।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় নুুসরাত রীপা

রূপালী জোছনায়

১)
ভেজা চুলে গামছা দিয়ে খোঁপা করে, উঠোনের তারে ধোয়া কাপড় জামা মেলে রান্না ঘরে ঢুকল আদিজা। ভীষণ খিদে পেয়েছে। বাড়ি ভর্তি মেহমান। তিন ননদ তাদের স্বামী সন্তানসহ নাইওর এসেছে। প্রতি বছরই কার্তিকের মাঝামাঝি আসে অঘ্রানের মাঝামাঝি যায়। জামাইরা অবশ্য প্রথম দিকে পাঁচ সাতদিন থেকে চলে যায়। ননদেরা এলে এমনিতেই কাজ কাম বেড়ে যায়। তাদের জামাইরা থাকলে তো আরো ব্যস্ততা।
সেই সাত সকালে মুড়ি গুড় খেয়েছিল আর এক গ্লাস চা তারপর আর পেটে কিছু পড়ে নি। যদিও মাঠা চিড়ে, চা, গুড়ের সন্দেশ, পাটিসাপটা কত কিছুই হয়েছে সকাল থেকে কিন্তু আদিজার মুখে দেওয়ার সময় কই!
পিঁড়ি পেতে থালা নিয়ে বসলো আদিজা।
হাঁড়ির নিচে ঠান্ডা কড়কড়ে দলা পাকানো ভাত হাত দিয়ে ভেঙে ভেঙে প্লেটে তুলে নেয়। ডাল আর ভর্তা টা আছে। ফুলকপি আলু আর শিম দিয়ে বড় বড় কই মাছ করেছিল, আলু আর শিম পড়ে আছে কড়াইয়ের তলানীতে। চারটা মোরগ জবাই হয়েছিল, কয়েকটা হাড় পড়ে আছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাত মাখতে শুরু করলো আদিজা। মনে মনে হাসলো একটু। বাবা মায়ের ছোট সন্তান ও। সে হিসেবে বাড়িতে সবার আদরে বড় হয়েছে। সবচে ভালো খাবার, সবচ ভালো কাপড় ওকেই দেওয়া হতো। মুরগীর রানতো ওর জন্য নির্দিষ্ট। কেউ আগে খেতে বসলেও নিত না। জানতো এটা আদিজার। অথচ শ্বশুর বাড়িতে আসা অব্দি রান তো দূরে থাক মুরগীর একটা ভালো টুকরাও জোটে না ভাগ্যে।
আদিজার শ্বশুর অবস্থাপন্ন গেরস্থ। স্বামী আফজল একজন সফল কৃষক। গ্রামে তাদের মান আছে। ভাইবোনদের মধ্যে আফজল বড়। তার বয়স পঁয়ত্রিশের কোঠায়। আদিজা মাত্র সতেরো। বয়সের এই বিশাল ব্যবধানের কারণে অাফজলের সাথে আদিজার কথা বার্তা কম হয়। আফজল নিত্য কর্মের মত বিছানায় ও নিজের প্রয়োজন মতো আদিজাকে নেয়। তারপর ঘুমিয়ে পড়ে। আদিজার মন চায় জোছনারাতে পুকুর ঘাটে গিয়ে বসতে। ইচ্ছা করে কোনো বিকালে নৌকায় করে নদীতে ঘুরতে, কখনো মন চায় কাশবনে দৌড়ে বেড়াতে। কিন্তু বউ মানুষের এসব কাজ দৃষ্টিকটু । আদিজার মনে কত কথা গুঞ্জরন তোলে কিন্তু সে সব কথা মনে জেগে মনেতেই হারিয়ে যায়। আফজল আদিজার কথা বোঝে না। বুঝতে চায় ও না।
