সাপ্তাহিক শিল্পকলায় “হেনরি রুশোর ছবিঃ আদিমতা ও স্বপ্নমাখা”- লিখেছেন আলবার্ট অশোক (পর্ব – ২৪)

ছবি এঁকে যারা আকাশ ছুঁতে চায়, তারা অধিকাংশই ছবিটা মগজ দিয়ে আঁকে। মগজ মানে মেধা, বুদ্ধি, পড়াশুনা বা অভিজ্ঞতা। আমার পেইন্টিং ক্লাবে আমি কিছু শিক্ষার্থিকে সাহায্য করি। যার মেধা আছে, ক্ষমতা আছে লড়বার, যার জীবনের একটাই লক্ষ্য,  লক্ষ্যে পৌছাবার। লক্ষ্যে পৌছাবার জন্য যার ত্যাগ অসীম। হ্যা, এসব সাধারণ মানুষের কাছে থাকেনা। মূলতঃ বয়স হলেই এই উপলব্ধি আসে। আমরা হাতে পায়ে কাজ করিনা। ভাবনা আর অর্থবহুলতা দিয়ে রুপ সৃষ্টি করি। ফলে যাদের বয়েস হয়েছে, উপলব্ধি এসেছে, তাদের নিয়েই আমার ভাবনা। এই ভাবনা ১৮র উপর থেকে আসে আস্তে আস্তে। দেখা যায় মধ্যবয়সে, মানুষ যখন নিজের চলাফেরাতে স্বাবলম্বী, তখন তার ছোটবেলা বা কৈশোরের স্বপ্নকে উচ্চাশাকে আরেকবার নাড়িয়ে দেখে, সম্ভব কিনা। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অনেকে মধ্যবয়সে, ঘোর সংসারে থেকেও ত্যাগ ও উৎসর্গের মাধ্যমে স্বপ্নকে লালন করে সার্থক হয়েছেন। খোঁজ করে দেখুন, কান পেতে দেখুন, অধিক বয়সে শিল্পসাহিত্য নিয়ে অনেকেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। জীবন শুরু হয় শুনেছি ৫০ এর পর।সৃজন শীলতা আসে ঐ সময়েই স্বাভাবিক ভাবে। বাস্তবিক, কিন্তু বড় বিপজ্জনক বয়েস এটা। শারিরীক সুস্থ থাকার ক্ষমতা এই বয়েসে অনেকেই হারিয়ে ফেলেন। যাদের মন যত সংকীর্ণ তারা তত তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যান। দুর্বল হয়ে পড়েন। তাদের পক্ষে শিল্পে আসা অসম্ভব।
1907 The Snake Charmer
কিন্তু যাদের মন নিত্য নতুন প্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলেন তারা নব্বইতেও বুড়িয়ে যাননা।
লজ্জা, ঘৃণা, ভয় যাদের নেই, যারা সতত রসিক ও সচেতন তারাই সার্থক হন বেশী। তাদের দরকার একজন নির্দেশক বা শিক্ষক। পেইন্টিং ক্লাব এই ভাবনা থেকেই শুরু হয়েছিল একযুগ আগে।  আপনি চাকুরিজীবি কিংবা ব্যবসায়ী,আর্থিক সচ্ছল, সপ্তাহ ভরে যদি কিছু সময় হাতে পান এবং নিয়মিত করে, আপনি শুরু করতে পারেন ছবি আঁকা। আপনার ইচ্ছাপূর্ণ করতে। এ এক অ্যাডভেঞ্চার। রোমাঞ্চকর ভ্রমণ।
পৃথিবীর ইতিহাসে বহু মানুষ  জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজের ক্ষমতা পরখ করে গেছেন। বিখ্যাত হয়েছেন। দরকার একটা উৎসর্গিত প্রাণ, আর অধ্যাবসা। আপনার মেধাই আপনাকে শিখরে নিয়ে যেতে পারে। অন্তত, কোন প্রতিযোগিতা বা উচ্চাশা না পূরণ হলেও শিল্পের মাধ্যমে আপনি  নিজের মানসিক শান্তি ও বিশ্বাস পাবেন। আমরা সবাই কিছু পাওয়ার বিনিময়েই কাজ করিনা, নিজের কাছে নিজের অস্তিত্বের মূল্য দিতেও কাজ করি।
