ক্যাফে ধারাবাহিকে বিতস্তা ঘোষাল (পর্ব – ৩২)

কু ঝিক ঝিক দিন

৩২.

মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব।তার আগে টেস্টের পর স্কুল ছুটি। জানুয়ারি মাস শুরু হয়েছে সবে।ঠিক দুদিন আগেই আমার জন্ম দিন গেছে। মনের মধ্যে তার আনন্দ তখনো গুঞ্জরিত। সকাল বেলা এই নটা সাড়ে নটা নাগাদ বাবার ঘরে বসে।বাবা স্নানে ঢুকেছেন।সেই সুযোগে বাসি বিছানা পরিস্কার করে আমি পেপার পড়ছি বাবার খাটে বসেই।এরপর বাবা পুজো করতে যাবেন ঠাকুর ঘরে। ঘন্টা খানেক পুজো করে নেমে এসে অল্প কিছু খেয়ে স্কুলে যাবেন পড়াতে।এটা বাবার প্রচন্ড অপছন্দের একটা বিষয়, কিন্তু প্রতিষ্ঠাতা খগেন দাদুর সম্মানার্থে বাবা যেতেন পড়াতে।
বাবার পড়ানোর বিশেষত্ব ছিল,নিজে বিশেষ কিছু পড়াতেন না।ক্লাসের সবচেয়ে বদমাশ ছেলেটার ওপর দায়িত্ব থাকত বই খুলে অন্যদের পড়ানোর এবং
পড়ানো শেষ হলে পড়া ধরার।
আরেকটা জিনিস যেটা বাবা যদি কখনো আমাদের কাউকে পড়া বোঝাতে হত তবে করতেন,তা হল ধরা যাক মোঘল সাম্রাজ্যের পতনে আওরঙ্গজেবের ভূমিকা কতটা -এটা পড়াবেন বা বোঝাবেন,তো বাবা পুরো মোঘল সাম্রাজ্যের একটা ছবি গল্পের মতো চোখের সামনে বর্ণনা করতেন,যেগুলো কোনোটাই পাঠ্য বইয়ে নেই। কিন্তু এমনভাবেই বলতেন যাতে সেখান থেকে যা খুশি এলেও কিছু অন্তত লেখা বা উত্তর দিতে পারা যায়।
বাবা অবশ্য স্কুলে কি পড়াতেন মানে কতটা পড়াতেন এ নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। যদিও আমাদের সমবয়সী বন্ধু যারা বাবার স্কুলে পড়ত,তারা ঘোষাল স্যারের অন্ধ ভক্ত ছিল,তারা সবসময় বাবাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বলে মনে করত।
এ নিয়ে তাদের পরিস্কার বক্তব্য ছিল-স্যারের মতো শিক্ষক পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।ফলে এ বিষয়ে আমি পুরোটাই অন্ধকারে। কিন্তু এটা জানতাম বাবা খুব বিরক্ত নিয়েই কাজটা করেন।
স্কুলে বাবাকে অবশ্য ছাত্ররা ভয়ও পেত।কেন সেটা জানি না।
স্কুলের সামনের রাস্তা দিয়ে যাবার সময় শুনতাম ছেলেরা আমাকে শুনিয়ে বলত-
“আজ থেকে কাক হল কাকাবাবু
এখানেই থাকব খাব দুধ সাবু।।”
আবার কখনো বলত-“কর দুষ্টুমি, আরও কর,গাছের ওপর উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে দেব।পাখিদের সঙ্গে কথা বলতে পারবি।কিন্তু মানুষের সঙ্গে নয়।”
আবার কেউ কেউ জোরো জোরে বলত- “শীতের রাতে খেয়েছিলাম আইসক্রিম। ধিক আমাদের ধিক।”
এগুলো আসলে বাবা কি ধরনের শাস্তি দিতে পারেন সে বিষয়ে বাবার বলা কতগুলো ছড়া।আর ছিল প্রতিটি বাচ্চার আলাদা আলাদা নামকরণ। যার নাম দেওয়া হল না,সে তার মানে বাবার কাছের নয়, এমন ধারণা করত তারা।আর এর ফল ভুগতে হত আমাদের। বাড়ির সামনে সকাল থেকে ছেলেদের দল দাঁড়িয়ে থাকত মায়েদের সঙ্গে। কি না তার ছেলের নামকরণ করতেই হবে।নইলে ছেলে খাওয়া দাওয়া খেলাধুলা পড়াশোনা কিচ্ছু করছে না।
বাবা তখন তাকে কাছে ডেকে একটা নাম দিয়ে দিল।বাস্ তাদের খুব আনন্দ।
