কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে আলমগীর কবীর হৃদয় (গুচ্ছ কবিতা)

১| ছুটি

ছুটি নেবে ছুটি
চলছে কিন্তু অটো ছুটির মৌসুম
প্রতিদিন ই হচ্ছে ছুটি হাজার দশ বারো
ছুটি শেষে করবে কি?
হাতে অনন্ত সময়…
শুয়ে বসে খাবে কি কর্মহীন সময়ে
ছুটির পর কোন কাজ পাবে না যে আর
কর্মের এ ধরিত্রীপুরে করেছো যে সঞ্চয়
সেই সঞ্চয়ে চলতে হবে তোমার অনন্তকাল
এ ছুটি যে একেবারে ছুটি
ক্ষনিকের ছুটি নয়।
এ ছুটি নিতে না চাইলেও, পেয়ে যেতো পারো
এ ছুটি বিশ্বব্যাপি চলছে অটোমুডে
টিভির শিরোনামে তাই প্রতিদিনই আসছে
বিশ্ববিধাতা জ্বর বাবু কে একটু ডিজিটাল করে
করোনা রুপে পাঠিয়েছে এ ভবে
ডিজিটাল এর তেলেসমাতি দেখিয়ে
অটো মুডে তাই ভব জীবনের লীলা করছে সাঙ্গ
প্রতিদিনই করছে ছুটি হাজার দশ বারো
ওহে মানব ছুটি কালিন সঞ্চয় এবার করো
ছুটি নেবে ছুটি…
অটো মুডে চলছে ছুটি… না চাইলেও পেতে পারো
ছুটি নেবে! ছুটি…

২| প্রার্থনা বিশ্বপ্রতিপালকের কাছে

ভালো নেই, ভালো নেই, আমি আমরা কেউই।
বিশ্ববাসী আজ ভালো নেই
হে বিশ্বপ্রতিপালক, আজ আমরা সবাই অসহায়।
বিজ্ঞানের জয়যাত্রার এ পৃথিবীতে
সমৃদ্ধ ইতালি ও আজ মৃত্যুপুরী অশ্রুসিক্ত তার রাষ্ট্র প্রধান।
হে রাহমানূর রাহিম পরম দয়াময়, দয়া বর্ষণ করো তুমি আমাদের।
আজ বিশ্বে শক্তিধর নেতৃত্বদানকারী রাও
বলছে,এই মসিবতে রক্ষাকারী আসমানের তুমি।
আজ নিজের হাত কে লাগে বড় অচেনা,
চোখ,মুখ,নাক যেন হয়েছে প্রতিপক্ষ আমার।
মনেতে জাগায় শঙ্কা কখন জানি,
করোনাভাইরাস কে আপন করবে তারা।
আপন আলয় আজ, আপনজন সবাইকে লাগে অচেনা
শ্বাস,প্রশ্বাসেও মনে জাগিয়েছে হতাশা।
এমন তো কখনোই হয়নি ওগো বিধি এ মনে
এ কোন কঠিনতর পরীক্ষায় ফেলেছো ভবে।
ঈমানী পরীক্ষায় পাশ করিয়ো তাতে।
ঔষুধের শহর খ্যাত সুইজারল্যান্ডে নেই কোন প্রতিকার আজ যে
প্রযুক্তিবিদ্যায় উজ্জল জার্মানিও পাচ্ছেনা কোন যুক্তি আর।
মানবতার দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিয়েও,
ইতালি আজ তোমার ই ভরসায় চাইছে আসমানি ফায়সালা।
ক্ষমতাধর রাষ্ট্র মার্কিনী প্রশাসন ঘর বন্দী হয়েছে আজ।
ওহে বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহ মহান,
কায়মনোবাক্যে বিশ্ববাসী আজ তোমার রহমতের আশায়।
ফিরিয়ে দিওনা ওহে প্রভু দয়াময়, ক্ষমা করো যত ভুল করেছি ধরায়…
করোনাভাইরাস দাও মিশিয়ে মাটিতে অথবা নাও তুলে আসমানে,
যেথা গেলে মানবের ক্ষতি আর না হয় তোমার পাক ইশারাতে…

৩| কবিতা আসবেই

নীল, তুমি বললে-
আজকাল কবিতা লিখতে পারছো না?
কবিতার আবেদন গুলো
শব্দ জমাটবদ্ধ হয়ে করছে না খেলা।
আচ্ছা নীল,ভেবে দ্যাখো তো-
তোমার জীবনে কোন কবিতা ধরা দিয়েছে নাকি?
-কেন বলছো এমন কথা,বলো তো কাব্য?
নীল,তবে শোন -কবিতা কি জানো?
-জানবো না কেন?সুন্দরতার প্রকাশ ই কবিতা…
অলিখিত ব্যথার গোপন কথাগুলো কবিতা…
যে কথা কেউ উচ্চারণ করতে পারে না
সেটাই অসীম সাহসের সাথে নিঃশ্ব সংকোচে
বলে ফেলার নাম-ই কবিতা…
আচ্ছা কাব্য, হঠাৎ এমন প্রশ্ন করলে কেন?
-নীল, এবার ভেবে দ্যাখো তো-
এমন কি কোন সুন্দরতা তোমাকে ছুঁয়ে গেছে?
যা তোমার মনোমন্দিরের আকাঙ্খা ছিলো…
তুমি এমন কি, কোন প্রিয় মানুষ কে পেয়েছো
যাকে অবলীলায় বলতে পারছো
মনের জমাটবদ্ধ ব্যথার কথাগুলো?
তোমার প্রতিবাদের ঝাঁঝালো যে কন্ঠস্বরকে
নির্বাসনে পাঠিয়ে বলেছিলে এবার ক্ষান্ত হও
সময় যে বড় অসময় এখন
আগে বাঁচো তারপর না প্রতিবাদ করো…
সেই প্রতিবাদী ভাষা প্রকাশের যোগ্য
একজন সঙ্গী পেয়ে গেছো কি?
-কাব্য,এতটা ভাবলে কি করে বলো তো?
আমি সত্যি সত্যিই
এমন একজন কে পেয়েছি
যার সাথে তোমার বলা উপরের কথাগুলো
পূঙ্খানুপুঙ্খ মিলে যায়…
-নীল, সেজন্যই তোমার ডায়েরির কবিতা
ক্ষণকালের ছুটি নিয়েছে…
ভেবো না, জীবন ও প্রকৃতি বৈচিত্র্যময়
শুধু বৈচিত্র্যময় ই নয় রহস্যময়
তোমার কবিতা ফিরবে আবারও ফিরবে
কবিতা কে যে ফিরতেই হয়
সময়ের প্রয়োজনে
মূখর প্রতিবাদে অথবা ভালোবাসার গোলাপ হাতে
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
একাত্তরের স্বাধীনতা
৭ মার্চের মুক্তির আহবানের শব্দে
কবিতা ফিরে ফিরে আসে, কবিতা আসবে।
কবিতা কে আসতেই হবে, ভেবো না তুমি…
কবিতা আসবে…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।