• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে শক্তিনাথ ভট্টাচার্য্য (পর্ব – ৭)

হোয়াটস্অ্যাপে পরকীয়া – 

[ সন্ধ্যের পর ফ্ল্যাটে ফিরে আরাম কেদারায় গা এলিয়ে দেয় অর্কপ্রভ।
বাড়ী ফিরতে বিপাসার আজ দেরী হবে। একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা। দু-আড়াই ঘন্টার পথ ঠেঙিয়ে ফিরতে তো সন্ধ্যে পেরিয়ে যায়-ই! আজ আবার কী মিটিং আছে শুনেছে।  অবশ্য, এসব নিয়ে এখন আর কিছু ভাবার নেই। সে সব দিন বহুকাল অতীত।
রান্নাকরার মাসি আসতে এখনও খানিকক্ষণ বাকী আছে। একটু চা করে নিতে হবে।
মোহনা কে এখনও অনেককিছু বলাই হয় নি। বলার সময় হোক! তখন দেখা যাবে।
তবে, এ ক’দিনের চলতি ঘটনা ওকে একটু হলেও ভাবাচ্ছে। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। অতীত জীবনে যা হয়েছে তার একটা বাস্তবতা আছে। প্রয়োজনে রঙ করে নিলে তার বিবর্ণতা ঢেকে দেওয়া যায়।  কিন্তু, অনলাইনের এই সম্পর্ক যত রঙীনই হোক কতটুকু বাস্তব , তাতে ওর সন্দেহ হয়। শোনা যায় অনেকরকম, কিন্তু ওসব সাময়িক আঁচ পোহানো! মোহনার কথা এখন সারা মন জুড়ে শুধু আঁকিবুঁকি কেটে যাচ্ছে সারাক্ষণ। আজকের ছায়াবার্তাটি আরো কয়েকবার দেখলো। মোহনা  আকর্ষণীয় যেমন, আগ্রাসীও তেমন। এমন কিছু এক্স ফ্যাক্টর ওর আছে, যা সবাইকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে। সত্যি মিথ্যের হিসেব কষে ওর সঙ্গে কথা এগোবে, না কি, ওসব ভেবে কী লাভ!! কিন্তু, এটা ঠিক, সবার সঙ্গে এইভাবে কথা বলা যায় না। ওর প্রতি স্নেহও আসছে, রসিকতা করতেও ইচ্ছে করে,  সিরিয়াস কথাও বলা যায়… যাতে ওর নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন ঘটাতে পারে! অনেকের সে ক্ষমতা থাকলেও এভাবে আসার তো প্রয়োজন না-ই পড়তে পারে! ]
(একটু পরে লিখল)
অঃ :   আর ফেসবুক করবো না। বন্ধুর চেয়ে শত্রুর সংখ্যাই তো বেশী হয়েছে…  আবার যদি হুড়মুড় করে কেউ ঢুকে পড়তে চায়!! তুমি এসে পড়েছ, ঠিক আছে,…  আমার আর ইচ্ছে নেই।
মোঃ :   থাকুক না সবকিছুই একটু একটু…দৃষ্টি যদি সঠিক হয়…তাকে পথভ্রষ্ট করে সাধ্য কার…!?
বাকি উপাদান হয়তো সে দৃষ্টিকেই উন্নত করবে আরো…!! কে বলতে পারে…!? 😊
অঃ :  বেশ।
তোমার আজকের ছায়াবার্তা দেখে যে কবিতা এল :
ছিল ধ্বংসস্তূপের খাঁজে
হারানো বোতাম, চিঠি…
আরো যা ছিল কাঙ্ক্ষিত
গড়েছে বুকে পাহাড়
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা যে
নতুন পরিচিতি
লেখে তোমার নামাঙ্কিত
যুগ্ম ইস্তাহার!!
মোঃ :   আহা… আ…ঃ!! শান্তি হলো…  🙂
অঃ :   কেন গো ?
মোঃ :  🙂
এমনিই…
সব ‘কেন’র কি আর মোক্ষম কারণ হয়…!?
কিছু কিছু কি আর এমনি এমনি হতে নেই…!?
