কবিতায় নিতাই চন্দ্র দাস
by
TechTouchTalk Admin
·
Published
· Updated
দাদুর আর্তি
নাতি কহে দাদু তুমি
বুড়ো হয়েছ অতি,
চুল পেকেছে দাঁত গেছে
ক্ষীণ চোখের জ্যোতি।
আমি দেখ মর্দ জোয়ান
দুই বাহুতে বল,
এক নিমিষেই ভাঙতে পারি
শক্ত লোহার কল।
দাদু কহে আমিও ছিলাম
তোমার মত এক কালে,
ছিল নব যৌবন মোর
এই জীর্ন কঙ্কালে।
মনে ছিল অদম্য শক্তি
দেহে ছিল বল,
ঘুরেছি একা বন বাদাড়ে
খেয়েছি কত ফল।
ঝোপ ঝাড়ে বনের ধারে
ঘুঘু পাখির বাসা,
খোঁজে খোঁজে ক্লান্ত হয়েছি
মেটেনি তবু আশা।
পুকুর পাড়ে বিলের ধারে
শাপলা তোলার তরে,
ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কেটে
এনেছি দু’মুঠো ভরে।
হাডুডু,দাড়িয়াবাঁধা,গোল্লাছুট
ফুটবল ক্রিকেট খেলে,
কত বিকাল কেটে গেছে
বন্ধু বান্ধব মিলে।
বরশি,টেটায় মাছ ধরেছি
খালে বিলে যেয়ে,
কত মাছ তোলে এনেছি
নানান জাল বেয়ে।
প্রাইমারি,হাইস্কুল আর কলেজে
অধ্যয়ন করতে এসে,
কত প্রতিকুলতার মুখোমুখি হয়েছি
জীবন গড়ার আশে।
বাহান্নর ভাষা আন্দোলন আর
ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান,
পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে রাস্তায়
কত করেছি অবস্থান।
কত শহীদের রক্ত ঢেলে
অধিকার এলো শেষে,
মায়ের মুখের বাঙলা ভাষা
সম্মান পেল এই দেশে।
পাকিস্তানিদের শাসন শোষণে বঞ্চিত
ছিল বাঙালির অধিকার,
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে মোরা
ফিরে পেলাম স্বাধিকার।
সংসার নামক ট্রেন গাড়িটি
টেনেছি এত কাল,
কখন জানি বিকাল হয়েছে
পাইনি তার তাল।
বাল্যকাল গেল কৈশোর গেল
যৌবন গেল শেষে,
সারা জীবন লড়াইয়ে ক্লান্ত
সময়ের স্রোতে ভেসে।