সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে কুণাল রায় (পর্ব – ৭)

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

দ্বিতীয় অধ্যায় তৃতীয় ভাগ: সাংখ্য যোগ

শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন যে এই আত্মাকে কেউ অদ্ভুত বলেন, কেউ বিবরণ দেন, কেউ বা শ্রবণ করেন। কিন্তু আত্মার প্রকৃতি কেউ জানতে সক্ষম হন না। তিনি আরও বললেন যে এই আত্মা সকলের দেহে বর্তমান। তাই কোন জীব ও প্রাণীর জন্য তাঁর শোক করা মানায় না।
অন্যদিকে স্বধর্মের কথা ভাবলেও অর্জুনের দুঃখ করা উচিত নয়। এর একমাত্র কারণ: ক্ষত্রিয়ের জন্য ধর্মযুদ্ধের চেয়ে আর কিছু মঙ্গলজনক হতেই পারে না। একমাত্র একজন ভাগ্যবান ক্ষত্রিয়ই এই ধরণের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এই প্রকার যুদ্ধ স্বর্গের দ্বার উন্মোচিত করে। এবং অর্জুন যদি আপন ধর্ম পালন না করেন, তাহলে সুনামের পথ পরিত্যাগ করে, পাপভাগী হতে হবে।
এছাড়া সকলে তাঁর নিন্দা করবে। বীর এবং মানী ব্যক্তিদের জন্য নিন্দা মৃত্যুর চেয়েও এক ভয়ংকর অনুভূতি। মহারথীরা মনে করবেন যে অর্জুন ভয় পেয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিদায় নিয়েছেন। সম্মানের জায়গায় নিন্দা ও উপহাসের পাত্র হতে হবে। এর সকল কিছুর থেকে দুঃখজনক আর কি বা হতে পারে?
তাই স্বর্গবাসই হোক বা পার্থিব সুখই হোক, যুদ্ধের জন্য অর্জুনকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে হবেই। এর কোন বিকল্প নেই।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই সকল তত্ত্বজ্ঞানের উপদেশ দিয়ে অর্জুনকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করলেন। যেই রকম কর্মযোগের কথা শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন, সেই রূপ তিনি কর্ম করলে, কোনোভাবেই পাপভাগী হতে হবে না। সকল প্রকার ভয় ও সংশয় থেকে মুক্তি প্রদান করে এই সাংখ্য তত্ত্ব।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।