।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য

দুর্গার সোনা, সোনার দুর্গা

মা দুর্গা বাঙালির ঘরের মেয়ে। বাপের বাড়ির অবিভাবকেরা মেয়েকে সোনার গয়নায় সজ্জিত দেখলে খুশি হন। বনেদি বাড়ির অনেকের সুপ্ত সাধের অসাধ্য গয়না তাই তৈরি হতো ‘মায়ের’ নামে। নিজেদের অপূর্ণ সাধের গয়না থাকতো মা দুর্গার অঙ্গে। তাতে যেমন তৃপ্তি থাকতো, থাকতো বিনীত অহংকারও। বিনীত অহংকারের উদাহরণ পরে দিচ্ছি। তবে এমন হয়ে এসেছে বহুকাল থেকেই। সে সব গয়না সারা বছর থাকে ভল্টে, পুজোর সময়েই বাইরে আসে।
মা দুর্গার সোনার গয়নায় সবাইকে টেক্কা দিতো জোড়াসাঁকোর গন্ধবণিক শিবকৃষ্ণ দাঁ পরিবার। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় পুত্র হেমেন্দ্রনাথের ছেলে ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, দেবী মূর্তির জন্য রীতিমতো ফরমায়েশ করে প্যারিস থেকে “আসল হীরামুক্তার খাঁটি সোনার জড়োয়া গহনা করাইয়া আনিয়াছিলেন।” পুরনো কলকাতায় আজও প্রবাদ, “দেবী মর্ত্যে এসে গয়না পরেন জোড়াসাঁকোর শিবকৃষ্ণ দাঁয়ের বাড়িতে।” তবে এখন আর প্যারিস-জার্মানি থেকে আসে না। গয়না তৈরিই আছে, তাই দিয়েই সাজানো হয়। দাঁ বাড়ির মূর্তির গলায় থাকে কুন্দনের চওড়া হার, সীতাহার ও আরও কিছু হার। গলায় থাকে চিক, কানে বড় ঝুমকো আর কান-বালা। হাতে থাকে বালা, কাঁকন, চূড়। উপর হাতে বাজুবন্ধ। আর নানা রকমের আংটি। দেবীর পায়ে থাকে পেট্টি, নূপুর এবং বালা। সিঁথিতে সোনার টায়রা, টিকলি, কপালে টিপ, নাকে নথ। এছাড়া রুপোর জবাফুল ও বেলপাতা তো আছেই। দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী মূর্তির পোশাকের মেখলা আর আঁচল জরির কাজ করা। হাতের অস্ত্রগুলি রুপোর।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে বর্ধমানের সাতগাছিয়া থেকে গোকুলচন্দ্র দাঁ কলকাতায় এসে ব্যবসার সাফল্যে জোড়াসাঁকোতে বসতবাড়ি তৈরি করেন। দুর্গা পুজোর শুরু ১৮৪০-এ। গোকুলচন্দ্রের পুত্র শিবকৃষ্ণর আমলেই ব্যবসার সমৃদ্ধি শীর্ষে পৌঁছায়। বেড়ে যায় পুজোর জাঁকজমক। শিবকৃষ্ণ জার্মানি থেকে ডাকে সোনার তবক ও রাংতা আনাতেন। সেটাই হয়ে যায় ‘ডাকের সাজ’। শেষ বার ১৯৪৭-এ রাংতা এসেছিল জার্মানির। তারই কিছু কলকা এবং ঝালর আজও প্রতিমার চালিতে শোভা পায়। দাঁ বাড়ির নবপত্রিকা গঙ্গাস্নানে যাওয়ার সময় মাথায় উপরে রুপোর ছাতায় থাকে ভেলভেটের দশাবতার। ছাতার গা জুড়ে সলমা জরি ও চুমকির কাজ। পুজোর মূল দেবীঘটও রুপোর। পরিবারিক প্রথা মেনে পুজোর দিনগুলিতে মেয়ে-বউরা সোনার গয়নায় সাজেন। বিজয়ায় বরণের সময় মেয়ে বউদের সোনার নথ ও যাবতীয় সোনার গয়নাই পরা পরিবারিক সুপ্রাচীন ঐতিহ্য।
সোনার গয়না পরা নিয়ে দাঁ বাড়ির সঙ্গে রেষারেষি ছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির। ব্রিটিশ রাণির সুবাদে প্রিন্স দ্বারকানাথের তখন দারুণ প্রতিপত্তি। ঠাকুরবাড়ির পুজো হতো জাঁকজমকের সঙ্গেই। দ্বারকানাথ ভাবলেন, টেক্কা দেবেন প্রতিবেশী দাঁ বাড়িকে। বিসর্জনের আগে দাঁ বাড়ির প্রতিমার গয়না খুলে রাখা হতো। দ্বারকানাথও প্যারিস থেকে বহুমূল্য ফরমায়েশি গয়না আনিয়ে মূর্তি সাজালেন। দশমীর দিন আভিজাত্যের বিনীত অহংকারে দ্বারকানাথের নির্দেশে বহুমূল্য গয়না-সহ দুর্গামূর্তি গঙ্গায় বিসর্জিত হলো। ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, “ভাষাণের সময় সেই গহনাগুলি খুলিয়া রাখিয়া গঙ্গাগর্ভে প্রতিমা বিসর্জন করা হইত। শুনিয়াছি, জোড়াসাঁকোর দ্বারকানাথ ঠাকুরের বাড়ীতেও নকল গহনার পরিবর্তে খাঁটি সোনার গহনায় সাজানো হইত, এবং ভাষাণের সময়ও সে গহনা খুলিয়া লওয়া হইত না – সম্ভবত ভাষাণের নৌকার দাঁড়িমাঝি বা অন্য কর্মচারীরা তাহা খুলিয়া লইত, কিন্তু প্রতিমার গা-সাজানো গহনা আবার ঘুরিয়া ফিরিয়া বাড়িতে উঠিত না।” (কলকাতায় চলাফেরা –সেকালে আর একালে)

