না। তোমাকে কে এত দায়িত্ব দিয়েছে বলতো সবার বিপদে সাহায্য করার? নিজের মতো থাকো, নিজের টুকু নিয়ে থাকো। যে নিজের ভালো বোঝে না তাকে তুমি বোঝাতে যেও না। হাজার ভালো কথা বললেও সে কানে কথা তুলবে না আর ঢেপ্সীরর কথা বলো না তো। আত্মসম্মান বলতে কিছু নেই যার জীবনে সে আর যায় হোক সে মানুষ হতে পারে না। ও জানে না অজয় কিরকম? অজয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা তিন বছর হতে চলল ও তিন বছরে একটা ছেলেকে চিনতে পারেনি? কিসের আশায় পড়ে আছে? ভালোবাসা!? ঐরকম ভালোবাসা প্রচুর ছেলের কাছ থেকে পাবে। কেন যে মেয়েটা নিজের ভালো বোঝে না নাকি সবকিছু জেনে বুঝেও বুঝতে চাইছে না!? সত্যি একসময় ভাবি যে মেয়েটা কি পাগল নাকি অন্যকিছু, নাকি ভিনগ্রহের জীব? আমার একেক সময় বড় মায়া হয়। আহারে ছেলেটাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসে অথচ ছেলেটা ওর ভালোবাসা বোঝেই না। তুমি জানো কিছুদিন আগে কি অজয় কী পরিমান মারধর করেছে আবার সেইটা গর্ব করে এসে আমাদের কাছে জিমে বলছে। গার্লফ্রেন্ডকে সব সময় হাতে রাখতে হয় জানিস। গার্লফ্রেন্ড তোমার ভয়ে কুঁকড়ে থাকবে তবেই তুমি লাইফে সাকসেসফুল। আমারতো মনে হচ্ছিল জুতিয়ে মুখ লম্বা করে দিই কিন্তু কি বলবো বল কিছু বলার নেই। দেখো আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি কোনো কিছুর বিনিময়ে আমি তোমাকে হারাতে চাই না। তাই বারবার বলছি তুমি এবার থেকে আর কখনো কিছু বলতে যেও না। ওর জীবন ওকেই বুঝে নিতে দাও। ও যথেষ্ট বড় হয়েছে। ওর জন্য তোমার কোন ক্ষতি হলে আমার কি হবে বলো!? তুমি প্লীজ আমার দিকটা অন্তত ভেবে ওকে আর কখনো কিছু বলো না।” আমি বললাম শান্ত হ‌ও আর কিছু বলবো না।
এপ্রিল মাসে আমাদের রেজাল্ট বেরোলো। আমরা সবাই মোটামুটি ভালোভাবে পাশ করেছি। ঢেপ্সী আর আমি দুজনেই ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছি। রেজাল্ট আনতে গেলাম কলেজে, দেখলাম ঢেপ্সীর সঙ্গে অজয় এসেছে। যেন ঢেপ্সীর পাহারাদার হিসেবে অজয় এসেছে। আমারা গল্প করছি হঠাৎ আমার মনে হল অজয় আমার অজান্তেই আমার ছবি তুলছে। আমি সরাসরি তাকে গিয়ে বললাম “তোমার ফোনটা দেখি।” আমাকে জবাব দিলো “আমার ফোন নিয়ে কি হবে? আমি বললাম তুমি আমার ছবি তুলছো কেন?” তুলেছি তো কি হয়েছে?” বলে তেড়ে এলো আমার দিকে। আমি বললাম “মানে তোমার লজ্জা করে না তুমি আমার পারমিশন ছাড়া ছবি তুলছো?” অজয় মারমুখী হয়ে এগিয়ে এসে বলল “খানকিমাগী তোর ছবি তুলেছি তো কি হয়েছে?” আমি সপাটে এক চড় মেরে বললাম “কি বললে তুমি আর একবার বল।” আমি জাস্ট ওর জামার কলার টা চেপে ধরে ওর নাক সোজা মেরেছি এক ঘুসি। আমার চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রিন্সিপাল ঘর থেকে বেরিয়ে এল। আমি প্রিন্সিপাল স্যারকে সমস্ত ঘটনাটা বললাম তারপর ফোনটা কেড়ে নিয়ে ফোন থেকে আমার ছবিগুলো ডিলিট করে দিলাম। আর গার্ড এসে অজয়কে কলেজ থেকে বের করে দিলো। অজয় কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আমার দিকে আঙ্গুল তুলে বলে গেল এই ঘটনাটা আমার মনে থাকবে। আমি তোমাকে দেখে নেব। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম সঙ্গে সঙ্গে অনিরুদ্ধকে ফোন করলাম কিন্তু কিছুতেই ফোনে পাচ্ছিলাম না। আমার চিন্তা বেড়ে গেল‌ কোনরকমে রেজাল্ট নিয়ে বাড়ী ফিরে এলাম। বাড়ী ফিরে এসে মাকে সমস্ত ঘটনাটা খুলে বললাম।মা বললো কিন্তু তুই ওই ছেলেটাকে মারতে গেলি কেন? এবার ও যদি তোকে রাস্তাঘাটে কোনো কিছু করে তখন তোর কি হবে?” আমি বললাম ” আমি থানায় যাব দরকারে তবুও অন্যায় সহ্য করবো না।” অনি ফোন করে জানালো চাকরিটা হয়ে গেছে অর্থাৎ ইন্সপেক্টরের জবটা সে পেয়ে গেছে কিন্তু কিছু প্রশ্ন প্রসিডিউর বাকি ছিল যার জন্য ওকে কয়েকদিনের মধ্যেই বেরিয়ে যেতে হবে। আমার গলা শুনেই বুঝতে পেরে গিয়েছিল আমার মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। আমাকে জিজ্ঞাসা করতেই আমিও সমস্ত ঘটনাটা বলি। ওতো রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে যায় বলে আজ আমার হাত থেকে অজয়কে কেউ বাঁচাতে পারবে না এতবড় তোমাকে বলে কিনা খানকিমাগী!? দাঁড়াও আমি ব্যবস্থা করছি। ফোনটা কেটে দিয়ে অনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। আমি তখন টেনসনে গা হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে কি করবো বুঝতে পারছিনা। অনিরুদ্ধ কে বারবার ফোন করছি কিন্তু ওর একটাই কথা আজ এর শেষ দেখেই ছাড়বে। অনেক বার বেড়েছে জানোয়ারটা। আমি মাকে সমস্ত ঘটনাটা বললাম এবং বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম কোনরকমে অনিরুদ্ধর মেজাজ ঠান্ডা করে গঙ্গার ধারে ওর সঙ্গে দেখা করলাম। বললাম যে ছাড়ো না যা হবার তো হয়ে গেছে। প্রিন্সিপাল স্যার তো ওকে যা বলার বলেছে দেখাই যাক না ও কি করে ততদিন পর্যন্ত ওয়েট করে থাকো। কোন রকমে অনিরুদ্ধকে শান্ত করলাম কারণ আমার মাথায় ঘুরছিল অনিরুদ্ধ চাকরিটা সবে সবে কনফার্ম হয়েছে যদি এর মধ্যে কোন কিছু একটা দুর্ঘটনা ঘটে তাহলেও চাকরিটা আর হবেনা কারণ তখনও কিছু প্রসিডিউর বাকি ছিল তাই আমি ওকে ক্ষান্ত করলাম এবং নিজেও বাড়ি ফিরে এলাম।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।