• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে কৌশিক চক্রবর্ত্তী (পর্ব – ২)

কলকাতার ছড়া

১৭৫৬ সালে কলকাতা আক্রমণ করলেন নবাব সিরাজদ্দৌলা। আজকের কলকাতার মাটিতেই তিন তিনটি যুদ্ধের পরে এই শহর দখল করে নবাব তখন জাঁকিয়ে বসলেন কলকাতায়। যদিও নিজে থাকতেন মুর্শিদাবাদের কেল্লা নিজামত অঞ্চলে অবস্থিত হীরাঝিল প্রাসাদে। কিন্তু অধিকার কায়েম রাখতে ইংরেজদের দূর্গ ফোর্ট উইলিয়ামে বসিয়ে এসেছিলেন ঘনিষ্ঠ মানিকচাঁদকে। ইংরেজরা পরিবার সমেত সদলবলে পালিয়ে বাঁচলেন ফলতায়। স্বয়ং ওয়ারেন হেস্টিংস নিজেও সেখানে লুকিয়ে ছিলেন বহুদিন। এরপর খবর যায় মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীতে। সেখান থেকে কোম্পানীর তরফে রণতরী ও কামান দিয়ে কলকাতা পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওয়াটসন আর ক্লাইভকে। জাহাজ নিজে ডায়মন্ড হারবার দিয়ে উপকূলে প্রবেশ করলেন তাঁরা। সেখানেই হয়ে গেল একপ্রস্ত যুদ্ধ। তারপর ধীরে ধীরে গঙ্গা ধরে এগিয়ে এলেন কলকাতার দিকে। আবার দখল নিলেন অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তৈরি করা ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গের। এরপরই ক্লাইভের ইচ্ছেয় নবাব ও কোম্পানীর মধ্যে সাক্ষরিত হয়েছিল বিখ্যাত সেই আলিনগরের সন্ধি। ও, কথাপ্রসঙ্গে বলে রাখি। কলকাতা দখল করবার পর নবাব সিরাজ তাঁর দাদু আলিবর্দীর নামানুসারে কলকাতার নাম রাখেন আলিনগর। যদিও মীরজাফরকে নবাব বানিয়ে ক্লাইভ পুনরায় কাগজেকলমে নাম বদলে কলকাতা নাম ফিরিয়ে আনেন আবার। হাজার হোক এই ‘কলকাতা’ ছিল কোম্পানীর অতি সাধের একটি নাম। যাই হোক, এই ছিল কলকাতায় ক্লাইভের প্রথম কলকাতা আগমনের কারণ। কিন্তু এরপর আর ক্লাইভ কলকাতা ছাড়তে পারেন নি। নিজের দেশে ফিরে যাবার আগে পর্যন্ত দমদমে নিজের প্রাসাদেই তিনি দিন কাটাতেন। লর্ড ক্লাইভের কলকাতায় অবস্থানকালে একটি পুত্র হয়। মুর্শিদাবাদ থেকে নবাব মীরজাফর শিশুপুত্রের জন্য একটি মুসলমানী দাই দিয়েছিলেন। সে শিশুকে কোলে করে যখন ঘুম পাড়াত, তখন বলত-

“দেখো মেরি জান কোম্পানি নিশান,
বিবি গৈয়ে দমদমা উড়ি হৈ নিশান,
বড়া সাহেব ছোটা সাহেব বঙ্কা কাপ্তেন,
দেখো মেরি জান, লিয়া হৈ নিশান |”
ক্রমশ…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।