হেনরী (আন্দ্রেই?) রুশো Henri Julien Félix Rousseau। তার জন্ম ১৮৪৪ সালে। মৃত্যু ১৯১০।   Le Douanier (the customs officer) তার কাজ ছিল কর আদায় বা টোল-ট্যাক্স আদায় করা। তিনি ৪০ বছরের পর স্থির করেন তিনি আর তার কর আদায়ের কাজ করবেননা। ৪৯ বছরে অবসর গ্রহন করেন। কারণ তার মাথায় ছবি আঁকার নেশা চেপেছিল।এবং অবসর না গ্রহণ করলে সারাদিন ছবি আঁকতে পারবেননা।রুশোর জন্ম ফ্রান্সেLaval, Mayenne, France। রুশোর পরিবারের পেশা ছিল পাইপ বসানো ইত্যাদি প্লাম্বারের। দরিদ্র ঘরের।ফলে, পরিবারের সাথে সেখানে তাকে শৈশবে কাজ করতে হত, সেখানকার হাই স্কুলে কষ্টে পড়াশুনা করেছেন। ঋণের দায়ে তার বাবা তাদের বাড়ি বিক্রি করে সেই জন্মশহর ছাড়েন। রুশো কৈশোরে আঁকাতে ও গানবাজনায় অনেক পুরষ্কার অর্জন করেন।
হাইস্কুলের শিক্ষা শেষ করে একজন উকিলের কাছে কাজ করতেন, ও পরে আইন নিয়ে পড়াশুনা করেন। চার বছর সেনা দলে নাম লিখিয়ে কাজ করেন, তার বাবার মৃত্যুর পর  তার বিধবা মাকে দেখা শুনা করার জন্য সরকারি চাকরি নিয়ে তিনি প্যারিসে চলে যান।সেখানে ১৯৭১ সালে তিনি একজন কর আদায়কারী collector of the octroi of Paris হিসাবে নিযুক্ত হন।১৮৮৬ সালে – ৪২ বছর বয়সে তিনি আবার ছবিতে ফিরে আসেন। এর মধ্যে জীবনের নানা টানাপোড়েন আর পাঁচটা লোকের মতোই কেটেছে। প্রথম স্ত্রী যিনি তার বাড়িওয়ালার কন্যা Clémence Boitard, ১৮৬৮ অর্থাৎ রুশোর ২৪ বছর বয়সে, তাকে তার ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন।২০ বছর ঘর করার পর তার স্ত্রী বিয়োগ হয়।তার ১০ বছর পর ১৮৯৮ এ, ৫৪ বছর বয়সে, তিনি আবার বিয়ে করেন Josephine Noury কে। ১৮৯১ সালে তার একটা ছবির রিভিয়ু  রুশোর জীবনে নতুন দিশা নিয়ে আসে।
ছবির নাম Tiger in a Tropical Storm or Surprised! is an 1891 oil-on-canvas painting  এটা ছিল তার প্রথম জঙ্গল এর পেইন্টিং। এখানে দেখানো হয়েছিল, বিদ্যুতের ঝলকানিতে একটা বাঘ শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। পরিবেশে তখন তুমুল ঝড়।
রুশো স্বশিক্ষিত শিল্পী। রূশোর খুব ইচ্ছা ছিল তিনি অ্যাকাডেমিক ভাবে ছবি আঁকা শিক্ষা করবেন। কিন্তু ঠিক উলটো হল। তার বাবা খুবই গরীব ছিলেন করের/ খাজনা দেওয়ার অভাবে বাড়িটা তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছিল।  উত্তর পশ্চিম ফ্রান্সের লাভালে  (Laval, a small town in northwestern France). তার জন্ম। ওখানেই ছোটবেলায় পড়াশুনা।
সঙ্গীত ও ড্রয়িং ছাড়া গড় ছাত্রদের মতই, খুব খারাপ পড়াশুনা বা ভাল পড়াশুনার ছিলেননা। ছবিটা ভাল বাসতেন। কিন্তু ছবি আঁকার সুযোগ কম ছিল। চল্লিশ বছরের পর সুযোগ পান ছবি আঁকার। পেশায় ছিলেন কর বা খাজনা সংগ্রাহক / শুল্ক বিভাগের এক অফিসার Le Douanier (the customs officer) ছবি আঁকার জন্য তিনি পেশা থেকে ৪৯ বছরে অবসর নেন। ৪৯ বছরে এসে সঠিক ভাবে ছবি আঁকার উপর জোর দেন। ব্যকরণ কিছুই জানেননা। পারস্পেকটিভ perspective এর জ্ঞান নেই, প্রপরশন proportions জ্ঞান নেই, রঙয়ের unnatural colors জ্ঞান নেই । কিন্তু মনের ইচ্ছায়, আর নানা বিষয়ের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবি আঁকা শুরু করেন। ভাস্কর্য দেখে, চিড়িয়াখানা ঘুরে, খবরের কাগজের ইলাস্ট্রেশান দেখে, পোস্টকার্ডের ছবি দেখে তিনি প্রভাবিত হন। সে সময় তার কাজ কর্ম এতই সরল ও আকাট অশিক্ষিত শিল্পীদের মত ছিল, তা দেখে অনেকে হাসি ঠাট্টা করতেন। সমালোচকরা মজা করতেন।