তবে, আমি সে ইস্তেহারে সই করে দিয়েছি ডাক্তারবাবু! ‘ঘূর্ণিঝড়ের আশংকা’কে আমি আর ভয় পাই না। এতকাল যা ধ্বংসাবশেষ হয়ে বুকের পাহড়ে জমেছিল, উড়ে যাক তা ঘূর্ণিঝড়ে। ” ঝড়ে যায় উড়ে যায় গো, আমার ‘বুকের’ আঁচলখানি” ( আগে উল্লেখ করেছিলেন!)।
অঃ :  শান্ত হও। শান্ত হও হে বিদ্রোহিনী!! কবিতা কবিতাই…  বাস্তবের আলো হাওয়ায় সে বাঁচে না… শিশিরের চাদরেই তাকে জড়িয়ে নিও। রোদ্দুরে তাকে চেয়ো না।
মোঃ :  আচ্ছা। সেভাবেই তো চলি, ডাক্তারবাবু!!
এখন বলুন,… বাকি তো কত কিছুই রয়েছে… কিন্তু, আমি কী করতে পারবো, কী পারবো না…  সেটিই তো জানা হলো না… 🙂
অঃ :   সেটা সময় মত বলবো। কিন্তু তার আগে তোমার বাধানিষেধ, শাসন, সাবধানতা, লক্ষ্মণের গণ্ডীরেখা এগুলো আর একটু জেনে নিতে হবে যে! সেটা জেনে নিয়েই বলা হবে।
মোঃ : শাসন!!?… কাকে শাসন করবো…  আপনাকে…!?
কি অন্যায় করেছেন আপনি যে অমন কঠিন হতে হবে আমায়…!?  🙂
আর লক্ষ্মণের গন্ডীরেখা…  সে তো সীতার জন্য… আমি তো ঠিক সীতার মতো নই…  তাই তার পরিধিও আমার জানা নেই গো… 🙂
আপনার আগের একটা কথার সূত্র ( “না, মোহনা, তুমি আমায় ‘ভালবাস’  না বললে, আমি একথা বলতাম না… “) ধরে কিছু বলার ছিল :
নারী-পুরুষ আমাদের জীবনে বুঝি ফুল-পাতার মতো…  এখন তো আরো… হাজারো প্রলোভন…. কারোর এটি ভালো তো কারোর ওটি…  দোষটুকু কেও ভালোবাসতে পারার মানুষ ক’জন… পারলে বোধহয় এত হাহাকার থাকতো না সম্পর্কের ইতিহাস জুড়ে…
অর্জিতগুণটুকু ধূলিসাৎ হয়না তো কখনো…  তবে অবহেলায় অভিমানে বোবা হয়ে যেতে পারে….
আমরা সব্বাই প্রত্যেকে হৃদয় ই তো খুঁজছি গো…  কিন্তু মনের মতো আর হচ্ছে না মোটেই… আসলে কি জানেন আমরা ঠিক আমাদের মনের মতো..  মানে নিজেরই মতো কাউকে খুঁজছি… কিন্তু পাচ্ছি না মোটেই… পাওয়া যায় না আসলে…  নিজের বিকল্প শুধু নিজে হওয়া যায়… ব্যস… আর কেউ নয়… তাই মিলটুকু আর টিকতে পারছে না…
অঃ:  বুঝলাম। তাহলে, এখনো তোমার মনের মত কাউকে পাও নি, বলতে চাইছ !  তাই তো!🙂
মোঃ : না তো…  পাইনি তো… ঠিক বলেছেন একদম…
যে বলতে পারে না…  ” সামলাতে পারবে কি…!?  ভালোবাসার অহংকার উদ্দাম আদরের অত্যাচার সামলাতে পারবে তো…!? ”
এই তো!..  তাই না…!?
তা এটুকু বলার যার সাহস নেই…  এমন দুর্নিবার conclusion ( বাংলা মনে এলো না)…  তার পক্ষেই দেওয়া সম্ভব বৈকি…!! 🙂
অঃ :  আচ্ছা! আচ্ছা!!… তাহলে কি হবে!? 🙄
আমি যে আরও বড় কিছু দাবী করতে চলে ছিলাম!!
