জন্ম- ১৯৬৭, বরানগর।
বর্তমানে দার্জিলিং জেলার মিরিক মহকুমার উপশাসক ও উপসমাহর্তা পদে আসীন।
চাকরীসূত্রে ও দৈনন্দিন কাজের অভিজ্ঞতায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সমাধানে তাঁর লেখনী সোচ্চার।
আমি ধূমকেতুর সঙ্গে এসেছি, ধূমকেতুর সঙ্গে চলে যাব: প্রয়াণ দিবসে মার্ক টোয়েন স্মরণ
পৃথিবী বিখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন মার্ক টোয়েন (১৮৩৫ – ১৯১০)। আজ একুশে এপ্রিল তাঁর প্রয়াণদিবস। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার সুযোগ না পেয়েও নিজের চেষ্টায় তিনি জগৎবিখ্যাত হয়েছিলেন। তিনি ১৮৩৫ এর ত্রিশ নভেম্বরে জন্মেছিলেন। ওই সময় হ্যালির ধূমকেতু সূর্যের কাছে এসেছিল। মার্ক টোয়েন মজা করে বলেছেন, আমি ধূমকেতুর সঙ্গে এসেছি, ধূমকেতুর সঙ্গেই চলে যাব। মজার ব্যাপার, মার্ক টোয়েন মারা যান ১৯১০ সালের একুশে এপ্রিল। এই সময়ে আবার হ্যালির ধূমকেতু এসেছিল। এরমধ্যে ভৌতিক কোনো কিছুই নেই। কেননা হ্যালির ধূমকেতু সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসার পর আবার ৭৪ কি ৭৫ বছর পরে আবার সূর্যের কাছে ফিরে আসে।
স্যামুয়েল ক্লিমেন্স, যিনি পরবর্তীকালে মার্ক টোয়েন নামে জগদ্বিখ্যাত প্রণম্য লেখক হয়েছিলেন, তিনি তাঁর সদ্যকৈশোরে তেরো বৎসর বয়সে একটি ছাপাখানায় অ্যাপ্রেন্টিস হিসেবে কাজ শুরু করেন। শিশু শ্রমিক আর কি। পরে, ওঁর এক বড়ো দাদা, যিনি হানিব্যাল জার্নাল নামে একটি কাগজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাঁর কাছে কাজ করতেন। ১৮৫৭ সালে কিওকুক ডেলি পোস্ট নামে কাগজটি ক্লিমেন্সকে কমিক ভ্রমণপত্র লেখার কাজ দিয়েছিল। গোটা পাঁচ অমন পত্র লিখে ফেলার পর ক্লিমেন্স ওই কাজ ছেড়ে স্টিম বোটের পাইলটের কাজ শিখতে গেলেন। সেটা ১৮৫৭ সাল। আর দুটো বছর শিক্ষানবিশি করেই ১৮৫৯ সালে তেইশ বছর বয়সে তিনি পাইলটগিরির লাইসেন্স বাগিয়ে ফেললেন। মোটে বছর দুয়েক পাইলটগিরি করেছিলেন ক্লিমেন্স। স্টিম বোটের পাইলটগিরি কাজটা ওঁর জীবনে বিশেষ তাৎপর্যবহ। এই পাইলট গিরি করার সময়ই ক্লিমেন্স “মার্ক টোয়েন” ছদ্মনামটি নেন। মার্ক টোয়েন শব্দদুটি সে দেশের মাঝিগিরির ভাষা। নদীর জল যদি অন্ততঃপক্ষে দুই ফ্যাদম গভীরতা সম্পন্ন হয়, তবেই স্টিম বোট চালানো যায়। সাবধানে নৌ চালনার জন্য ওই দুই ফ্যাদম গভীরতার জলটুকু দরকার। মার্ক টোয়েন শব্দদ্বয়ের ওই অর্থ – দুই ফ্যাদম গভীরতা। ১৮৬১ সালে ক্লিমেন্স মাঝিগিরির পাট চুকিয়ে আবার ফিরলেন লেখালেখির জগতে। হাস্যরসপূর্ণ ভ্রমণগদ্য লিখে চললেন। কলমের নাম নিলেন মার্ক টোয়েন। এরপর প্রায় বছর পঞ্চাশ ধরে নিজেকে ওই মার্ক টোয়েন নামেই চেনালেন। ১৮৬৪ সালে তিনি চলে গেলেন সানফ্রান্সিসকো। সেখানে গিয়ে তিনি এক খাসা গল্প লিখলেন – দি সেলিব্রেটেড জাম্পিং ফ্রগ অফ ক্যালাভেরাস কাউন্টি। লিখেই বিখ্যাত হয়ে গেলেন। ১৮৭৫ এ প্রকাশ পেল টম সইয়ার। ১৮৮৩ তে লাইফ অন দি মিসিসিপি। ১৮৮৫ তে বেরিয়েছে তাঁর মাস্টার পিস, হাকলবেরি ফিন। ১৯১০ সালের ২১ এপ্রিল এই অনন্য সাধারণ কথাশিল্পী প্রয়াত হন।
তিনি বলেছিলেন, মানুষের জীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দুটো দিনের একটা হল, যে দিনটা সে জন্মাল, আর আরেকটা হল, যে দিনটা সে বুঝতে পারে আমি কেন জন্মালাম, আমার জন্মের সার্থকতাটা কি! আরো বলতেন, If you tell the truth, you don’t have to remember anything. আরো বলতেন, I have never let my schooling interfere with my education.