সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ২০)
আমার কথা
৭৭
আমি যে আইন কানুন ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলাম, তা কোনোদিনই নয়। যদিও বাণিজ্য নিয়ে স্নাতক স্তর পড়তে গিয়ে বাণিজ্য ও শিল্প আইনের দু চারখানা পাত গলাধঃকরণ করেছিলাম। ভূমি দপ্তরের কর্মী হতে গেলে ডব্লিউ বি সি এস পরীক্ষা দিতে হত। তাতে তিনটি ঐচ্ছিক বিষয় নিতে হত সে যুগে। আমি ওই বাণিজ্য আইনটা নিয়েছিলাম। বাকি দুটি বাংলা প্রাচীন সাহিত্য আর ভাষাতত্ত্ব। ইন্টারভিউ বোর্ডে চেয়ারম্যান রথীন সেনগুপ্ত মশায় ফুট কেটেছিলেন – বেশ ফাঁকি মেরে চাকরি পাচ্ছ দেখছি! আচ্ছা, ইন্টারভিউ বোর্ডে বসলেই কি কেউ চাকরি পায়!
৭৮
ভূমি দপ্তরে এসে আমরা ধারা শিখতাম। আর বর্গা বা ভাগচাষ কেস করতে হত। ধারা মানে রেকর্ড করা। নিজের নামটা রেকর্ড করাতে পারলে হাউস বিল্ডিং লোন মিলত। চাকুরিজীবী লোকে ওই জন্যে পায়ের সুখতলা বাজি রাখত। কেননা, মিউটেশন জিনিসটা পুঁচকে অফিসাররা করে দিতে পারত না। ওটা ছিল মহারথীদের এক্তিয়ারে। মানুষ যে কি হয়রানি হত একটি হাউস বিল্ডিং লোন বাগাতে।
৭৯
জমি জরিপ বের করতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জনৈক প্রকাশক। হঠাৎ পারিবারিক বিপর্যয়ে বেসামাল হয়ে পড়ে তিনি হাত গুটিয়ে নেন। মানসীর সনির্বন্ধ অনুরোধে বিশিষ্ট প্রকাশক গুণেন শীল মহাশয় প্রকাশ করে দেন। এর আগে “পত্রলেখা” থেকে কোনোদিন আইনের বই বেরিয়েছে বলে শুনি নি। গুণেন দা’র সুচারু ব্যবস্থাপনায় মাস তিনেকের মাথায় দ্বিতীয় সংস্করণ হল জমি জরিপের।