সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব – ২৭)

আরশি কথা

তথাগতর মূর্তির কথা সকলেই বলেছে. স্ক্রোলের গায়ে লেখা মায়ারাজ্য ও তথাগতর মূর্তির কথা সকলেই জানে যারা স্ক্রোলের গল্পের খোঁজ রাখেন. তবে সেদিন অপূর্ব যে বলল মেই লিং এর বাড়ীতে বসে বলল এই তথাগতর মূর্তির খোঁজ কেউ পায় নি,অথচ অপূর্বর কথা শুনে মনে হল এই আসল মূর্তি দেখার সৌভাগ্য তাঁর হয়েছে. ঝোরা সেদিন এসব চিন্তা করছিল বাড়ী ফিরে. খেতে বসেও একই কথা চিন্তা করছিল ঝোরা.
‘মা ও মা’ মেয়ের ডাকে সম্বিত ফেরে ঝোরার. ‘বল’. ‘শুট্যিং কেমন এগোচ্ছে?’ ‘ভালোই, তবে…’
‘কি ভাবছ বলত?’. ‘ অপূর্ব সেদিন মেই লিং এর বাড়ীতে বসে বলল স্ক্রোলের গায়ের তথাগতর খোঁজ কেউ পায় নি. কিন্তু ছেলেটা সেদিন অছিপুরে শুট্যিং এর সময় টং দম্পতিকে মনে হয় বলছিল, যে সে নিজের চোখে এই তথাগতর আসল মূর্তি টিবেটিয়ান স্কুল অফ এন্থ্রপোলজিতে দেখেছে. ব্যাপারটা কেমন রহস্যজনক. কয়েক কোটি মিলিয়ন ডলার যে মূর্তির দাম উঠেছে, সেটা নিজের চোখে যে দেখেছে, যে স্ক্রোলের গায়ে চাইনিস ভাষা পড়তে পারে, মায়ারাজ্যের কথাও যে জানে তাঁর তো নিরাপত্তা সংশয় হতেই পারে. ছেলেটাকে কেউ নজর করতেই পারে. ‘উরিব্বাস মা তুমি তো রহস্য উপন্যাস পড়ে পড়ে একেবারে রিয়্যাল লাইফে মিষ্ট্রির সাথে জড়িয়ে পড়ছ’ আকাশলীনা বলে.
‘তোর মা কিন্তু ভুল বলে নি আকাশ. ছেলেটার লাইফ রিস্কের কথাটা উড়িয়ে দেবার মত নয় কিন্তু. যে এত কিছুর সন্ধান জানে সে কিন্তু দুস্কৃতীদের লক্ষ্য হতেই পারে’. স্থিতধী বলেন. ‘তা তোমার অপূর্বর পুলিশ নিরাপত্তার কথা ভাবা কিন্তু ওর ইন্সটিউটের উচিত. একবার জিজ্ঞেস কর’ . ‘এমন ভাবের ঘোরে থাকে, বিশেষ কিছু জিজ্ঞেস করা যায় না’. ঝোরা বলে.
‘তা কালকে কোথায় শুট্যিং তোমাদের? ‘ আকাশলীনা জিজ্ঞেস করে. ‘কলকাতার কাজ শেষ সামনের সপ্তাহে সিকিম যাওয়া’, ঝোরা উত্তর দেয়. ‘তুমি আবার কোন রহস্যে জড়িয়ে যাবে নাকি মা?’
‘না রে বাবা, আমি তো কোন মিলিয়ান ডলার মূল্যের তথাগতর খোঁজ জানি না, স্ক্রোলে সাংকেতিক ভাষা তাও আবার চৈনিক, মিরর ইমেজে লেখা. যে কথা জাদু আরশীতে ফেলে পড়তে হয়, সে যে কি কঠিন কাজ’. ঝোরা বলে.
‘সিকিম যাচ্ছ যাও তবে রহস্য নিয়ে বেশি জড়িয়ে পড় না’ স্থিতধির কপালে চিন্তার ভাজ. ‘না, না, ছাপোষা স্ক্রিপ্ট রাইটারের জীবন নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না’.
ঝোরা ঘরের মানুষদের কাছে লুকিয়ে রাখে তাঁর নিজের আরশীর ভিতর মায়ারাজ্যে অভিজ্ঞতার কথা. ঝোরার ঘরেও মায়া আরশী রয়েছে শুধু ঝোরাই জানুক.

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।