আমার গানের লাইনও কি তোমাকে বোঝাতে পারলো না যে, আমায় আরো সাহসী কোর না।…
এত প্রলুব্ধ করো!…  আমি যে পুরুষ!!… লুটে নেওয়া যে আমাদের রক্তে ঘাপটি মেরে থাকে!…
কেন এমন বলো, মোহনা! যাতে, ছেড়ে চলে না যাই, তাই এসব বলছো, তাই তো!!  ‘জয় করে তবু ভয় কেন তোর যায় না। ‘ তুমি তো জয় করেই নিয়েছ!!
কিন্তু, ‘সম্ভ্রম আর শ্রদ্ধার মোহ থেকে’ যার এখনো বেরোতে ইচ্ছে করে নি,  তার কি ওসব কথা বলা সাজে!?… কী করেই বা তোমার দেওয়া সেই সম্ভ্রমের মর্যাদাহানি করি বলো তো!!…
অথচ, আমি তোমাকে ‘তুমি’ করে বললেও কী সম্ভ্রমের কিছু ঘাটতি হয়েছে? 🙂…
তুমি তো এখনো  ‘আপনি’র গণ্ডী ডিঙোতেই পারনি!!
মোঃ : শ্রদ্ধা, সম্ভ্রম…  ভালোবাসা… কারোর সাথে তো কারোর বিরোধ নেই কোনো…
যখন যেরকম সম্বোধন আসতে চাইছে, আসুক না!!
অঃ:  বেশ।… তবে, অযাচিতভাবে পাওয়া যখন হয়েইছে, তখন আর ‘ ভালবাসার উদ্দাম, অহঙ্কার, অত্যাচার সামলাতে’ পারার কথা এভাবে এখনই বলতে বলছই বা কেন!?
কী হয়েছে তোমার!?…  কেউ কি এমন কিছু তোমাকে করেছে  যাতে এমন কথা হঠাৎই তোমার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো!?
এটা, যে মেলাতে পারছি না!!! 🙂
(একটু চুপ করে থাকার পর)
মোঃ : কে কার কি করেছে আমি কিচ্ছু জানিনা…  সব ভুলে গেছি…
আমি এখন গান্ধারী…  আমার চোখে আঁধার… আদর না করলে আমি কিছু শুনবোও না আর বুঝবোও না ☹
(আবার চুপ, কিছুক্ষণ… অর্কপ্রভ অপেক্ষা করে।)
মোঃ : sorry…
কি যে হয় মাঝেমাঝে…  🙂 কী যে বলে ফেলি!!…
তবু সে সব বলা যাবে নাহয় পরে কখনো!!…
কিন্তু, আপনি যে বললেন, ‘আরো বড় কিছু দাবী করবেন!’… তবে তো আমায় আবার ভিডিও বার্তার সে কথাই বলতে হয়…
” আমার সাধ্য কিবা তোমারে……. ” 🙂
অঃ: বললাম না, ‘আমায় আরো সাহসী কোর না,… ‘ তখন চুপ করে রইলে কেন!?…
মোঃ :  আমার নীরব সম্মতিটুকুও কি বোঝাতে পারলো না যে…  ভালোবাসায় ভরসার দেওয়াল এতই মজবুত যে সেখানে ভয় কিচ্ছুর নেই….
অঃ :   বেশ! তবে, তুমি কবে বেরোতে পারবে, বলো।
মোঃ : কোথায় বেরোবো…!?
অঃ:   জাহান্নমে।  ভয় পাবে নাতো! 🙂
মোঃ :  হা হা হা…  না নতুন জায়গা দেখবো…  ভয় কি…!?
অঃ: আচ্ছা!!… সাহস তো কম নয়!!… তবে বলো,  কিভাবে বেরোবে!…
তবু, একটা কথা না জিজ্ঞেস করলেই নয়…. কী হয়েছে যে এমন বেপরোয়া ভাব করছ!? তোমার কি কিছুর অভাব ঘটেছে!?….  তুমি কি ভাল নেই!?…কষ্টে আছ!?…
মোঃ :  হুঁ, তবে তো বলতেই হয়… আমি যে খারাপ আছি…  তেমনটা বললে যে অন্যায় হবে… সবটুকু আমার মনের মতো নয়… সেখান থেকেও যে আমার কিছু চাওয়ার আছে,  পাওয়ার আছে… সে তো অপরাধ নয়…
তখন যদি বলেন… ” তবে ফের ভালোবাসা আবার কি…!? ”
তাহলে বলি…  ভালোবাসা তো গন্ডীবদ্ধ জিনিস নয়…  যে তাকে নিয়ম-কানুন মেনেই চলতে হবে…
এমন কি কোথাও নিষেধাজ্ঞা আছে যে ভালোবাসা একবারই হতে পারবে…  ব্যস…!? আর কাউকে ভালবাসা যায় না!?
