পঞ্চ পাণ্ডব বসে গুলতানি করছেন। কে কবে কোন্ কিশোরীকে দেখে মন উচাটন হয়ে ছিলেন, সেই সব গপ্পো। যুধিষ্ঠির সহ প্রতিটি পাণ্ডবের তো একাধিক স্ত্রী সঙ্গ করার অভ্যাস ছিল! এমন গুলতানি করার সময়ে এক ব্রাহ্মণ এসে হাজির। সে সময় বামুনদের বেশ একটু রবরবা ছিল। পাণ্ডবেরা বামুনকে বললেন, ঠাকুর কি খেতে ইচ্ছে করছে বলো। বামুনটি অতীব বিটলে। ঠকঠকে শীতের সময় বিচ্ছু বামুন বলে বসল এট্টু আম খেতে ইচ্ছে করছে।
পাঁচ পাঁচটি ভাই পরস্পরের মুখের দিকে চাওয়া চাওয়ি করেন। ভাইদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা যথেষ্ট। কেননা আপোসবণ্টন করে তাঁরা সকলেই দ্রৌপদীকে ভোগ করে থাকেন।
এমন সময় কৃষ্ণ এসে হাজির। তাঁকে বিপদের কথা বলতেই অসীম করুণাময় তিনি নিজের ট্যাঁক থেকে একটি শুকনো আমের আঁটি বের করে দিয়ে বললেন, তোমাদের মধ্যে যে কোনো একজন এই আঁটিটিকে মনের গহন সত্য কথা বলো, তাহলেই চমৎকার আমে ভরা গাছ মিলবে। বামুনকে খাওয়ানো যাবে।
এ আর এমন কি, বলে মহারাজ যুধিষ্ঠির সহদেবকে অর্ডার করলেন আমের আঁটিতে নিখাদ নির্ভেজাল সত্য কথা বলতে। এ আর এমন কি বলে সহদেব কি একটা বললেন, কিন্তু কোনোই ফল হল না।
পাঁচ পাঁচটি পাণ্ডব একে একে শুকনো আঁটিতে নিজের নিজের নির্ভেজাল নিখাদ গুহ্য সত্য বললেন। তবুও আমের দেখা নেই। মহারাজ যুধিষ্ঠিরের সাধারণত রাগ হয় না। তিনি এ দিন রেগে গিয়ে কৃষ্ণকে বললেন, শীতকালে আম হয় না সবাই জানে। আমের আঁটি নিয়ে এই ঠাট্টাটা করা তোমার ঠিক হয় নি। কৃষ্ণ বললেন, আমার কথা মিথ্যা হতে পারে না। ডাকো তোমরা যাজ্ঞসেনীকে। তিনি এসে বলুন কিছু। তারপর দ্যাখো চমৎকার। দ্রৌপদীকে ডাক দিলেন মহারাজ যুধিষ্ঠির। বুঝিয়ে বললেন, পাঞ্চালী, সত্য বলো। একমাত্র সত্যেরই জয় হয়। গালে টোল ফেলে মোনালিসা তুল্য হেসে বেদিজা অগ্নিসম্ভবা মেয়েটি বললেন, রাজা, সত্য বলব, তুমি সইতে পারবে তো? তোমার মেল ইগোকে সামলাতে পারবে?
কৃষ্ণ দ্রৌপদীর কথায় মুচকি হাসলেন। কিছু বললেন না। তখন দ্রৌপদী শুকনো আঁটির দিকে চেয়ে বললেন, কর্ণকে আমার খুব ভাল লাগে এখনো। ওর সাথে ফ্লার্ট করতে পেলে দুনিয়া দিয়ে দিতে তৈরি আছি।
অমনি আঁটি থেকে গাছ বেরিয়ে চমৎকার টুসটুসে আম। বামুন আম খেয়ে ভারি খুশি। কৃষ্ণ এবার আম খেয়ে পরিতুষ্ট বামুনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঠাকুর, এবার তুমি তোমার মনের কথা একটা শোনাও।
বামুন এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, ইয়েস ব্যাঙ্কের টাকা যে কে খেল, কোনো দিন সামনে আসবে না।