মেঘলা আকাশের নীচে,
জীবন আজ থমকে দাঁড়িয়ে;
পদে পদে প্রশ্ন ওঠে –
তুই কে?
জানিনা এর উত্তর আমি:
হ্যাঁ, তবে আমি নির্বোধ নই.
আমি কোন সুখের রাত্রের ফসল.
আমায় পাওয়া গিয়েছিল,
ওই নর্দমার ধারে-
নোংরা ডাস্টবিনের ভেতরে;
সেই থেকে আমার পরিচয় –
আমি এক পথ শিশু।
দুর্বার দুর্গম জীবনে আমি
পেরিয়ে এসেছি বছর আটেক.
বর্ষার ওই খোলা আকাশ ছিল
আমার জীবনের খোলা খাতা.
এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর প্রতিটি ফুটপাথ
সেদিন থেকে হয়েছিল আমার বাড়ি.
ভদ্র সমাজের ফেলে দেওয়া খাবার,
আমার কাছে বেঁচে থাকার মাধুকরী।
ছিন্ন ভিন্ন এক ময়লা বস্ত্র-
তার কাছেও হার মেনে ছিল,
ওই শিহরণ জাগানো শীত.
কিন্তু শিহরিত করেছিল আমায়
এক ধোঁয়াশা ময় ভবিষ্যৎ .
কারণ,আমি যে এক পথ শিশু.
একলা সাদা কালো জীবনে
হয়ে গেছে দিনশেষের তারাদের সাথে বন্ধুত্ব .
কত হাসি কান্না মান অভিমান –
এসবের সাক্ষী থেকেছে ওরা .
কত গল্প বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরেছি
দিনের পর দিন ;
ওরা সব শুনেছে,সব বুঝেছে;
তবু একটুও বিরক্ত হয়নি তোমাদের মত .
যখনই অদম্য জঠর জ্বালায় কুন্ঠিত আমি ,
আহার্য চেয়ে পৌছেছি তোমাদের দুয়ারে:
কেউ ক্ষুব্ধ চোখে বেজার মুখে –
‘নেই’ বলে দিয়েছে তাড়িয়ে ;
কেউবা ঠোটে একটু সন্তাপ করে,
কয়েক টাকা দিয়ে চলে গেছে .
কিন্তু কেউ খবর নেয়নি .
মমতা ভরে মাথায় হাত ও রাখেনি .
আহ,হলামই বা আমি শিশু;
আমি তো এক পথেরই শিশু।
পুবের বুক চিরে ধীরে ধীরে হয় সূর্যোদয়;
আমার অভুক্ত পেট আবারও জেগে ওঠে .
আবার আমার মলিন হাত
তোমাদের সামনে প্রসারিত হয়:
শুধু যে ভিক্ষে চেয়ে নয় ,
আমার অস্তিত্বের একগুচ্ছ প্রশ্ন করে.