রুশোর বাঘ টি Eugène Delacroix র একটি পেইন্টিং্যের মোটিফ থেকে নেওয়া হয়েছে, এরকম অনেকে দাবি করেছিল। রুশো বলেছিল সে মেক্সিকোর জংগলের অভিজ্ঞতা থেকে এই ছবিটা আঁকে্ন। বাস্তবিক কিন্তু বলা হচ্ছে রুশো কোনদিন ফ্রান্স ছেড়ে বাইরে যায়নি। রুশো তার ৩৫ বছর বয়সেই ছোটবেলার ছবি আঁকার পিছুটান পাচ্ছিল। সে দু তিন বছর অন্তর অন্তর একটা দুটো ছবি এখানে সেখানে সবার সাথে প্রদর্শনীতে দিতে চাইত, কিন্তু যেখানে নির্বাচিত ছবির প্রদর্শনী হত সেখানে সে সুযোগ পেতনা। স্বশিক্ষিত বলে, তাকে কেউ পাত্তা দিতনা। আর প্রদর্শনী হলেও সাধারণ মানুষের মত সরল বা দক্ষতাহীন কাজ বলে তাকে অবজ্ঞা অপমান সইতে হত। বলত বাচ্চাদের মত আঁকা।বলত কর আদায়কারীর ছবি! অধিকাংশ সমালোচক তাকে ঠাট্টা করত। এগুলি রুশোকে নিশ্চয়ই স্বস্তি দেয়নি। কিন্তু বাঘের ছবিটা যখন আঁকেন তখন সচরাচর যেমন উপহাস হয় তেমন সমালোচনা হয়। কিন্তু   Félix Vallotton, a young Swiss painter, পরবর্তী সময়ে খুব প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও কাঠ খোদাই শিল্পী হিসাবে খ্যাতি পান তিনি বললেন, রুশোর বাঘের ছবি আপনারা অবশ্যই দেখবেন। এটা ছবির এ থেকে জেড।
His tiger surprising its prey is a ‘must-see’; it’s the alpha and omega
রুশো ৪৯ বছরে অবসর নেওয়ার পর তার সময় সুখের ছিলনা, অল্প পেনসনের টাকা, আর পার্ট টাইম রাস্তায় বেহালা বাজানো, কিছু প্রকাশনা প্রচ্ছদের কাজ করে তাকে চলতে হত। খুবই সংগ্রাম করে দিনপাত।
রুশোকে ৫৪ বছর পর থেকে একটা পরিচিতি পেয়েছিল। তরুন মাতিস এবং আরো অনেকে তখন ফভ আন্দোলন নিয়ে এসেছে। তরুণ পিকাশো ১৯০৮ সালে রুশোকে রাস্তায় তার পেইন্টিং বিক্রী করতে দেখেছিলেন তখনই পিকাশো এমন বিশাল প্রতিভাকে দেখে তার সাথে দেখা করতে যান। রুশো প্যারিসের নতুন এক দিশা নিয়ে এসেছিলেন যা রুশোর জীবদ্দশায় খুব কম লোকই উপলব্ধি করেছিলেন।তিনি ছিলেন একজন avante-garde। মৌলিক রুপকল্প নির্মাতা।
পিকাশো তার তরুন বয়সে, তিনি নাকি রুশোর কাজ ফালতু জিনিসের মধ্যে দেখেছিলেন এই বলে মজা করতেন।
১৯০৮ সালে পিকাশো একটা পুরাণ ছবির দোকান থেকে রুশোর এই ছবিটা (Portrait of a Woman (1895)) কেনেন। তখন তিনি রুশোকে চিনতেননা।
পিকাশো প্রথম প্রথম রুশোকে ভাল চোখে দেখেননি। কিন্তু তাকে তার আড্ডায় আমন্ত্রণ করতেন। এই নিয়মিত আড্ডাতে রুশোর প্রতি পিকাশোর একটা টান জন্মে গেছিল। ১৯০৮ সালে পিকাশো অনেক টাকা কড়ির মালিক। দেদার টাকা পয়সা উড়াচ্ছেন, স্ফুর্তি করছেন বন্ধুদের নিয়ে। তেমন একটা পার্টিতে রুশোকে নেমন্তন্ন করেন পিকাশো। ইচ্ছা ছিল তার ছবি নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করবেন। রুশো পিকাশোর চেয়ে অনেক বড় বয়সে। ফরাসী স্বাধীনতা দিবসের মতো পিকাশোর পার্টির চেহারা ছিল সাজ সাজ রব। অনেক নতুন শিল্পীকেও নেমন্তন্ন করা হয়েছে। সবাই বেশ মদ খেয়েছে। রুশোও প্রচুর মদ খেয়েছেন। শেষ রাতে রুশো পিকাশোকে একপাশে টেনে নিয়ে বললেন, ‘ তুমি আর আমি, সেরা শিল্পী। তুমি ঈজিপশিয়ানদের মত আঁকো, আর আমি আধুনিক’। রুশোর নিজের আত্মপ্রত্য্য় যথেষ্ট ছিল।
