কবিতায় অজয় ঘোষ

একা মানুষ

তুমি আমায় লেখার কথা বলেছিলে
বলেছিলে লেখার কথা
বলেছিলে আঁকার কথা
এমন একটা সময় জুড়ে
এমন একটা শহর জুড়ে
এমন একটা নদীর কূলে
যখন ছিঁড়ে খাচ্ছে দিন ও রাত্রি
কষ বেয়ে ওই রক্ত ঝরছে
মাথার ভিতর ঘুনপোকারা
কুরে কুরে ঘিলু খাচ্ছে
হাড়ের ভিতর দুব্বো গজায়
এমন সময় লেখা কী যায়
কাদের কথা লিখব আমি?
কাদের কথা ?
ভিতর বাগে চেয়ে দেখছি
গড়িয়ে পড়ছে মাটির নিচে
অন্ধকারের তরল আঠা
গড়িয়ে পড়ছে জলের নিচে
অবিশ্বাসের অতল পাথর
এসব কথা সাদা কাগজ কলম তুলি
লিখতে পারে ? আঁকতে পারে ?
তুমিই বলো ,
এখানে এখন চোখের পাতায়
আমি আঁকবো অনুকম্পা
আমি লিখবো সহানুভূতি
কী করে ভাবছো ?
প্রতিটা ভোরেই তোমার কথা ভাবতে থাকি
অনুরণন বাজতে থাকে
মনের মধ্যে
ভিতরে হাত
বাড়িয়ে দেখি
ক্ষয় রোগটা উঠে আসছে
কাদামাটি উঠে আসছে
এসব দিয়ে প্রতিমা গড়ি
সাধ্য কোথায়
কাঠামোটা পচেই গেছে
ধড় আর মাথা গলেই গেছে
শূন্য সময়
অধরাকে ধরার জন্য একাগ্রতা,
ওই চোখ ওই ঠোঁটের ছবি
আঁকার জন্য আধার কোথায় ?
ঝাপসা দেখছি
ইদানিং সব ঝাপসা দেখছি
ঠোঁট জুড়েছে ঠোঁটের আঠায়
শ্যাওলা আমার শরীর জুড়ে
এখন আমি মানুষ নেই আর
এই কথাটা প্রায়শ বলো,
এপার থেকে ওপাড়াটা কেমন যেন মেঘলা লাগে
প্রাচীন আলোর ত্রিফলাটা বিঁধছে চোখে
বিঁধছে বুকে
ভিতরে সব জরদ্গব বসে আছে রাস্তা জুড়ে
মৈথিলী নয় ব্রজবুলিতে
এখন আমি পদ্য লিখি
এটাই এখন চাপিয়ে দেওয়া
মিথ্যেটাকে সত্যি মেনে
এগিয়ে যাওয়া এগিয়ে যাওয়া
যা ভেবেছো হবে না আর
এই জমিতে ফসল তোলা
বরং তুমি একাই এসো
একাই বসো আঁধার মূলে
এ জীবনটা একা একাই
ভালোবাসো নিজেকে তুমি।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।