অফিসে ছুটি নিয়ে বোলপুর গেছিলাম সেবার ,এই দিনে।
২০১৭ সাল এর কথা।
হোটেলে পৌঁছালাম –
তখন প্রায় রাত দশটা।
সর্বসাকুল্যে ছুটি জুটেছিল কপালে সাড়ে পাঁচ দিন।
কর্পোরেট লাইফে এটাই অনেক ।
ফিরে খুব ক্লান্ত লাগছিল ,
ঘুমিয়ে গেছিলাম।
পরের দিন ঘুম কাটলো মাদলের শব্দে।
হালকা রোদ্দুর আবছা কুয়াশা মেখে
জানালার কাঁচ ভেদ করে
চোখে এসে পরছিল।
আলসেমি গায়ে জড়িয়ে
খুললাম দরজার শিকলটা।
একটা গরম নীল রঙের শাল নিয়ে বেরিয়ে এলাম বাইরে ।
দেখলাম দুটি মেয়ে নাচছে সেই তালে।
অদ্ভুত ভালো লাগার একটা টান আছে এই ছন্দে ।
মনে হয়, জানি শিকড়ের সুর।
অনেকক্ষন কাটলো এই ভাবেই।
কখন ওদের সঙ্গে আমিও পা মিলিয়েছিলাম কে জানে!
একসঙ্গে চা খেলাম চারজনে তারপর।
একটা প্ল্যান করলাম
ঐ বাদক পুরুষটির সাথে
কথা হল যে –
সে এই আশেপাশের সব গ্রাম
আমায় ঘুরিয়ে দেখাবে এই ক’দিন।
আমি তেমন ভাবে গ্রাম দেখি নি।
হ্যাঁ দেখেছি ,ছুটন্ত বাস- ট্রেনের জানালার এপার থেকে আর
বাকিটা ছবিতে।
দুদিন ওর সাথে কত যে ঘুরেছি বলতে পারি না।
গ্রাম এত সহজ??
এর আগে বুঝতামই না।
এত সুন্দর ধান ক্ষেত , বিস্তৃত কোপাই নদী।
কালো মেয়ের মধুর চাউনি , এত কঠিন আয়ের পথ!
তবুও এত জৌলুস কালো চামড়াতে?
এত গন্ধ রাঙা ধূলোয় !!!
মোহন না থাকলে বুঝতাম না ।
মোহন ঐ আদিবাসী লোকটি
যে ছিল আমার ট্যুর গাইড।
তৃতীয় দিনে আমার শরীর টা খারাপ করছিল ।
শহুরে শরীর আফটার অল।
একটু ধকলেই রেস্ট চায়।
সেদিন মোহন কে বললাম আজ বেরোব না ।
তাকে চলে যেতে বললেও সে গররাজি হল।
বললাম বেশ বসো;
তাহলে গল্প বলো শুনি।
কত্ত গল্প , একনাগাড়ে বলে চলেছে…
সুন্দর বীরভূমের টান কথনে , গ্রাম্য নিকটতা, সারল্য অথচ শক্ত পুরুষ শরীর।
ক্রমে কেমন আস্তে আস্তে
ভালো লাগায় বিভোর হয়ে যেতে লাগলাম আমি।
বুঝতে পেরেও নিজের লাগাম রাখতে পারলাম না ।
কালো মখমলের পেটানো শরীরে ডুব দিলাম নিজের জ্ঞানেই।