তবে, বাইরে থেকে তা আটকানো যায় বৈকি….  কিন্তু ভিতর থেকে… অন্তর থেকে…!? আটকানো যাবে কি তবে…!?
শরীরের সতীত্ব নিয়ে যতো মাথাব্যথা সমাজ সংসারের…  কই মন নিয়ে নেই তো…!? তাকে নিষেধাজ্ঞা মানানো গেছে কোনদিন…!?  🙂
অঃ :  বেশ। তুমি কি চাও আমাকে বোলো।…  শুধু, আমার নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করার জন্যে একটু সময় লাগতে পারে।
মোঃ : হ্যাঁ….  নিশ্চয়ই….!
তাড়া নেই তো কোন…  সাহচর্যের অঙ্গীকার আমের আচার নয় তো যে শেষ হয়ে যাবে…!?  🙂
আপনি সময় করে আসুন…  আমি তো রইলামই…!
অঃ:  বেশ বললে।…  তবে, শেষ হওয়া না-হওয়াটা নির্ভর করবে, অঙ্গীকারে কতটা আম আর কতটা তেল রেখেছ তার ওপরেও….
তোমার ভাবনাগুলো অনেকটাই আমার অনুসারী।
আচ্ছা!… তুমি বলো, আমার একান্ত আদর ভালবাসা বা সাহচর্য পেতে কী করলে তোমার পক্ষে সবকিছু সম্ভবপর হবে !!
আমি বলে রাখলাম,  তুমি যা চাইবে, তাই হবে। আমার চেয়ে তোমার চাওয়াপাওয়াটা বাস্তবায়িত করা সহজ হবে।
মোঃ :  😊
অঃ :  কী? সাহস পাচ্ছ?🙂
মোঃ : ভয় তো পাইনি কখনো… 🙂
অঃ :  শুক্তি, তোর ভালবাসাকে মেনে নিয়ে তোর জন্যে আমার ভয় করছে। তুই যা বলছিস, অতটা না বললেও ঝাঁপিয়ে পড়ার মত লোকের তো অভাব নেই! নিশ্চই জানি, সবাই সেই প্রশ্রয় পাবার যোগ্য নয়, পাবে না।  তবু, কেন তোর জন্যে ভয় করছে!! তোকে সত্যি বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে আমার কোন বাধা নেই।
যা করতে চাও,  তুমি সবকিছু ঠিক করো। আমি আছি। ❤
মোঃ : আমি তো অনেকটাই নিয়মবদ্ধ জীবন যাপন করি…  তাই সাক্ষাতের সময় ও সুযোগ বের করাটি সময়সাপেক্ষ ! ভয় যে একেবারে করে না, তাও তো নয়ই!!… তেমন তো নইও!!
আর, এই ভয় টুকুর সাহসেই  আমি বিপথগামী হতে পারবো না মোটে…  🙂
অঃ:   অথচ বলছিলে, তোমায় আদর করে পাগল করে দিতে! 🙂
সব কিছু না জেনে আমি অবশ্য সেটাকে বিপথগামিতা বলতে চাইছি না,  তবে দুঃসাহসিকতা তো বটেই!!
আপনজন না ভাবলে তোর জন্যে এই ভয়টা করতো না। বুঝলি!?