একটা ছাত্রর নাম ছিল মাতৃভক্ত হনুমান। আরেকজনের চির সখা।
আমাদের এক বন্ধুর দাদার নাম দিয়েছিল বিদ্রোহী নেতা।পরবর্তী কালে যখন সে খুব বড় রাজনৈতিক নেতা হল,তখন আমাদের বাড়ি এসে বাবাকে প্রণাম করে বলল-স্যার আপনার জন্যই এটা হতে পারলাম।
যাহোক, বাবা স্নান শেষ করে দরজা খুলে বেরতে গিয়ে টাল খেয়ে গেলেন।আমি খেয়াল রাখতাম বাবার বাথরুমের দরজা খোলার আওয়াজটা।কারণ তৎক্ষনাৎ ভিজে সিল্কের লুঙ্গিটা হাত থেকে নিয়ে মেলে দেব।বাবা নিজের লুঙ্গি আর গামছা নিজেই জলকাচ করে নিতেন।মা পরে ওয়াশিং মেশিনে কেচে দিত একসঙ্গে যখন অনেক জমা হত।
বাবার মাথা ঘুরে যাচ্ছে দেখেই দৌড়ে গিয়ে ধরে ফেললাম।
বাবা স্নান করে এল,কিন্তু ভীষণ ঘামছে।আর বুকটা চেপে ধরেছে।
আমি চিৎকার করে মাকে ডেকে বাবাকে বিছানায় শুয়ে দিলাম।
বাবা ওই অবস্থায় বললেন,ডাক্তার ডাকতে হবে।
ডাক্তার কোথায় পাব?এ পাড়ার কাউকেই প্রায় চিনি না।মা তো একজনকেও চেনে না।একছুটে নিচে নেমে পাশের বাড়ির জ্যেঠিমাকে ডাকলাম।বললাম বাবার বুকে ব্যথা করছে।জ্যেঠিমা নবজাতক স্কুলের আরোগ্য ভবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।সেখানে প্রেসার মাপা,ই সি জি, এগুলো করতেন।শুনেই আমাকে নিয়ে চললেন ডাক্তার ডাকতে।
পাড়াতে একজন ডাক্তার থাকেন সেদিন জানলাম।কিন্তু সেই সময় তিনিও বাড়িতে নেই।
ইতিমধ্যে জ্যেঠিমা উল্টো দিকের বাড়ির ভূজনদা আর ক্লাবের ছেলেদের খবর দিয়ে দিয়েছেন।আমি কিছু বুঝতে পারছি না কি হতে চলেছে।জ্যেঠিমা আমাকে নিয়ে চললেন ডাক্তারের খোঁজে। ততক্ষণে আমাদের পুরনো বাড়ির দোতলায় এক ডাক্তার থাকতেন,তপন কাকু,যদিও পরে জেনেছিলাম তিনি স্কিনের ডাক্তার,তার কাছেও খবর চলে গেছে।
আসলে বাবা এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে তার সামান্য কিছু হয়েছে জানলেও লোক জমা হয়ে যেত।
অবশেষে পাওয়া গেল ডাক্তার। তিনি এসেই বললেন,প্রায় শেষ। এখনি হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো বাঁচতে পারেন।কিন্তু সম্ভাবনা কম।
বাবা তখন যন্ত্রণায় নীল হয়ে উঠছেন।মা কাঁদছে। সেই সময় আমার ছোটো বোনের পক্স হয়েছে।
আমার কানে ডাক্তারের কথা যাচ্ছে না।তিনি বলছেন বুকে গীতা রাখো,বড় মেয়ে তুমি?জল দাও,…
আমি একমনে রামকৃষ্ণ নাম জপ করছি।ইতিমধ্যে জ্যেঠিমার ছেলে বুড়ো দা,যাকে আগে কখনোই দেখিনি, সেদিন প্রথম দেখলাম,জ্যেঠিমা তাকেও কারোর মাধ্যমে খবর দিয়েছিল,সে এসে গেছে।
এসেই ক্লাবের ছেলেদের বলল,কাকুকে নিচে নামতে হবে।
ডাক্তার দুজন চেঁচিয়ে উঠল।এই অবস্থায় বসালে সঙ্গে সঙ্গে ডেথ।তার চেয়ে বরং শান্তিতে যেতে দেওয়া ভালো।
সেদিন আমি হঠাৎ করেই বুঝতে পারলাম বাবা আর থাকবে না।কি যেন একটা ভর করল।চিৎকার করে সেই দাদাকে বললাম,আমার বাবা,আপনি নিচে নামান,ততক্ষণে ক্লাবের দাদারা বাবাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়েছে।
আমি ঘড়ি দেখছি। আমাদের গাড়ি চালানোর কাকু আসতে দু’ঘন্টা দেরি।চাবি বাড়িতেই আছে।কিন্তু গাড়ি চালাবে কে!