আজ রুশো শিল্প জগতে এক বিশিষ্ট নাম।পিকাশোর চেয়ে কম নন খ্যাতির দিকে। নবীনদের কাছে পড়াশুনার বিষয়।
রুশো কিন্তু ঐ সময় প্যারিসে যে ধরণের শিল্প বিষয় বা স্টাইল চলিত ছিল, তিনি কিন্তু সে দিকে যাননি। কখনো ভাবেননি’ এটা পাবলিক খাবে’। তার ছবি ভালবাসার পিছনে অনেক ত্যাগ, অপমান, ও ধৈর্য ছিল। আপনার তা আছেতো? তাহলে আজই শুরু করুন নিজেকে আবিষ্কার।।
উপরের ছবিটা হেনরি (এন্দ্রি) রুশোর (Henri Rousseau The Sleeping Gypsy 1897) দ্য স্লিপিং জিপসী, ১৮৯৭ সালে আঁকা।
পিকাশো তার সরল ছবি দেখে বুঝেছিলেন সরল ভাবেও ছবি আঁকা যায়।ছবিতে সাহিত্যে ইম্প্রেসনিজন ও সিম্বলিজম তাকে খুব আকৃষ্ট করেছিল।  তিনি বলেন, যখন তিনি তার বাগানে, ভিন্ন রাজ্যের ভিন্ন প্রকৃতির উদ্ভিদ দেখেন তখন তার কাছে স্বপ্ন মনে হয়।”When I step into the hothouses and see the plants from exotic lands, it seems to me that I am in a dream.” তিনি অনেক জঙ্গলের ছবি এঁকেছেন।
উপরের ছবিটা, The Sleeping Gypsy তে তিনি দেখাচ্ছেন এক নিগ্রো রমণী ম্যান্ডোলিন বাদক,পথের পাশে, খুব ঘুম পেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। সম্ভবত ক্লান্তিতে, পাশে একটি ম্যান্ডোলিন ও জলের পাত্র। এক সিংহ ওই পথ দিয়ে অতিক্রম করতে দেখেছে শোয়ানো রমণীকে। আকাশে চাঁদ, রুপালী আলো বড় কাব্যময় পরিবেশ। সিংহ নিগ্রো মহিলাকে আক্রমণ করছেনা।
এই যে ছবি আঁকার ভাবনা, রুশো আজ থেকে ১২২ বছর আগে করেছিলেন, তার মধ্যে যথেষ্ট কবিতা না থাকলে এমন স্বপ্নের ছবি আঁকতে পারেননা। সিম্বলিস্টরা, ইম্প্রেসনিজমের পর, কবিতা ও শিল্পে তাদের আইডিয়াকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। যা চোখে দেখা যায়, তা নয়। অর্থাৎ আমার ভাবনা যা, তা অবাস্তব হোক, ক্ষতি নেই, আমি আমার ভাবনার ছবিই আঁকব।
রুশো, এমন এক শিল্পের সন্ধান দিলেন, তাকে avant-garde শিল্পী বলা হয়, কয়েক প্রজন্মকে তিনি প্রভাবিত করেন। আজও কোথাও কোথাও অনেক শিল্পী তার ছবি ও ভাবনাকে নকল করে।
ছবি এখন অ্যাকাডেমিক শিক্ষার বিষয়, তারপর আপনাকে কোন গুরুর কাছে একটা দীর্ঘসময় না থাকলে আপনি অনুপ্রাণিত হবেননা। প্রভাবিত হবেননা। আজ থেকে ১০০ বছর আগে যে সময় ছিল সে সময় পালটে গেছে।সবাই রুশো হতে চাইলে হতে পারা যাবেনা। রুশো যে উপাদান ও অধ্যাবসায় তৈরী হয়েছিলেন, সেগুলি আজ আপনি পাবেননা। স্থান কাল পাত্র অনেক পরিবর্তিত হয়ে গেছে।
1905 The Hungry Lion Throws Itself on the Antelope
1910 The Dream

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।