অবশ্য, বোঝার তো এখনো শুরুই হয় নি!! ফেসবুক থেকে আর কতটুকু কি জানা যায়…চেনা যায়… virtual world তো বটেই!! এখানে,  প্রথম প্রথম মনেহয়, আহা সবাই কী আপন!!… যেন যুগ যুগ ধরে চেনা… ওই, ছোটবেলায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইবোনের গল্প আর কি 😃!… পরে, একটু মতের বিপরীতে কথা বললেই সুর কেটে যায়। তোমার সঙ্গেই বা কদিনের পরিচয় বলো!!  কী জানি, পরে কী হবে!! 😊
মোঃ : আমি তো জানিই না আপনি কোথায় থাকেন…!?
আমি কোথায় থাকি জানেন…!?  🙂
অঃ : কিছুটা তো প্রোফাইলে দেখেছি।… ভাল লেগেছে বলেই না কথা বলছি!! তবে, এ ক’দিনের চেনাজানাটা একেবারেই অভাবনীয়!…
মোঃ : আজ আপনার প্রোফাইল খুলে দেখছিলাম ‘ মুখবই ‘ তে…. কত লেখা…  এমন মানুষটাকে জানাই হয়নি কখনো… তবে বেশি দেখতে ভয় হলো… এই যে দুম করে যা মনে আসছে তাই বলে ফেলার সাহসটুকু যদি ওই গুণের তেজে হারিয়ে যায়…!?!  🙂
যাক বাবা…  কথা বলে তবু ভরসা হলো 🤨
হা হা,হা…
অঃ : কিসের ভরসা!
হারাতে হবে না, তার?… তুই তো আমার মধ্যে হারিয়ে গেছিস!!
মোঃ :  একই পৃথিবীতে থাকি অন্তত…  তার ভরসা… হা হা
অঃ : আগামীকালের ছায়াবার্তায় আরো গোপন পরিচয় যেন পাই!!
মোঃ : কি গোপন পরিচয়…!?  🙂
অঃ: যা আমি পেতে চাইতে পারি!
মোঃ : কি পেতে…!?  🙂
অঃ: “তুমি মোর পাও নাই পাও নাই পরিচয়’এর আড়ালে যে পরিচয় থাকে!!…
নিজের বুদ্ধির ওপর ভরসা নেই, এমন তো নয়। এটা বোঝার ক্ষমতা তোমার আছে। তবু আমার মুখে শুনতে চেয়েছ…জানতে চেয়েছ, কী পরিচয় পেতে চাই!!… বেশ!… তবে শোন…
তালা ভেঙে সিন্দুকের রত্নভাণ্ডারের সবকিছু দিয়ে যে হ্লাদিনী রূপে প্রকাশিত হতে চেয়েছ,  সে রূপটি দেখতে চাই… বাইরের রূপটি তো দেখা যায়ই…
বিপজ্জনক খাদের ধারে  vally of flowers দেখা আর টবে ফোটা গোলাপের সৌন্দর্য তো এক নয়।
মোঃ :  আচ্ছা…. চেষ্টা করবো! 😊
অঃ :   কোন সময় কথা বলা যেতে পারে?
মোঃ : হ্যাঁ…  এটা একটা কাজের কথা বটে…
কথা বলার সময়টা আপাতত বলি…  সবচেয়ে নিরাপদ নিশ্চিন্ত সময় আমার জন্য…  ওই দুপুর ৩টে থেকে ৫ টার মধ্যে… সোম থেকে শুক্র…  ওই সময়টায় ঘরে আমি একাই থাকি… 🙂
অঃ :   ঠিক আছে।…তবে, কোথায়, কখন, কিভাবে বেরোবে বলো!?
মোঃ :  আচ্ছা, পরে বলবো।
অঃ :   বেশ… তবে, না বললে, এই নিয়ে আর কথা বলার আড়ম্বর করবি না। 🙂
মোঃ :  তবে তো বলতে হয়…
” নহি দেবী, আমি সামান্যা নারী… ” 😃
অঃ :    তোমাকে তো আমি “সামান্যা” হিসেবে দেখিনি 🙂
বদমাস্!!… যেই বেরোবার কথা বললাম, আগের সব কথা উড়ে গেল!? 😊
মোঃ :  বেরোনোটা তো সময় এবং সুযোগ দুজনের দেখা হলে তবেই হবে… 🙂…
একটা কথা বলি…  আমি কিন্তু ভারি নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ…  তাই অন্য অনেকের মতো ইচ্ছে হলেই আমি অনেক কিছু করতে পারি না…  এই যেমন ইচ্ছে হলেই বেরোতে পারি না… আমায় জবাবদিহি করতে হয়…
এমন মানুষের সান্নিধ্যে হাঁফিয়ে উঠবেন না তো…!?
