কবিতায় বলরুমে জয়ীতা দাস

আকাঙ্খার যবনিকা

একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে!
শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া স্কিৎসোফ্রনিয়ার গন্ধরা মিলিয়ে যাবে চৌরঙ্গীর রেলিং ধরে।
আর একটা ‘তুই’ বলা হাত ‘তুমি’তে উত্তলিত হয়ে যাবে।
প্রেম পাবে।
হয়ত ভালোবাসার অনুগামী হবে।
সত্যি বলতে, হয়ত সবই ঠিক হয়ে যাবে! কৃষ্ণচূড়ার গোড়ায় বসে যে চোখের জল
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করে হিমবাহ হয়েছিল;
তার হিসেবটা বোধহয় চেকার বোর্ডের লেখা হবে।
তবুও হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে!
মুহূর্তে বিকেল হওয়া সেই মস্ত মাঠটা
যখন কলোনী মোড় থেকে ঘাসফড়িং ডেকে আনবে,
তখনও সব ঠিক হতে বাধ্য।
যখন ভগ্নাংশের পুরোভাগই ঠিক হয়ে যাবে;
তখন তুমি আমি বাইপাসের রোড থেকে লেন পেরিয়ে ট্রামলাইনের সমান্তরাল আঁকব।
মুখোমুখি নিঃশ্বাসের ঢিল ছোঁড়া নৌকাখানি ডুবে যাবে_
আর আমাদের মিলন হবে না।
সুপ্রভাতের কোনো এক সকালে উঠে দেখব
হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে..!
তোমার হাতে ফুটে যাওয়া বেলের কাঁটা-
আমার শরীর ক্ষয়ের কারণ হবে।
দেড়শো কিমি হেঁটে যে বুক খোলা গিটারটা
নদীর পা ছুঁয়ে ছিল,
সেখানে এখন ভরা সুবর্ণলতা।
তুমিও বিস্তর আনমনা হয়ে ভুলেই গেছ
আমার মনও হৈমবতী হতে চেয়েছিল।
তবুও জানি, একদিন সমস্ত কাঁচাপাকা আস্তরণ জুড়ে সব ঠিক হয়ে যাবে!
ঠিক আগের মতন।
নবমী নিশি পেরিয়ে রাঢ়ী কাকভোরে
ক্লান্ত কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে হয়ত আমি আর টাল-মাতাল হব না!
তবুও দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হবে আমার ঘরে ফেরা।
কারণ, সব ঠিক হয়ে যাবে!
একদিন হয়ত চারভাঁজ পরিচয়পত্রের পাতাটাও মিলবে সঙ্গে উজ্জ্বল দস্তাখত।
কিন্তু ভালোবাসার উপহার কি শুধু ওইটুকু?..
হয়ত তুমি বুঝবে ডায়েরির ২রা নভেম্বরের পাতা জু্ড়ে আসলে কি লেখা ছিল….
হয়ত সবাই বুঝবে!
হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে!
সবকিছু ঠিক হয়েই যায়!
সব কিছুকে ঠিক হতে হয়।
না হলে সমাজ ভুলগুলোকে বড় করে তর্জনী ওচায়।
চাবুক তুলে ক্ষতবিক্ষত করে
দেওয়াল-প্রকোষ্ঠ-অন্দরমহল।
রাগেশ্রী রাগে তাল মিলিয়ে রাত্রিযাপন চলে।
জেলো ফ্ল্যাশব্যাকের লেন্সে সবকিছু blur হয়ে যায়..
কিন্তু, আমি জানি একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যায়!
ঠিক না হয়ে গেলেও; সবকিছুকে ঠিক করে নিতে হয়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।