ফোনটা কেটে দেয় আকাশ. ফোন রেখে ঝুম হয়ে বসে থাকে ঝোরা. আঙুলের ডগায় চিনচিনে ব্যাথা. আঙুলটা কেটে গেছে. কাঁচ দিয়ে কেটে গেলে যেমন হয় ঠিক তেমন. ওষুধের বাক্স হাতড়ে ব্যান্ড এইড লাগায় ঝোরা. আয়নার দিকে তাকায়, আয়নার গর্ভে মায়াময় ছায়াময় আলো. স্বচ্ছতোয়াকে দেখা যাচ্ছে না. ঝোরাদের বাগানের ছায়া দেখা যাচ্ছে শুধু. দরজা বন্ধ করে না ঝোরা. বাইরের গেটে তালা দিয়ে আসে. বারান্দার কোলাপসিবেল গেট. কাঁচের দরজাটাও বন্ধ করে দেয়. বন্ধ দরজার কাচের উপরে বাগানের ছায়া পড়ে. আয়না জূড়ে বাগানের ছায়া. দুইদিকে আরশি. আর আরশির মাঝখানে ঝোরা. দরজার আরশি আর দেয়ালের আরশি পড়ে নিতে চায় ঝোরাকে. না আজ আর আরশিতে মন দেবে না ঝোরা, বাস্তবে ফেরা যাক. রান্নাঘরে ঢুকে কাঁচের প্লেট নামায়. প্রেসারে আহারাদি গরম বসায়. ডাল সেদ্ধ, ভাত, সব্জি সেদ্ধ. মাখন বার করে ফ্রিজ থেকে. টি. ভি. চালায় ঝোরা. বাস্তবে ফিরতেই হবে. এই আরশির নেশা সর্বনাশী হয়ে দাঁড়াতে পারে. বাস্তবের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হওয়াই ভালো সম্পূর্ণ. আরশির ভিতর আজ প্রচুর স্নায়ু যুদ্ধ চলেছে. টি. ভি. দেখতে দেখতে খাওয়া সারে ঝোরা. তারপর লেখার টেবিলে বসে গিয়ে. শব্দরা আসে. কখনো জলপ্রপাতের মত, কখনো বা বৃষ্টির মত. যখন মুখ তোলে বাইরে গোধুলির কমলা, হলদেটে আলো. বাগানে ভাসছে নরম আলোর বিকেল.
নির্ভার লাগে ঝোরার. ছাদে যাবে? না থাক. পর্দা সরিয়ে ঝোরা দেখে তিরতির করে ফুরিয়ে যাচ্ছে আরেকটি দিন. আকাশে গোল সাদা পিরিচের মত চাঁদ. সূর্যের অস্তমিত আভাতে সে তখনো উজ্জ্বল নয়. সবটা আলো শুষে নিতে থাকে ঝোরা সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে.