।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় অভি সমাদ্দার

মাধবী কবিতা গুচ্ছ 

১.
মনো বিকলনের দিকে যাওয়া প্রভূত সাড়াশীল
কেননা সময়, পরিযায়ী সময়,  সেই তো উড়িয়ে আনলো
আজিকার পথের ধূলো ও ধোঁয়াশা আর চক্ষে পশিলো
কিছুটা অশ্রু ও অন্তের রুটি মানচিত্র হে দেশ আমার
আমাকে সংবেদনে আর দেখিও না  ঢলের শিশু বৃদ্ধ মাতা-পিতা !
আমি তো সামান্য অক্ষর আড়ের পথিক
মাধবীর রহস্য সন্ধানে এসে মৃতজনের আত্মচিৎকারে থমকে গেছি,
এই উদাসীতন্ত্রের ট্যারাবেঁকা ঔজ্জ্বল্যে,
এই অসূয়াবাৎসল্যে তোমাদের নীরবপটীয়স মুখের দিকে চেয়ে থমকে গেছি
২.
এ জন্মে পালক-এর পালয়িতাই যদি পাপ হয়, সে পাপ আমি রেখেছি তরলে।
কেননা স্ফুটমান সম্পর্কের এই বস্তুপৃথিবীতে সঠিক নিমজ্জন,
আমার জানা ছিল না।
মেরুকরণের সূত্র আমার জানা ছিল না।
তাই প্রতিবার  তরল ও তন্তুর অস্তিবিন্যাসে
আমি ছুটে গেছি মাধবী আঁধারে। তার জানুর ছায়ায় বসে বলেছি -সরল হও।।
জীর্ণ করো, এই জৈব বাক্যসকল। অর্থ, মলিন করে দাও।
আর মনে হয়েছে নিজেরই শৈলীর ছায়ায় বসে
সকল বিগত  পাপ,  আমি রেখে যাচ্ছি কবিতায়।
ফলত চরু ও সুচারু’র  এই কব্জিটান,
এবং এই সামান্য  আলেখ্যে ও তার  দোদুল সেতুসঞ্চার।
একে কি অর্থকরী উল্লাস বলা যাবে  মাধবী?
৩.
নৈকট্যই যদি নিরন্তর  নিসর্গ আধার হয়।  তবে আমি এই, ঘটমান সভ্যতাকেই
দায়ী করি তার  বিভেদসঞ্চারে।
সেই ফুসলিয়ে নিয়ে এসেছে পিতৃজ পুরুষের কর্মযোনিতে।
আর যন্ত্রের যন্ত্রণাও
ঐক্যের  ছল গানে বেঁধেছে বিপত্তিমূলক।
অথচ মূল তো মাতৃকানূর।
তার সুর, ধ্বনি, টান ও টঙ্কারে যে মমত্ব সমাহার।
যে মৌল মনের গঠন, তা তো ছিল,  সদা সরল বন্ধনপ্রিয়।
ভ্রাতৃ এষণার উদ্দালক। হাঃ ধর্ম !
এই অস্তি হাস্যের চলমান কৌতুক ও রক্তপাতই
কেন ভিত্তি জর্জর লিপি হলো তোমার !
রে মৃত্যুপথযাত্রী, রে পন্ডিত,  রে চালিকাশক্তির বনিককুল,
বলো এই শতধা সমবিভক্তের অশ্বত্থশরীর
কেন দীনমোচী শুষ্ক হলো। হায় মাধবী ! এও বাহ্য
এই অলীক সুখকল্পেই মজিলো কবি ও কর্তনকারী !
৪.
মম নীরবে যে মর্মর সময়ধ্বনি, তা  সতত সূচকবিভ্রমে ডাকে
মানুষের শততা ও চীর’তার বধ্যভূমির দিকে ঠেলে দেয়।
আর বিলোল  পুঙ্খানুপুঙ্খে মাধবীকে বুনে তোলে সান্ধ্যমানবী করে।
সূচিকাঅগ্রের অভি – ব্যক্ত আধার করে।
তার মায়ার মুখমন্ডলী, তার আয়ত এলানো শরীর খাঁজে, সময়ের দাগ দাগ রেখাচিত্র,
তার একদা পোড়া মাংসের মর্ত্যউল্লাস ও প্রার্থনা নিভৃত নাভির স্পর্শ চুম্বন,
লেখাকে জৈবখন্ডের জলীয় ভাসানে ভাসিয়ে নিয়ে যায়,
মনে হয় এসবই, সময় নামক এক ছিন্ন চেতন,
যা নাবিকের কম্পাসে কোন নির্বাচন রাখে না।
ধ্রুব এক তারার গনণায়, দিক নির্দেশনার কৌনিক আলোয়
তাকে সগুন কবিতার চলনমঞ্জুরি করে রাখে।
শুধু তার চোখের ভাষা পড়তে গিয়ে এক  নিরুপায় কথক,
আঁতের পরিসীমায় কুয়াশার পাপড়ি ছিঁড়ে ছিঁড়ে জীবনের   অধিগোল প্রশ্নমালায়  আটকে যায়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।