গারো পাহাড়ের গদ্যে মালা মিত্র

সেদিন দুজনে

হেমন্তের শিশির ভেজা ভোরে,ধামাচাপা দেওয়া কষ্টগুলো শিশির হয়ে, ঝরে রয়েছে ঘাসে ঘাসে।
ফোঁটায় ফোঁটায় আছে থাক, ছুঁতে চেনা প্লাবন হবে। কবেই তো হাত সরিয়ে নিয়েছ,গহীনেে যে সব না ফুরানো ক্ষণ, যেমন কার তেমন রয়ে গেছে।ন্যাপথলিনের সোহাগে সযত্নে রাখা।যখন তখন তারা বড় জ্বালায়, আস্কারা থাকে অবশ্য, আলমারি টেনেটুনে খুলি,ভালবাসার হাত বোলাই,আবার পাট করে রেখে দি, আজ আলমারির পাল্লা খুলে এটা বার করলাম, দেখোতো মনে আছে কি?
এমনি এক শীতের সন্ধ্যায় হীরাপুরের ‘ডাউকা বুড়ি মাতার মন্দিরের’পাশে,গঙ্গার ধারে,পাশাপাশি দুজন,ভাসাভাসি সুখ,আমার শাল খুলে তুমি আমাদের দুজনকে মুড়ে এক করে নিয়েছিলে।বসে ছিলাম আমরা যুথবদ্ধ, ‘পাখায় পাখায় বাঁধা যবে রয়, বিহগ মিথুন কথা নাহি কয়,মধুকর যবে ফুলে মধু পায় রহে না চঞ্চলতা’।মনে পড়ে প্রিয় জানলা গলে চাঁদের আলো গায়ে ধাক্কা মারলে?
সেদিনের সেই ছটফটে সদ্যযৌবন প্রাপ্তের পুষ্পপত্রের মত মেলে দেওয়া ঠোঁট থেকে, গাঢ় চুম্বনেে শুষে নিয়েছিলে তার একাল, সেকাল,সর্বকাল।
সেদিন ও পূর্ণিমা ছিল, ফুলডোরে কি বাঁধা ছিল না ঝুলনা’?
আজ তুমি পাশে নেই,মন আজ গভীর দিঘির মত স্থির।
মাঝে মধ্যে,মনে পড়ে বিভিন্ন সময় করা নক্সা, সার্জারীর মত খোদাই করা আছে দেহে মনে, ঢিল পড়লেই গলগল করে বেড়িয়ে আসে তপ্তলাভা , এতো যাপন গল্প, কোনো ইরেজারে মোছা যায় না।
দোষারোপ চাপান উতর চলতেই পারত,একদিকে এই ভাল,নিত্যকার ব্যবহারেে স্মৃতির রঙ মলিন হতে পারত, মনের মনিকোঠায় এ মনি মানিক্য চিরকালীন সঞ্চয়ে থাকত না, জমানো স্মৃতি ভান্ডার নিয়ে, এক জন্ম কেন জন্ম জন্ম এ ভালবাসায় ডুবে থাকা যায়, ফুরালে না ফুরায়,ক্রমান্বয়ে বাড়ে, চিরচর্চিত যত্নে রখা প্রেম ভালবাসা যার নাম।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।