মুক্তি পিয়াসী মন চায় অবাধ বিচরণ
বাঁধাধরা একঘেয়েমি ভালো লাগে না তার,
বিচিত্র স্বাদের আনন্দে নিত্য বৈচিত্র্য খোঁজে
‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ বিচিত্র রূপের হার।
পারিবারিক সামাজিক ধর্মীয় ঋতুর পার্বণ
পাঁপড়ি মেলে আধ্যাত্মিকতা নৈতিকতা,
মানবিক ঐক্যের আদর্শে ঘটে চিত্তশুদ্ধি
জীবনের নিয়ন্ত্রণে তাই পার্বণের সার্থকতা।
মৃত্তিকার উর্বরতায় অফুরন্ত শস্য প্রাচুর্যে ছিল
জীবন সংগ্রামের অনুপস্থিতিতে উদ্বৃত্ত অবকাশ বারো মাসে তেরো পার্বণে সৃজনশীল বাঙালির
সুষম জীবন ছন্দের আনন্দঘন অনবদ্য প্রকাশ।
আবর্তনের চক্র পথে ষড়ঋতুর পরপর আগমন
তারি সুরে সুর মিলিয়ে প্রাণশক্তির স্বতঃস্ফূর্ততা,
বাঙালি মেতে ওঠে আত্মপ্রকাশের উল্লাসে
ধ্বংসস্তূপেও দেখা যায় নিত্য নতুন উৎসবপ্রিয়তা।
নানা পাল-পার্বণে অন্তরের প্রথম প্রতিষ্ঠা
সামাজিক পারিবারিক জীবন হয় শুচিসুন্দর,
গতানুগতিক সংকীর্ণ জীবন পায় বৃহতের আস্বাদ
সংস্কৃতি কৃষ্টি পরিচয়ে পার্বণ মিলনানন্দ মুখর
সময়ের তালে পার্বণেরও আজ নানা রূপান্তর
আঞ্চলিক উৎসবে এসেছে বেড়া ভাঙ্গা জোয়ার,
কোথাও পার্বণ মিলেছে নতুনের কলেবরে
কোথাও নবীন-প্রবীণে মিলে নতুন আকার।
পহেলা বৈশাখে পালন নববর্ষ হালখাতা
গন্ধেশ্বরী সাবিত্রী ব্রত বা মেয়েদের ব্রত কথা,
জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাইষষ্ঠী বা বর্ষামঙ্গল
আষাঢ়ে দশহরা রথযাত্রা অম্বুবাচী প্রথা।
জলভরা শ্রাবণে নাগপঞ্চমী মনসা পূজা
ঝুলন নন্দোৎসব জন্মাষ্টমী বিশ্বকর্মা,
আশ্বিনে বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারদীয়া দুর্গোৎসব
কার্তিকে পূজা জগদ্ধাত্রী লক্ষ্মী কার্তিক শ্যামা।
অঘ্রাণে ইতু নবান্ন সবচেয়ে বড় রাসযাত্রা
পৌষে পল্লীর সামাজিক নানা পৌষ পার্বণ,
মাঘ মাসে জনপ্রিয় সবচেয়ে সরস্বতী পূজা
ফাল্গুনে আবির কুমকুমে প্রাণসত্তার জাগরন।
চৈত্রের বড় পূজা বাসন্তী অন্নপূর্ণা চৈত্র সংক্রান্তি
জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবস 26 শে জানুয়ারী,
প্রজাতন্ত্র দিবস 25 শে বৈশাখ কবিগুরুর জন্মদিন
জাতীয় উৎসবের মর্যাদায় 23 শে জানুয়ারী।