T3 ।। কবিতা পার্বণ ।। বিশেষ সংখ্যায় চিন্ময় বসু

প্রতীক্ষার ঘর

I
ছাই রঙা স্মৃতির আলো আবার
পুরোনো বাঁচা বাঁচতে চায়,
অতীতের ভুত পোড়ে।
আমি এক অন্ধ নাচার গাছের তলায় নৃত্য করি,
প্রলাপ বকি মেঘেদের সাথে যাদের
ঢেউয়ের মত দেহ যাদের বালুকার বেলা।
আমি জল ছুঁয়ে জল গান গাই;
মেঘ, পতঙ্গ ও সবুজ পাতার শরীর
জাগায়, কি বলে?
ভুতুড়ে সময় জ্বলে, গতদিন, আজ ও আগামী।
আমার স্বপ্ন যত শুধু মিনিটের, মিনিট খানেকই
শুধু সব কিছু বাঁচে। কিন্তু শতাব্দী বা মিনিটে
কিই আসে যায়; নক্ষত্রের সময়ও
তো সময়। রক্তের ফোঁটা বলো
অথবা আগুন, শুধু কাঁপা থরোথরো।
II
কে আমার কপালে তার ঠান্ডা হাত বুলিয়ে দেয়।
অতীতের স্মৃতি থেকে নদী এসে আমার
পাথরের আঁখি পল্লবের নীচে দিয়ে বয়ে যায় ।
স্মৃতির নদী থামে না কখনো, কিন্তু তাকে কি জবাব দিই। অতীত কি আমার কাছ থেকে পালাতে চায়? নাকি আমিই তার সঙ্গে দৌড়াচ্ছি আর
এক কালো ফাঁপা অন্তসার শূন্য ছায়াময়
আমি সেজে তাকে হত্যা করতে উদ্যত হই।
কিংবা হয়তো যে পালায় সে অন্য কেউ:
আমি হেঁটে চলে যাই, সে আর পিছু নেয় না নিপূণভাবে আত্মবিস্মৃত হয়ে থাকে।
পুরনো অমি উদাসীন তীরে বসে থাকে।
আমায় মনে নেই, খোঁজে না, আশা করেনা, বাতিলও করে না। সে আরেক পলাতকের
আশায় যার আবার তাকে মনে নেই।
III
আগে পরে বলে কিছু নেই। আগে যেমন
এখনো কি সেই বাঁচা; এক রকম।
কি বাঁচলাম। পেরেছি কি।
সব কিছু বয়ে যায়: যেমন মনে হত আগে
তেমনই এখনও তো মরেই চলেছি।
অশেষ সময়: মুখ ও ঠোঁটগুলি সব ভান
যেমন মিনিট, মৃত্যু, স্বর্গ, নরক সব ভান, অছিলা।
এ দরজা প্রবেশের নয়, কোথাও যায় না,
কেউ যায় না, পার হয়না।
শেষ নেই, স্বর্গ বা রবিবার, সপ্তাহান্তে ঈশ্বর আমাদের অপেক্ষায় নেই।
তিনি ঘুমিযে থাকেন আমাদের চিৎকার তাকে জাগাতে পারে না।
বরং আমাদের নৈ:শব্দই তাকে জাগাতে পারে।
যখন সব স্তব্ধ হয় রক্ত, ঘড়ি, তারারা
আর গান গায় না তখন ঈশ্বর তার
চোখ খোলে আর আমরা
ফিরে যাই তার নেই রাজ্যের রাজত্বে ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।