দাদা দেখলাম কাউকে বলল,চাবি নিয়ে নিচে নামতে।আর আমাকে বলল,কে যাবে সঙ্গে? তুমি?
মা ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিল।বাবা প্রলাপ বকছিল।আমি চলে যাচ্ছি। তুমি এদের সামলে রাখবে।আমার জমানো বিশেষ কিছু নেই। তুমি তা নিয়ে চিন্তা কোরো না।টাকা পেয়ে যাবে।শুধু এদের সামলে রাখবে…
আমার কানে ঢুকছে কথাগুলো, বুঝতে পারছি আমাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, কিন্তু না,হাল ছাড়লে চলবে না।
দাদা গাড়ি বের করে ফেলেছে। পিছনে আমি আর মা। কোলে মাথা দিয়ে বাবা শুয়ে।সামনে জ্যেঠু, মানে দাদার বাবা।
পিছনে বাইকে ক্লাবের অনেক দাদা।
টালা ব্রিজের সামনে বাবা বমি করে জ্ঞান হারালেন।
মা কাঁদছে।দাদা স্পিড তুলছে গাড়িতে।আমি বাবার বুকে হাত রেখে ক্রমাগত রামকৃষ্ণ জপ করছি আর বুকে চাপ দিচ্ছি। বায়োলজি স্পেশাল সাবজেক্ট থাকায় জেনেছিলাম হার্ট অ্যাটাক হলে বুকের রক্ত সঞ্চালন ঠিক করার জন্য চাপ দিতে হয়।
সেটাই করছিলাম।শ্যামবাজার ক্রস করে ড্রিমল্যান্ড নার্সিং হোম।দাদা গাড়ি দাঁড় করিয়ে ডাক্তার ডাকল।না,ডাক্তার বলে দিলেন,এই পেশেন্টকে নেওয়া যাবে না।সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটা এম্বুলেন্স। দাদা তার ড্রাইভারকে ডেকে নিয়ে বাবাকে সেখানে তুলল।এবার গন্তব্য মারোয়ারী রিলিফ সোসাইটি হাসপাতাল। সেখানে ডাক্তার আর এন চ্যাটার্জি এই সময় থাকবেন।
বাবার হৃৎ স্পন্দন ক্রমশ কমছে।বাবার হাত মুঠো করে আমার হাতে ধরা।
ভেতরে কি চলছে আমি জানি না।কিন্তু এক অপরিসীম শক্তি আমাকে ঘিরে ধরছে।হারবো না।আমি দেব না যেতে বাবাকে আমার হাত ছেড়ে।
মারোয়ারী রিলিফ সোসাইটির গেটে দাদা কোনোও ফরম্যালিটি পূরণ করলো না,একেবারে এমারজেন্সি লিফটে নিজেই কোলে তুলে বাবাকে। সঙ্গে আমি।মা তখনো পেছনে।তার পেছনে কারা আমি জানি না।
লিফট ওপরে উঠছে,দাদা কোনও কিছুর পরোয়া করছে না।সরাসরি আই সিসি ইউ।নিজেই টেনে নিয়ে এল অক্সিজেন, বাবার নাকে নল গুঁজে দিয়ে আমাকে দাঁড় করিয়ে ডাক্তার ডাক্তার বলে চেঁচিয়ে উঠলো।
ততক্ষণে সিস্টার নার্স সকলে ছুটে এসেছে, কোনও প্রোটোকল না মেনে প্রায় মৃত এক ব্যক্তিকে আই সি সি ইউ তে ঢোকানো হয়েছে।
ছুটে এসেছেন ডঃ আর এন চ্যাটার্জি। দাদা বলল,এই বাচ্চা মেয়েটার বাবা।আজ এনার কিছু হয়ে গেলে তিনটে মেয়ে নিয়ে কাকিমা পথে বসবেন।
ডাক্তারবাবু একবার আমার মুখের দিকে চাইলেন।বললেন,ঈশ্বরকে ডাকো।
বাইরে গিয়ে দাঁড়াও।
আমি দ্রুত ভাবছি এর পর কি কি হতে পারে।বাবা না থাকলে কিভাবে দুই বোনকে মানুষ করব? মাকে কিভাবে সামলাবো!কাকুদের খবর দেওয়া হল কি?