বিয়ের পর পর একদিন অলস দুপুরে, কাজ নেই বলে খেয়ে-দেয়ে আফজল বিছানায় গড়াচ্ছে, আদিজা পাশে বসে চোখে কাজল টানলো, লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট রাঙিয়ে স্বামীর দিকে তাকিয়ে হাসলো,ভাবলো আফজলের মুখে প্রশংসা বাণী শুনবে। কিন্তু আফজল কিছু বলল না। আদিজা চুলে বিনুনি করে আফজল কে বলল ঘরের পাশে জবা গাছ থেকে একটা ফুল এনে পরিয়ে দিতে।
আফজল হাই তুলতে তুলতে বলল, তুমি নিজেই তো গাছ থেইকা পারতে পার। যাও নিয়া আস। বলে পাশ ফিরে শুলো।
আদিজার চোখে তখন অবহেলার জল! ছোটবেলা থেকে আত্মীয়, বান্ধবী আর দাদী সম্পর্কীয় পাড়া পড়শীর মুখে শুনেছে নিজের চুলের প্রশংসা! এ যেন চুল নয়, মেঘরাশি। এই চুল তো জামাইরে পাগল করবো —
কিন্তু আফজল এসবের দিকে খেয়ালই করে না। অথচ বিয়ের জন্য কনে দেখার সময় মা আর বোনদের বলে দিয়েছিল বউ যেন সুন্দরী হয়। আদিজা বোঝে না, যে লোকের বউ এর দিকে তাকানোর সময় হয় না সে কেন সুন্দরী বউ খোঁজে!
পেটে অনেক ক্ষিদে থাকা সত্ত্বেও কয়েক নলা ভাত মুখে দেওয়ার পর আর খেতে ইচ্ছে করছে না আদিজার। ও হাত দিয়ে প্লেটের ভাতগুলো নাড়াচাড়া করে কিছুক্ষণ তারপর উঠে পড়ে।
পিঁড়ি টা দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে রাখতেই মোমেনার মা ঘরে ঢুকল। সে এ বাড়ির বাধা ঝি। হাঁড়িপাতিল ধোয়া, উঠোন ঝাড়ু দেওয়া কাপড় ধোয়া ইত্যাদি করে। আদিজার পরিত্যক্ত খাবার দেখে সে বিস্মিত হয়। অমা। কিছুই তো খাইলা না
ইচ্ছা করতাছে না খালা। তুমি এইসব ধুইয়া নিয়া আসো। সন্ধ্যারাতে সবাই পিঠা খাইব। নারকেল কুরাইতে হইব।
মোমেনার মা এঁটো থালা নিয়ে বেরিয়ে যায়। আদিজা ভাঁড়ার থেকে গোটা কতক নারকেল নামিয়ে রান্না ঘরের মেঝেয় রেখে নিজের ঘরে আসে।
মস্তো বাড়ি। বড় বড় ঘর। উত্তরের ঘর থেকে হাসির শব্দ ভেসে আসছে। মনে হয় সবাই টিভিতে কোনো হাসির অনুষ্ঠান দেখছে নয়ত আড্ডা দিচ্ছে। ছোট নন্দাই বেশ রসিক মানুষ। নানা রকম রসালো গল্প বলে আসর মাতাতে ওস্তাদ। হয়ত সে-ই গল্প বলছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে একবার উত্তরের ঘরের দিকে তাকায় আদিজা।
বিকেলের হলুদ রোদ গাছগাছালির ফাঁক ফোকড় দিয়ে ঘরের বিবর্ণ টিনের দেয়ালে লেপ্টে আছে।
ঘরের সামনে একটা মস্তো লেবু গাছ। ঝাঁকড়া ডাল পালায় ঘরের জানলা ঢাকা পড়ে গেছে। কিছু দেখা যায় না। আদিজা বিছানায় বসে ভেজা চুল পিঠে মেলে দেয়।
২)