জানিয়ে রাখলাম…  🙂
অঃ :  ব্রেক কষছো!!… অথচ, আক্রমণ করার বেলায় তিনি কত সাহসী, কতটা বেপরোয়া, কতটা উদ্দাম হতে পারে সেটা জেনে নিতে চাও!! 🙂
মোঃ :  কে আক্রমণ করবে…!?
আমেরিকা না চীন…!?  🙂
অঃ :   ফিউজ হলে গেলে কেন?
বলো!…তোমাকে আমি আদর করতে চাই।… তা কিভাবে হবে!!… তুমিই তো চেয়েছিলে!!…আমি কথা রেখেছি, এবার তোমার কথা রাখার পালা। 😀
তবে, শুধুমাত্র পুতুল কিনে এনে সাজিয়ে রাখার বাসনা মনেহলে, থাকবো না।
 যতদিন না, সে সময় বার করতে পারছ, এই নিয়ে আর বড় বড় কথা বোল না।… মুরোদ বোঝা গেছে। 🙂।
আমাকে কি বাজিয়ে দেখছিলে?  তাহলে,আমার উপন্যাসটা পড়ো… আমার সাহসের পরিচয় পাবে। সেখানকার নায়িকার মধ্যে তোমার ছাপও পেতে পারো। 😎
মোঃ : থাকবেন না…!?
আটকে রেখে তো ভালোবাসানো যায় না… !! 🙂
অঃ :  : পুতুল খেলার মত ছেলেমানুষ তো কেউ নই!…  এই বয়সে মনটা যে কোথাও স্থির হতে চায়!!
মোঃ : জানি তো আপনি ছেলেমানুষ নন…
আমারওতো গন্ডীকাটা…  হয়তো সাহচর্য টুকু ছাড়া আর কিছুই আমার দেওয়ার ক্ষমতা নেই..
ভেবে দেখবেন…  নিতান্তই পুতুল খেলা মনে হলে… আমি সরে আসা শ্রেয় মনে করি
অঃ :   বেশ তো!… খেলা না হলে খেলা মনে করবো কেন !!…
কিন্তু, এখন, আমার যে তোমায় খুব পেতে ইচ্ছে করছে!!… নিদেনপক্ষে, ভিডিও কল যদি করতে!!
মোঃ : ভুল হয়ে গেছে খুব…
আমি নিতান্তই সামান্য একটি মানুষ…  ক্ষমতাও তাই সামান্যই… হয়তো বা নেই-ই….  কাজেই কিচ্ছুর বড়াই আমি করছি না… করি না কখনো।
অঃ :   কেন ভুল হয়ে গেছে, বলছ?  তোমাকে যে সত্যি আমার আদর কর‍্তে ইচ্ছে করছে!!… তুমি তো চেয়েছিলে!!… 🙂
মোঃ :   ভুল হয়েছে…  কারণ নিজের ক্ষমতা (বা মুরোদ) সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল নই…  তাই
অঃ :   আমাকে কি বাজিয়ে দেখছিলে?
পুতুলখেলা যে চাও না, সেটা তো তুমিই বললে!
তাহলে, এখন সরে যাওয়ার কথা বলছ কেন!?
মোঃ : সেরকম স্বভাব আমার নয় যে…  আমি তো সুদের কারবারি নই…
আমি শুধু হৃদয় বুঝি….
তাতে যে এত দেনা পাওনাও থাকে…  সেটা ভুলে যাই
অঃ:    আমি তো দেনা পাওনার কথা বলিনি!!… তুমি কিছু পেতে চেয়েছিলে… আমাকে উদ্দীপিত করতে চেয়েছিলে!!
মোঃ : আপনি বললেন যে…  আমার মুরোদ নেই… সত্যিই আমার ক্ষমতা খুব সামান্য…
অঃ :   আমিতো দিতেই চেয়েছি!… কিছু পেতে চাওয়ার কথা তো আগে  বলিনি!!
