T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় মৃণালেন্দু দাশ
by
·
Published
· Updated
অগাধ স্নেহের কৃষ্ণচূড়া ও রবীন্দ্রনাথ
একটু এগিয়ে গেলে অগাধ স্নেহের কৃষ্ণচূড়া
তার রক্তলাল ছাতা মেলে দাঁড়িয়ে আছে এই খর বৈশাখে
কাছেই রবীন্দ্রনাথের বসত বাড়ি ,
তাঁর স্মৃতিবিজরিত পুনশ্চ ,উদীচি ,শ্যামলী ও উদয়ন
অসাধারণ গঠনশৈলীর কবির সৃষ্টির আতুঁরঘর —
পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তাঁর স্নেহের পরশ
এসে লাগছিল আজকে আমার গায় , স্পষ্ট দেখতে পেলুম
পুনশ্চ’র বারান্দায় চেয়ারে বসে তিনি কবিতা লিখছেন —
একরাশ শুভ্রকেশ ও একমুখ সাদা দাঁড়ির
গেরুয়া আলখাল্লার রবীন্দ্রনাথ ,মনে হচ্ছিল —
জবাকুসম সঙ্কাশং সূর্য যার ছটায় উজ্জ্বল হয়ে আছে
দেড়শতবর্ষ পরেও বাংলাসাহিত্য —
আমার গর্ব , আমি সেই বাংলাভাষায় আজ কবিতা লিখছি
অদূরে বিশ্বকবি পুনশ্চ থেকে উদীচির বারান্দায় এসে
দাঁড়ালেন আর ক্রমাগত হাত নাড়ছেন
আমার তখন কি যে আহ্লাদ হচ্ছিল বলে বোঝাবার নয় ,
দেখছি , মাটিতে ছড়িয়ে আছে অজস্র কৃষ্ণচূড়া….
আমি সেই কৃষ্ণচূড়া কুড়িয়ে কুড়িয়ে
সযত্নে তুলে রাখছি কবির প্রতিটি
ঘরে —
এ দৃশ্যে দুটিহাত পিছনে রেখে স্মিত হাসছেন গুরুদেব
আর পায়চারি করছেন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে —
এ-সময় —
সহজপাঠের নতুন অলংকরণ হাতে নন্দলাল বসু ,
দেখে — শিশুর মতো উচ্ছল হয়ে উঠলেন কবি
খুব ভালো লাগছিল , এত কাছ থেকে তাঁকে এতদিন পর কাছের একজন মনে হচ্ছিল বলে ,
কলাভবন থেকে ভেসে আসছিল রবীন্দ্রগান—
মোহরদির গলায়ঃ আমার পরাণ যাহা চায়, তুমি তাই….
রামকিঙ্কর ছেনি হাতুড়ি ঠুকে কংক্রিটৈ নির্মাণ করছেন
দীর্ঘাঙ্গী এক দক্ষিনী নারীমূর্তি , তার অভিব্যাক্তি —
নিখুঁত নারীত্বের আত্মমর্যদাবোধ ,
তিনি জয়া আপ্পাস্বামী
মুগ্ধ কবি , স্বয়ং
উদীচির বারান্দা পেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছেন নীচে
আর সস্নেহে রামকিঙ্করকে জড়িয়ে ধরছেন —
এক হাত আমার মাথায়
এ-এক বিরল দৃশ্য , অবাক বিস্ময়ে দেখি আশ্চর্য ভাস্কর্য
রামকিঙ্কর ! রবীন্দ্রনাথ ! প্রাকৃতিক —
অবশ্যই অতি প্রাকৃতিক