অংহকারের চাদরে ঢাকা পড়ে অথবা তুচ্ছতাচ্ছিল্যে করে কিংবা না বুঝে কতো সদ্য ফোটা ফুলের কলিজায় ঝাঁকুনি দিয়েছি।
ঝাঁকুনি খেয়ে সহ্য করতে না পেরে কতো ফুলের পাপড়ি ঝরেছে মাটিতে !
সদ্য ফোটা ফুল যেমন কচি তেমন
তাঁদের মন, সে মনে আমি বিষ ঢেলেছি !
বিষের যন্ত্রণায় ছটফট করেছ, কতো ফুলের রং বিবর্ণ হয়ে গেছে আমি ফিরেও চাইনি !
একদা একটি কালো রঙের ফুল আমাকে ইশারা করলো কাছে যাবার। আমি দেখে না দেখার ভান করে চলে আসবো এমন সময় তড়িঘড়ি করে আমার কাছে এসে হাতটা ধরে আবেগী একটা শ্বাস ফেলে চোখের কোণে টলটল জল নিয়ে বললো আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি তোমাকে আমার সৌরভ বিলিয়ে দিতে চাই জনমভর !
আমার হাসি পেলো, হাসতে হাসতে বললাম তোমার যে গায়ের রং ঘরে গিয়ে আয়নায় ভালো করে দেখো ভুলেও আর আসবেনা কাছে বলবেনা ভালবাসো !
সাদা গোলাপ, লাল গোলাপ, রজনীগন্ধা কতো চোখ জুড়ানো পুষ্প এলো আর গেলো কারো সুভাষ নিলাম না মনে আর তুমি তো কালো !
চলে যেতে যেতে পিছন ফিরে একবার শুধু দেখলাম অন্ধকার ফুল চোখের জলে সাগর বানিয়ে সে সাগরে হাবুড়ুবু খাচ্ছে আর বলছে আমি আর কিছু চাইবো না তোমার কাছে শুধু একবার বলো তুমি আমাকে ভালবাস শুধু একবার বলো তবেই আমি পুরো যৌবন কাটিয়ে দিবো তোমার তপস্যাতে !
আমি তবুও কিছু না বলে চলে যাচ্ছি তো যাচ্ছি কিছু বলবো না জানি, অংহকারে যে আমার গা হয়েছে ভারি !
এবার সে চিৎকার করে বলতে লাগলো তাহলে তোমাকে ভালবাসার অধিকার টুকু দিয়ে যাও আমায়, আমি করুণার চাহনি চাহিয়া চলে এলাম হনহন করে তাঁকে ভাসিয়ে দিয়ে চোখের জলে !
একবার নাম না জানা পথে ফোটা একটি ফুল বাতাসের সাথে দোলতে দোলতে আমার গায়ে এসে ধাক্কা খেলো আমি খুব বিরক্ত হয়ে
আঘাত করলাম ফুলটার ঠিক বুকের মাঝখানে, বললাম তোর সাহস তো কম নয় আমাকে আটকাতে চাস মনে !
মর গিয়ে দূরে তোর নাম নেই পরিচয় দেবার মতো কিছুই নেই তোকে তো দেখলেই আমার রাগ ধরে, যা মর গিয়ে, যা মর গিয়ে দূরে !
তারপর হঠাৎ একদিন একটি ভিনদেশি ধবধবে সাদা অর্ধ ফোটা ফুল আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে
নির্ভয়ে ভরাট কণ্ঠে বললো ভালো লাগে তাই ভালবাসি।
আর আমি কিছু না ভেবে তার গায়ের একটি ঝকঝকে পাপড়ি সজোরে টান দিয়ে তুলে দু-হাতের তালুতে নিয়ে থেঁতলে দিলাম !
ফুলটা আমাকে পাষাণ বলে চোখ কচলাতে কচলাতে চলে গেলো ।