হাসপাতালে টাকা কোথা থেকে দেব!
খানিক বাদে ডাক্তার বাবু ডাকলেন।সই করালেন কতগুলো কাগজে।আমি অন্ধের মতো সই করলাম।
সেই ডাক্তার বাবু যিনি পরবর্তী কালে আমাদের দাদু হয়ে উঠলেন,তিনি বললেন,যদিও কথা দিতে পারছি না বাহাত্তর ঘন্টা না গেলে,এখন অজ্ঞান, কোমার স্টেজে,তবু আমি চেষ্টা করব তোমার বাবাকে ফিরিয়ে দিতে।
সেই ছাব্বিশ দিন বাবা অচেতন আর চেতন স্তরের মাঝে। আমি হাসপাতাল আর বাড়ি করছি।
আসন্ন ভবিষ্যত জানি না।আর পড়াশোনা হবে কিনা তাও জানি না।শুধু জানি বাবা না ফিরলে রামকৃষ্ণর সঙ্গে আমার চির বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।
এর মধ্যে বাবার যাও বা জ্ঞান ফিরল,সিগারেটের জন্য এত পাগলামি করলেন যে বিশেষ বোর্ড বসানো হল বাবা অন্য কোনো নেশায় আসক্ত কিনা- এটা বোঝার জন্য।
ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভিজিটর হিসেবে মন্ত্রী, আমলা,পুলিশ, নেতা,বুদ্ধিজীবি,সাংবাদিক, অভিনেতা অভিনেত্রী, দেশ বিদেশ থেকে নানা বিদ্বগ্ধ মানুষের আগমনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনে গেছেন বাবার পরিচয়।
ফলে যে বোর্ড গঠন করা হল বাবা সুস্থ, মানসিক ভারসাম্যহীণ বা ড্রাগ এডিকটেড নন প্রতিপন্ন করার জন্য, ডাকা হল এইসব মানুষের মধ্যে থেকেই। এলেন তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের মাননীয় মন্ত্রী,এলেন স্বরাষ্ট্র সচিব,পুলিশের ডিজি।
একটা মানুষ সিগারেটের প্রতি এত আসক্ত হতে পারে ডাক্তারদের কাছে অকল্পনীয়।
আমি বাড়ি ফিরে বাবার বাথরুমের দরজার মাথার ওপর লাগানো কাঠের আলমারি থেকে কার্টেন কার্টন সিগারেটের প্যাকেট সামনের পুকুরে ফেলে দিলাম।
অবশেষে তিরিশ দিন বাদে বাবাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে যখন বেরোলাম বাড়ির পথে তখন অনুভব করলাম বাবার সঙ্গে আমরাও বেঁচে গেলাম এ যাত্রায়।অনুভব করলাম রক্তের সম্পর্ক না হলেও আত্মার আত্মীয় শব্দটার মানে।
সেই দিন থেকে দাদা হয়ে উঠল আমাদের অবিভাবক।আর তার পর থেকে বাবা আবার ফিরে গেলেন সাধনায়।যে সাধনায় সিদ্ধি লাভের আশায় বাবা সন্যাসী হবেন বলে ঘর ছেড়েছিলেন অতীতে,কিন্তু ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই সাধনা সমাপ্ত করার জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন চল্লিশ বছরের এক তরুণ।
সারা পৃথিবী জুড়ে যখন তার খ্যাতি তুঙ্গে, অজস্র পুরস্কারে পুরস্কৃত, খবরের কাগজের আলোচ্য ব্যক্তিত্ব তখন নিজেকে স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কেউ দেখাতে পারেন কিনা জানতাম না।কিন্তু বাবা বলেছিলেন, অবচেতন স্তরে থাকার সময় তিনি ঈশ্বর দর্শন করেছেন।বাকি পৃথিবী সেই আলোর সামনে ফিকে।এই বাহ্যিক মোহ,এই লোভ,খ্যাতি, অর্থ, যশ,সব সাময়িক। শেষ অবধি কিছুই থাকবে না।আমি তাই আমার কাজটা করতে চাই এবার নিরিবিলিতে।
সেই থেকে বিশ্বের তাবড় তাবড় মানুষের জন্য বন্ধ হয়ে গেল গায়ত্রী নিকেতন। তা উন্মুক্ত রইল একেবারেই সাধারণ মানুষের জন্য।
ক্রমে একটু একটু করে দেখলাম বাবার মাথার ওপর ঈশ্বরের জ্যোতির মতো বলয় গড়ে উঠছে। চেনা বাবা ক্রমশ ঈশ্বর হয়ে উঠছিলেন…।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।