• Uncategorized
  • 0

অ আ ক খ – র জুটিরা

ছেড়ে যাওয়া নয়, গর্জে ওঠার সহস্র শঙ্খ..

“পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে,
পৃথিবী হয়তো গেছে মরে।
আমাদের কথা কে-বা জানে,
আমরা ফিরেছি দোরে দোরে ।
কিছুই কোথাও যদি নেই,
তবু তো কজন আছি বাকি।
আয় আরো হাতে হাত রেখে,
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।”
সাহিত্যের এক মজবুত হাত সত্যি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। আলগা হয়ে গেল অভিভাবকের দৃঢ় বন্ধন, স্নেহের পরশ। তাঁর প্রত্যেকটা সৃষ্টি যেন বলে যেত জীবনের নানা ওঠা-পড়ার গল্প। ফুটিয়ে তুলতো স্বপ্নের চিত্র। কখনো প্রেম-ভালোবাসা তো কখনো অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ। তাঁর কলমের আড়াল যেন কিছুই নয়।
“মাঝে মাঝে শুধু খসে পড়ে মাথা/কিছু-বা পুরনো কিছু-বা তরুণ/হাঁক দিয়ে বলে কনডাকটর/পিছনের দিকে এগিয়ে চলুন।”
প্রত্যেকটা অন্যায় এর পিছনে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর শক্তিশালী কলম কে। যেন এক অদ্ভুত জাদু। ভিন্ন ভিন্ন বাচনভঙ্গিমার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া যায় তাঁর অনবদ্য সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। কখনো “রাঁধাচূড়া” বা কখনো “জ্যাম”। ‘নিহিত পাতালছায়া’ আর ‘মূর্খ বড়, সামাজিক নয়’-কে পাশাপাশি রেখে পাঠ করতে বসলে খুঁজে পাওয়া যাবে তাঁর সৃষ্টির বিস্ময়। মুগ্ধ না হয়ে সত্যি থাকা যায় না। কবিতা প্রেমী হোক কিংবা অপ্রেমী তাঁর কবিতার প্রেমে পড়েনি এরকম মানুষ বোধহয় নেই। ভালো করে খুঁজলে পাওয়া যাবে তাঁর প্রত্যেকটা লাইনের এক গভীর মানে। হয়তো বা ব্যভিচারের প্রতিবাদ, নয়তো যুবসমাজ কে জেগে ওঠানোর তীব্র অনুপ্রেরণা। সেই আভাস তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “দিনগুলি-রাতগুলি” তেই পাওয়া যায়।
যদি প্রেম সমুদ্রে খোঁজ হয় তাঁকে তবে পাওয়া যাবে “সঙ্গিনী” এর মত অনবদ্য সৃষ্টি।
‘‘হাতের উপর হাত রাখা খুব সহজ নয়/সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়/এ কথা খুব সহজ, কিন্তু কে না জানে/সহজ কথা ঠিক ততটা সহজ নয়’’
একটা সম্পর্ক বহন করে এক গভীর মানে। যেখানে দুজন দুজনকে বুঝে বয়ে নিয়ে যাওয়াই হলো মূল উদ্দেশ্য। তারপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে ভালোবাসা। কিন্তু কতটা সহজ এই বোঝাপড়া..! সেই উত্তর ই পাওয়া যায় তাঁর “সঙ্গিনী” কবিতায়। তাঁকে বা তাঁর সৃষ্টি কে বোঝা হয়তো সত্যি সহজ নয়। যতই খোঁজা হবে ততই নতুন ভাবে, নতুন রূপে আবিষ্কার করা হবে তাঁকে।
তাঁর কলম সৃষ্টি করে গেছে একের পর এক অনবদ্য সৃষ্টি। রাজনৈতিক, ভালোবাসা, প্রতিবাদ, মোহ, মুক্তি কি নেই তাঁর ঝুলিতে।
সাহিত্য ছাড়াও যত বার কোন অন্যায় হবে প্রত্যেক বার নিজেকে দাঁড় করানোর জন্য প্রয়োজন পড়বে তাঁর কলমের। এক আমি থেকে গর্জে উঠবে সহস্র আমি। ফনা তুলবে তাঁর কবিতার প্রত্যেকটা লাইন, দাড়ি, কমা, সেমিকোলন সব। ঝড় তুলবে সবার ‘বিবেক’ – এ।
তাঁর চলে যাওয়া, ছেড়ে যাওয়া নয়, গর্জে ওঠার, ভালোবাসার, এক থেকে সহস্র হওয়ার হুঙ্কার। ঠিক হাতে হাত রেখে আরও বেঁধে বেঁধে থাকার গল্প।

“আমারই হাতে এত দিয়েছ সম্ভার
জীর্ণ করে ওকে কোথায় নেবে?
ধ্বংস করে দাও আমাকে ঈশ্বর
আমার সন্ততি স্বপ্নে থাকে।”……

অনিন্দিতা ভট্টাচার্য্য

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।