শুক্তি!… তোমার অন্তরে যে সত্যি মুক্তো খুঁজে পেয়েছি!!… তার একমাত্র দাবীদারও তো আমারই হওয়ার কথা!!…
তোমার এই বোধ, এত সুন্দর লেখনী, রোমাঞ্চকর অভিযাত্রী হবার বাসনা!…
মোঃ : জানিনা…  কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেলো….
কষ্ট হচ্ছে কেমন…
ধরুন…. এই সাহচর্যটুকু ছাড়া সহজলভ্যতায় আমার আর কিছু দেওয়ার সামর্থ নেই…  ভেবে দেখে নিন ভালো করে… বন্ধুত্ব করা যায় কি….!?
তারপর বলবেন না হয়…!
অঃ :   এখন আমার যে তোমাকে ভীষণভাবে আদর করতে ইচ্ছে করছে!!!  তুমি কেন সেটা নেবে না!… ‘উদ্দাম ভালবাসা সামলানো’র কথা তুমিই তো বলেছিলে!
মোঃ : আমি যাচ্ছি…
আমি কোনদিন কাউকে বাধ্য করিনি…  আপনাকেও করবো না…
স্বচ্ছন্দে ত্যাগ করতে পারেন…!
অঃ :   কী বলছ, মোহনা ! তুমি কি আমার কাছ থেকে সরে যেতে চাইছ !?
তোমার এত mood swing হলে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে যে!!… আর, তা ক্রমশঃ সম্পর্কের ওপর বুঝি বোঝা হয়ে বসবে!… সে বোঝা ভারী হলে সম্পর্ক যদি তা বইতে না পারে!?
মোঃ : আপনি আমায় কষ্ট দিলেন যে…!
অঃ :   আমি কী কষ্ট দিলাম?
(অনেকক্ষণ কোন উত্তর না পেয়ে)
অঃ :    এটা আমার প্রাপ্য ছিল না। এটা তুমি কী করলে।  তুমি আশ্রয় চেয়েছিলে, আমি নির্দ্বিধায় আমার হৃদয়ে তোমাকে স্থান দিয়েছিলাম। তুমি তোমার অতৃপ্তির কথা বলছিলে, অনেক আদর পেতে চেয়েছিলে। আমি তো তা ভাবিইনি। ভাবিনি বলে তুমি কিছু ক্ষোভ, অভিমান উগরে দিয়েছিলে। আমি সেটাও প্রশমিত করায় রাজী হয়েছিলাম।
তারপরে, আর কিছু মেলাতে পারছি না।
‘ এ কেমন ভালবাসা কে জানে,  কী ভেবে গো ব্যথা দিলে এ প্রাণে…. ‘  ❤
মোঃ :   আমি তো কোন অতৃপ্তির কথা বলিনি…
ক্ষোভ বা অভিমানের তো প্রশ্নই নেই…
ভালোবাসলে আদর পেতে বা করতে ইচ্ছে করে..  সেটা কোন অতৃপ্তি থেকে নয়….
আপনারা পুরুষ মানুষরা শরীর ছাড়া কিচ্ছু বোঝেন না….!?
অঃ :  Shut up!! What nonsense !!
সাবধানে কথা বলবে।
একথা আমায় বলতে পারলে?  অন্যায় হবে না!?
তাহলে তো তোমাদের মত মহিলাদের কোন পুরুষবন্ধু করাই উচিত নয়!!
মোঃ :  বেশ… ভারি অন্যায় হয়েছে আমার
পারলে ক্ষমা করে দেবেন..!
শুভরাত্রি !
অঃ :   হ্যাঁ, শুভরাত্রি।…শুধু একটা কথা বলে রাখি… ইচ্ছে হলে, কাল উত্তর দিও…
একটু আগে যে বললে, ‘আমি যে খারাপ আছি…তেমনটা বললে যে অন্যায় হবে… ……    ভালবাসা তো গণ্ডীবদ্ধ জিনিস নয় যে, তাকে নিয়ম-কানুন মেনেই চলতে হবে!!…… … ‘‘
এসব বলে কী বোঝাতে চেয়েছিলে!??

ক্রমশ… 

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।