সোনার দুর্গা

মা দুর্গা সোনার গয়নার কথা বাদই দিলাম, খাস কলকাতায় এখনও নিরেট সোনার দুর্গা আছে। আরও একটি ছিল কলকাতার উপকণ্ঠে। আবার, সোনার গয়না বিসর্জনের ঘটনাকে তুচ্ছ করে নিরেট সোনার মূর্তি বিসর্জনের ঘটনাও ঘটেছে।
বেহালার চোদ্দ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের কাছে ব্রাহ্মসমাজ রোডে গেলে একটি বিরাট রথ দেখা যায়। সামনের বাড়িটি মুখার্জি বাড়ি। এই বাড়িতে এখনও পুজো হয় দু ফুটের বেশি উচ্চতার সোনার দুর্গা। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মা দুর্গা সারা বছর বিরাজমান। তিন দশকের বেশি নিত্যপুজো করেন পুরোহিত তাপস ঠাকুর চক্রবর্তী। ১৭৭২ সালে এই পুজো শুরু করেন কনৌজের ব্রাহ্মণ শ্রীহর্ষ-এর বংশধর জগৎরাম মুখোপাধ্যায়। পুজোয় শ্বশুরবাড়িতে প্রাপ্য মর্যাদা না পেয়ে জগৎরাম দক্ষযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি না করে শুরু করেন এই পুজো।
যশোর থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে জগৎরাম মুখোপাধ্যায় বেহালায় আসেন এবং সুপ্রাচীন হালদার বংশের অযোধ্যারাম হালদারের কন্যাকে বিবাহ করেন। হালদার পরিবার কুলীন ব্রাহ্মণ জগৎরাম মুখোপাধ্যায়কে জামাই করে বেহালায় প্রচুর জমিজায়গা দিয়ে জগৎরামকে পাকাপাকি বসবাসের ব্যবস্থা করে। একবার অষ্টমীর দিন মামার বাড়িতে (হালদার বাড়ি) জগৎরামের কন্যা জগত্তারিণী আসেন দুর্গাপুজোয় খিচুড়ি ভোগ খেতে। মামাবাড়ির অবজ্ঞায় ক্ষুব্ধ অভুক্ত জগত্তারিনী সোজা বাড়ি ফিরে বাবার কাছে আবদার করেন, এই মুহূর্তে দুর্গাপুজো করতেই হবে। জগৎরাম শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ছিলেন না, কিন্তু মেয়ের জেদের কাছে পরাস্ত হলেন। এক সন্ধ্যার মধ্যে দুর্গাপুজোর জগৎরাম আয়োজন করলেন। এক সন্ধ্যায় তৈরি আটচালা মণ্ডপের নাম সেই থেকেই ‘সাঁঝের আটচালা’। ঘটে-পটে পুজো শুরু হয়েছিল নবমীতে। সেই কারণেই মুখার্জি বাড়ির সোনার দুর্গা পুজোয় আজও সন্ধিপুজো নেই। ঘরে মজুত কলাইয়ের ডাল দিয়ে হয়েছিল খিচুড়ি ভোগ। আজও এই বাড়িতে কলাইয়ের ডালের খিচুড়ি বাধ্যতামূলক। পরের বছর জগৎরামের দুই ছেলে জয়নারায়ণ ও ভবানীচরণের ইচ্ছায় মাটির মূর্তি আসে।
সোনার মূর্তিটি বানা জগতরামের প্রপৌত্র যদুনাথ মুখার্জি, ১৮৬০ সালে। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ঢাকায় ছিলেন অনেকদিন। ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরের মূর্তি অনুকরণে রাজপুতানার শিল্পীদের দিয়ে এই সোনার দুর্গা বানান। সালঙ্কারা সিংহাসনারূঢ় একচালা দুর্গার সঙ্গে আছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিকও। দুর্গার মুখের গড়ন, টানা টানা চোখ, ঘোড়দাবা সিংহ মূর্তিতে পুরাকালীন ছাপ। এক বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ব্রাহ্মসমাজ রোডের মুখার্জি বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় দু ফুটের বেশি উঁচ্চতার নিরেট সোনার দুর্গা। মেয়ে জগত্তারিণীর নামেই মায়ের নাম ‘জগত্তারিণী সোনার দুর্গা’।

