আজ ইউনাইটেড নেশনস ডে – লিখেছেন মৃদুল শ্রীমানী

আজকের দিনটি, ২৪ অক্টোবর, ইউনাইটেড নেশনস ডে। সারা পৃথিবী জুড়ে প্রতি বৎসর ২৪ অক্টোবর ইউনাইটেড নেশনস ডে পালন করা হয়। এই দিনে নানান সভা আলোচনা এবং প্রদর্শনীর মাধ্যমে সম্মিলিত জাতিসংঘের অস্তিত্বের সুফল এবং আগামী লক্ষ্য তুলে ধরা হয়। ১৯৭১ সাল থেকে জেনারেল অ্যাসেম্বলি সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে এই দিনটি সাধারণের ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করতে অনুরোধ করেছেন। ১৯৭২ সাল থেকে এই এক‌ই দিনে বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস হিসেবেও পালন করা হয়। ইউনাইটেড নেশনস হল আন্তর্জাতিক স্তরে শান্তি ও সুস্থিতি রক্ষা করার একটি সংস্থা। এর আরো কাজ হল দেশে দেশে জাতিগুলির মধ্যে সংহতি ও মৈত্রী ভাব বিকশিত করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মধ‍্য দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এটা সারা পৃথিবীর সবচাইতে বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা। এর কেন্দ্রীয় অফিস রয়েছে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে। সারা পৃথিবী এই অফিসের কর্মক্ষেত্র। বর্তমানে ১৯৩ টি রাষ্ট্র এই সংস্থার সদস‍্য। এবং দুটি দেশ রয়েছে দর্শক হিসেবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল সম্মিলিত জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। পঞ্চাশটি দেশের সরকারের প্রতিনিধিরা আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো শহরে মিলিত হয়ে একটি বৈঠকে সম্মিলিত জাতিসংঘের সনদ গ্রহণ করেন। এতে এই সংস্থার সচিবালয় জেনারেল অ্যাসেম্বলি, সিকিউরিটি কাউন্সিল, সামাজিক অর্থনৈতিক কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক আদালত, এবং ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল তৈরি হয়। খসড়া বয়ানটি ১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট তৈরি হলেও ১৯৪৫ সালের ২৬ জুন এটি গৃহীত হয়, এবং বলা হয় যে, ২৪ অক্টোবর ১৯৪৫ থেকে এটি কার্যকর হবে। এই সংস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি সামগ্রিক বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে শান্তি এবং সুস্থিতি বজায় রাখে।
আন্তর্জাতিক আইনগুলিকে বলবৎ করে নাগরিকদের জীবন যাত্রার মানের উন্নতি ঘটাতে অর্থনৈতিক সামাজিক ও স্বাস্থ‍্যসংক্রান্ত সমস্যাগুলিকে সমাধানের চেষ্টা করে এবং মানবাধিকার ধারণাটি যাতে সারা পৃথিবীতে মান‍্য করা হয়, মানবজীবনের সম্ভ্রম ও শালীনতা যাতে রক্ষিত হয়, ও জাতি, লিঙ্গপরিচয়, ভাষা এবং ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে বৈষম্য না ঘটানো হয়, তার উপরে নজর রাখে। এই দাবিসনদে একটি মুখবন্ধ, আর ঊনিশটি অধ‍্যায়ে বিন‍্যস্ত ১১১টি আর্টিকেল রয়েছে। নিউইয়র্ক ছাড়াও জেনিভা, নাইরোবি, ভিয়েনা এবং হেগ এ এই সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। এই সংস্থার অফিসিয়াল ভাষা ছয়টি। এগুলি হল, আরবি, চৈনিক, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ এবং স্পেনীয়। লীগ অফ নেশনস ব‍্যর্থ হয়ে যাবার পর এই জাতিসংঘ গড়ে ওঠে।
এই জাতিসংঘের অধীনস্থ নানা গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যেমন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ‍্য কর্মসূচি, ইউনেস্কো এবং ইউনিসেফ, সারা পৃথিবী জুড়ে মানব জীবনের উন্নতি সাধনে সক্রিয় রয়েছে। যাঁরা দেশে দেশে যুদ্ধাস্ত্র প্রতিযোগিতার বিপক্ষে, এবং মানবাধিকার আন্দোলনের সমর্থক, তাঁরা প্রত‍্যেকেই এ ধরনের অতি রাষ্ট্রীয় সংস্থার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুভব করে থাকেন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।