সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে অভিজিৎ চৌধুরী (পর্ব – ২১)

না মানুষের সংসদ

চিত্রলেখা ডাকছিল, মন – ওঠ, ওঠ । কতো বেলা হয়ে গেল ।
মন উঠে দেখল রোদ উঠেছে । পিউ কাঁহা ডাকছে তখনও । হনুমান গুলি পেয়ারা গাছের এক ডাল থেকে আরেক ডালে ঝড় তুলে যাচ্ছে আর মুখে হুপ হুপ শব্দ করছে ।
মন বলল, মা – আজ ইস্কুল যাব না ।
চিত্রলেখা বলল – দূর পাগলি – আজ তো রোববার । স্কুল যেতে হবে না ।
হাততালি দিয়ে উঠল মন । পক্ষীরাজ, কাল রাতের স্বপ্নের কথা এখনও স্পষ্ট মনে আছে মনের । সেসব কথা মাকে বললনা ।
বরং বলল –
মা, আজ কিন্তু অংক করব না ।
ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে মনের হাতে দিলো মা ।
তো কি করবে !
আঁকব ।
দাদুকে কথা দিয়েছে মন পক্ষীরাজকে সত্যিকারের রামধনু উপহার দেবে । অন্যদিন দাঁত মাজতে সে খুব দেরী করে । ব্রাশ থেকে পেস্ট জলের কণার সঙ্গে মিশে জামা নোংরা করে দেয় । সেসব হল না আজ । বাধ্য মেয়ের মতন দুধটুকুও ‘চোঁ’ করে খেয়ে নিল । তারপর বসল আঁকার খাতা নিয়ে । পাতা জুড়ে সে একটা নীল আকাশ আঁকল । তারপর সাদা সাদা তুলো তুলো মেঘ আঁকল । আর আঁকল পক্ষীরাজ ঘোড়া । পক্ষীরাজ ঘোড়ার সাদা ডানায় রামধনুর সাত রং এসে পড়ল । দারুণ হল ছবিটা । দৌড়ে গিয়ে দেখাল ছবিটা মাকে ।
চিত্রলেখা মেয়ের গালে চুমু দিয়ে বলল –
কি সুন্দর এঁকেছিস মন ।
আঁকা শেষ করে মন এলো ‘মুক্তধারা’ মঞ্চে । সঙ্গে তার মা চিত্রলেখাও এসেছে ।
স্টেজের ওপর অনেকগুলি ফুলগাছ । যেন একটা ফুলের বাগান । বেল, জুঁই, টগর, গোলাপ । তবে সব ফুলগাছই আসলে একেকজন শিশু । এছাড়াও রয়েছে হরিণ, জিরাফ, হাতী, কাকাতুয়া ।
এবার এলেন ইন্দ্র স্যার আর স্বার্থপর দৈত্য । মাথায় দুটো শিং, গলায় মালা, কানে দুল ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।