কাব্য কথায় বদরুদ্দোজা শেখু

সন্তর্পণে

বোতল সেবন করা নিষিদ্ধ এখানে ।
আবাসিকদের জন্য জ্ঞাতব্য নোটিশে
পরিষ্কার বলা আছে , ঘরে ঘরে কপি আছে সাঁটা ।
বিশেষতঃ মহিলারা যেহেতু থাকেন পাশাপাশি ।
তথাপি বোতল চলে প্রায়শঃ গোপনে ।
রাত দশটা নাগাদ খাওয়া-দাওয়া সেরে নিয়ে
সহযোগী বন্ধুরা গেঁজায়
ঘরে ঘরে ব’সে অনাসক্ত ঘরগুলোয় ঘুমোবার অপেক্ষায়, অনন্তর
ছিটকিনি এঁটে
শুরু হয় সন্তর্পণে নিয়ে আসা দামী দামী
বোতলের এলাহি মোচ্ছব মুখরোচক বিচিত্র
চানাচুর চিপস্ কিংবা মাংসের চাঁপ পকোড়া
সহযোগে , গ্লাসে গ্লাসে টুংটাং উঠে ,
একে অপরের কিংবা কল্পতরু কাঙ্ক্ষিত নারীর অথবা
নন্দন-তনু সহপাঠিনীর
নাম ধ’রে স্বাস্থ্যপান চলে মত্ত খেয়ালিপনায়
কেউ কেউ পরস্পর কানাঘুষো প্রেমট্রেম
হাসিমস্করার খুচরো এলাচ -দানা এলাহি রগড়
অজস্র ছিটিয়ে দ্যায় তোফা , হাসির
তুবড়ি ছোটে মজলিশে , চাপা চাপা রহস্য-জনক ।
আসর জমিয়ে খায় ওরা
ধীরে সুস্থে রসিয়ে রসিয়ে , অবশেষে বুঁদ হ’লে আত্মমগ্ন
পরস্পর আলোচনা করে
নিজেদের প্রণয়-ঘটিত ভ্রষ্ট অশ্লীলতা একাকার ব্যর্থ অভিনয় ।
কোনো কোনো দিন
অতিমাত্রা পূর্ণ হ’লে মাতলামি শুরু হয়
বেপরোয়া জড়াজড়ি নাচানাচি হয়
অকপট লম্পট গালিগালাজ হয়
ল্যাংটানো বেশবাস খোলাখুলি ছোঁড়াছুঁড়ি হয়
অমদ্যপ সতীর্থকে খাওয়াবার জন্য টানাহ্যাঁচড়া জোরজুলুম হয়
অন্যথায় বিদেশী বোতল-কেনা চাঁদা ধরা হয়
প্রতিবেশী মেয়ে-মানুষের জন্য বাজি ধরা হয়
অমার্জিত আচরণ অবিশ্বাস্য প্রকরণে
মোড় নেয় মুহূর্ত্তে মুহূর্ত্তে , শেষমেষ মোটকথা
সে এক অভিনব নরকগুলজার ।
মোষের মতন প’ড়ে প’ড়ে ঘুমায় সকালে ওরা
, খালি সব বোতল পাচার করে কমিশনে ঝাড়ুদার গুপ্ত কায়দায় ।
ওই সব সমর্থন করিনা , তবু
একই ঘরে অস্পৃষ্ট হ’য়ে থাকা একান্তই বড়োই দুষ্কর ।
কেতাদুরস্ত দামাল মদ্যপ বন্ধুরা
বুড়ো আঙুল দেখায় কর্তৃত্বের নিয়মকে , কিন্তু কেউ চায় না
জানুক তার গিন্নী বা প্রেমিকা , সরকারী প্রশাসনে
অসদুপায় যেমন গোপন প্রকট লোকচোখে , অন্ধপ্রায়
ওপর-মহল ; ছিমছাম ইমারতে
অভিনবত্ব-মাতাল ছিনালের নোংরামি ঢাকা প’ড়ে যায়
তার বিত্ত বেশভূষা বলিষ্ঠ মেজাজে ; দুশ্চরিত্র চাকচিক্য
সমাজের শোভাকে বাড়ায় , প্রকাশ্য সভায়
আঁধারের কাকের শরীরে জ্বলে ময়ূরের ডানা ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।