শুট্যিং বেশ কিছুটা কলকাতায় হবে. আজ ঝোরাদের গন্তব্য অছিপুর. সেই কবে আৎসু এসেছিলেন চিনির ব্যবসা করতে এই দেশে. বজবজে গঙ্গার পারে তাঁর নৌকা নোঙর ফেলেছিল. ওয়ারেন হেস্টিংস অনুমতি দিয়েছিলেন আৎসুকে চিনির কল করতে. আজ ঝোরাদের টিম সেখানেই উপস্থিত. অছিপুর নামটা সম্ভবত আৎসুর নামের থেকেই এসেছে. অপূর্ব আজ খুব উত্তেজিত. অছিপুরে এসে সে টগবগ করে উত্তেজনায় ফুটছে. হাতে হাতে প্রোডাকশন টিমকে সাহায্য করছে. অছিপুরের কবরস্থানে বেশ কিছুটা সময় কাটাতে হল. ভয়ংকর ওলাউঠায় আক্রান্ত হয়েছিল অছিপুর. চীনে সমাজ প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে বসেছিল. তারপর তাদের সরে যেতে হয় ট্যাংরাতে. সেইখানেই চামড়ার কারখানা ও বাঙালির অতি প্রিয় চীনে খানাপিনার খাজানা.
দু চারজনের সঙ্গে স্ক্রোল নিয়ে কথা বলেছে ঝোরা ও অপূর্ব, মেই লিং যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন. সকলের বাড়িতেই স্ক্রোলের সংগ্রহ ছিল কখনো না কখনো. অপূর্ব ইতিমধ্যে দুজনের সঙ্গে বেশ ভাব জমিয়ে ফেলেছে এদের নাম ‘ কিউয়ান লি টং ও’ ‘ মেই লি টং’. এই দম্পতির কিউরিওর ব্যবসা আছে. এদের পিতৃপুরুষেরা বহুযুগ কলকাতায় ছিলেন. পরে ব্যাবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে যান, এদের জন্ম কর্ম কলকাতায়, এখনো ফিরে যাবার কথা ভাবেন নি. এই টং দম্পতি জানালেন সেই বিখ্যাত তথাগতর কথা. সিংহাসনে আসীন তথাগত, দু পাশে দুটি রক্তবর্ণ ড্রাগণ. ড্রাগণদের চোখে দুটি লাল হীরে বা চুণী বসানো. সিংহাসনের নীচে দুইটি হীরে, মাঝখানে একটি হীরে, তথাগতর কপালে আরেকটি হীরে. এই মূর্তি বেশ কয়েজন চীনা অভিযাত্রীদের সাথে এ দেশে এসেছিল. এই মূর্তি তৈরি করত মিং ডাইনাষ্টির দক্ষ কারিগরেরা. সম্রাট ইয়াং লো তার কিছু বিশ্বস্ত লোকজনকে পাঠিয়েছিলেন নতুন দেশ খুঁজতে, এফের সঙ্গে ছিল স্ক্রোল এবং মূর্তি.
এই তথাগতর কথা বহু স্ক্রোলে পাওয়া যায়.
আসল মূর্তিগুলোর দাম কয়েক মিলিয়ন ডলার. টং দম্পতির কাছে কিছু নকল সংস্করন আছে. তাদের দাম কিছু কম নয়. আসল মূর্তি টিবেটিয়ান স্কুল অফ এন্থ্রপোলজির লোকজনেরা মনাষ্ট্রিতে দেখেছেন, সেই আসল মূর্তির নকল সংস্করন বাজারে আনা হচ্ছে. কয়েকজন ভাগ্যবানের মধ্যে অপূর্ব একজন যে সেই অসামান্য শিল্পকর্মটি নিজের চোখে দেখেছে. আর এই টং দম্পতির কাছেই সেরকম কয়েকটি নকল মূর্তি প্রথম এসেছে বাজারে বিক্রীর জন্য.