উত্তরপাড়ার সোনার দুর্গা

কলকাতার উপকণ্ঠে উত্তরপাড়ার চ্যাটার্জি বাড়িতে একদা পুজো হতো সোনার দুর্গা। উচ্চতায় বেহালার মূর্তির দ্বিগুন, চার ফুট। এই মূর্তিটি শেষ পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তা সত্ত্বেও চুরি হয়ে যায়। অনুমান, লক্ষিন্দরের লোহার বাসরের সামান্য ছিদ্রের মতোই এখানেই গোঁড়ায় গলদ ছিল।
উত্তরপাড়ার চ্যাটার্জি পরিবারের শ্যামতনুর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কলকাতার সাবর্ণ গোত্রীয় লক্ষ্মীকান্ত মজুমদারের বংশের এক কন্যার। সরশুনায় সাবর্ণ জমিদারীর একাংশ বিয়ের যৌতুক পেয়ে শ্যামতনু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। উত্তরপাড়ার বাড়িতে থাকতেন শ্যামতনুর ভাই রামতনু। তাঁর স্মৃতির কিছু সমস্যা ছিল বলে জনশ্রুতি। সেই বাড়িতেই থাকতো সোনার দুর্গা। একদিন ভোরে দেখা গেল, রামতনু নিখোঁজ, নিপাত্তা সোনার দুর্গাও। অনেক অনুসন্ধানেও মূর্তি বা রামতনু কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর সরশুনায় শ্যামতনু চ্যাটার্জির বাড়ির আলাদা করে মাটির মূর্তিতে পুজো শুরু হয়। শ্যামতনুর আট ছেলেকে আলাদা আলাদা করে বাড়ি বানিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। সেই পুজোই এখন আটবাড়ির দুর্গা পুজো নামে পরিচিত। দশ বিঘা দেবোত্তর সম্পত্তি ও একটি পুকুরকে নিয়ে আটবাড়ি ট্রাস্ট থেকে আসে পুজোর খরচ। আগে নিয়ম করে সপ্তমীতে সাতটি, অষ্টমীতে আটটি এবং নবমীতে নয়টি পাঠা এবং একটি ভেড়া ও একটি মোষ বলি হতো। ১৯৮০ থেকে মোষ বলি ও পরে নয়ের দশকের শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর নির্দেশে বলি বন্ধ হয়েছে।

সোনার দুর্গার গঙ্গাযাত্রা

দ্বারকানাথের ‘বিনীত অহংকার’এর জেরে সোনার গয়না-সহ মূর্তি গঙ্গায় বিসর্জন হয়েছিল। তা বলে নিরেট সোনার চার ফুট উঁচু মূর্তি কি কেউ গঙ্গায় ভাসান দেবেন? অবিশ্বাস্য, কিন্তু এটাও হয়েছিল। এমনটাই ঘটিয়েছিলেন শ্যামনগরের ধনাঢ্য ব্যক্তি প্রাণকৃষ্ণ হালদার।
হুগলি জেলার ইতিহাস এবং ‘কলেজ বাড়ির ইতিকথা’ গ্রন্থে সেই প্রাণকৃষ্ণ হালদার ও সেই বাড়ির কথা আছে। মসিঁয়ে পেঁরন নামে এক ফরাসী হুগলি শহরে এক প্রাসাদোপম বাড়ি বানিয়েছিলেন। তিনি দেশে ফেরার আগে প্রাসাদটি বিক্রির কথা ভাবেন। তখন এই বাড়ি কেনার মতো সম্পদ কজনেরই বা আছে! সম্ভাব্য ক্রেতার খোঁজে তিনি বিজ্ঞাপন দেন ‘কলকাতা গেজেট’-এ। বিজ্ঞাপন দেখে এই বাড়ি কেনেন প্রাণকৃষ্ণ বাবু, যার আসল বাড়ি গঙ্গার অপর পাড়ে। শুরুতে কখনও সখনও এ-বাড়িতে থাকতেন, পরে এখানে স্থায়ীভাবে বাস করা শুরু করেন। সবাই জানতো, তাঁর তেজারতি-সহ নানা ব্যবসা আছে। মাঝে মাঝে বাড়িতে খানাপিনার আসরে নিমন্ত্রিত হতেন ফরাসী, ইংরেজ রাজপুরুষরা, বাইজীরা আসতেন মনোরঞ্জনে।
একবার তিনি ধুমধাম করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করলেন। অর্ডার দিয়ে বানালেন চার ফুট উচ্চতার সোনার দুর্গা। বারাণসী থেকে বাজরায় সেরা বাইজিদের আনালেন। ইংরেজ, ফরাসী রাজ কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা নিমন্ত্রিত। চার দিন ধরে মোচ্ছবে অঢেল মাংসের সঙ্গে মদের স্রোত বইলো। সবাই দেখলেন, বাবু প্রাণকৃষ্ণ ১০ টাকার নোটে তামাক ভরে সিগারেট খাচ্ছেন! ভাবা যায়! সেই সময় ১০ টাকায় একজন গরিবের মাস চলে যায়!
পুজোর শেষে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে সেই মূর্তি বিসর্জিত হল গঙ্গায়!
প্রাণকৃষ্ণের এহেন বাবুয়ানায় সন্দেহ হল চুচুড়ার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এত টাকা, এত খরচের উৎস কী? মহার্ঘ্য সোনার মূর্তি কেউ জলে ফেলে? কোম্পানি কর্তারা যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিরাট বাহিনী নিয়ে ঘিরে ফেললো সেই বাড়ি। তল্লাশিতে পাওয়া গেল, বাড়ির মাটির নিচের একটি ঘরে নকল নোট ছাপার যন্ত্র। জাল নোট ছাপাতেন প্রাণকৃষ্ণ! গ্রেফতার করা হল। বাজেয়াপ্ত হলো সব প্রমাণ।
বিচারে প্রাণকৃষ্ণের ১৪ বছর কারাদণ্ড ও বিরাট অঙ্কের জরিমানা হল। সেই জরিমানা আর কীকরে দেবেন! চুঁচুড়ার অবসরপ্রাপ্ত জেলা-জজ ব্রজেন্দ্রকুমার শীলের কাছে বাড়িটি বন্ধক রেখে টাকা ধার করে জরিমানা মেটালেন। কিন্তু। ব্রজেন শীলের ঋণ মেতাতে ব্যর্থ হলেন প্রাণকৃষ্ণ। ফলে আদালতের মাধ্যমে ১৮৩৪ সালে বাড়িটি বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে ব্রজেন শীল নিজেই কিনে নেন। সেই বাড়িটিই ১৮৩৭ সালে সেই সময়ে ২০,০০০ টাকায় কিনে নেয় ভাই হাজি মহম্মদ মহসীনের দিদি মুন্নি বেগমের টাকায় তৈরি হাজি মহম্মদ মহসীন ট্রাস্ট। সেখানেই গড়ে ওঠে হাজি মহম্মদ মহসীন কলেজ। সোনার টুকরো অনেক কৃতি ছাত্র সৃষ্টির কারখানা।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।