আফজলরা দুইভাই তিনবোন। আফজল সবার বড়। বোনেরা বিবাহিত। একটা সময়ে আফজল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে বিয়ে করবে না। বাপ মা আত্মীয় পরিজন সবার অনুরোধ উপেক্ষা করে অটল ছিল নিজের সিদ্ধান্তে। বছর দুই আগে কলেজে পড়ুয়া ছোটভাই তার সহপাঠী কে বিয়ে করে ফেলে। সে জমিজমার কাজ করে না। শহরে একটা ছোট হোটেল মত করেছে। চা পুরী রুটি ভাজি এমনকি ভাত মাছ অব্দি পাওয়া যায়। বউ নিয়ে হোটেলের কাছেই একটা বাসা ভাড়া করে থাকে।
ছোট ছেলে বিয়ে করে ফেলার পর আফজলের উপর বাবা মায়ের বিয়ের চাপটা বেড়ে যায়। তাদের এক কথা, শেষ বয়সে দেখভালের কেউ রইল না। এত বড় জম জমাট বাড়ি এখন মরুর মত হা হা করে। আরো কত কী! আর বিয়ে করা তো একটা ফরজ কাজ ও।
আফজলের সাথে আদিজার বিয়ের যে ঘটক ছিল সে উভয় পরিবারের কাছেই পাত্র-পাত্রীর বয়স লুকিয়েছিল।ঘটকের জীবিকা ঘটকালি। একটা বিয়ে হওয়াতে পারলে সে উভয় পক্ষ থেকেই পারিশ্রমিক পায়। তাই বিবাহযোগ্যা পাত্র পাত্রী পেলে তাদের দুই হাত এক করার চেষ্টায় সে কার্পন্য করে না।
আদিজা আর আফজলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আফজলের বয়স টা সে বছর দশেক কমিয়েই বলেছিল আদিজার পরিবারে।
কৃষিকাজ করা গ্রাম্য যুবকেরা রোদে পোড়ে, বৃষ্টিতে ভেজে। কাঁদামাটি ঘেঁটে কাজ করে। হাল চষে, জমিতে মই দেয়। তাদের চেহারা ও স্বাস্থ্যে এর প্রভাব বেশ ভালোভাবেই পড়ে। বয়সের তুলনায় তাই একটু বেশি বয়সীই মনে হয়। এই কথাগুলোই আদিজার পরিবারকে বুঝিয়েছিল ঘটক।
আফজলের সাথে আদিজার ঠিক মিলে না। আদিজা সদ্য কৈশোরত্তীর্ণ, চঞ্চল পাখীর মতো। তার স্বপ্নীল মন। জোছনা আর বৃষ্টিতে হুটোপুটি করার বয়স। আফজল সব সময়ই গম্ভীর, বৈষয়িক। তার কথাবার্তায় মুরুব্বি ধরণ! ধান গোলায় ভরার শব্দকে আদিজার যখন মনে হয় নূপূর পরে কোন বালিকা ছুটে বেড়াচ্ছে, আফজলের সেটা ধানের শব্দই মনে হয়! কাজে কাজেই শ্বশুর শাশুড়ি এবং বাড়ির সবাই ভালে ব্যবহার করলে ও আদিজার মনের কোণের বিষাদ লুকানো থাকে না।
বালিশটা টেনে নিয়ে বিছানায় আধশোয়া হতেই স্বামীর মোবাইলটা দেখতে পায় আদিজা। ওরও মোবাইল আছে। কিন্তু সেটাতে শুধু কথা বলা যায়। আফজলের মোবাইলে নাটক, সিনেমা, গান, ভিডিও দেখা যায়। আদিজা মোবাইল টা ধরতে হাত বাড়িয়েও থেমে যায়, আফজল যদি রাগ করে!
উত্তরের ঘর থেকে আফজলের ছোট ভাই ফয়জলের কণ্ঠ ভেসে আসে। ঐ ভাবী আপনে কই পলাইয়া রইছেন। আমরা সবাই মজা করতাছি। আসেন না ক্যান—
ফয়জলের কণ্ঠ শুনে আদিজা হুড়মুড় করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। উত্তরের ঘরের বারান্দায় ফয়জল দাঁড়িয়ে আছে। পাশে তার বউ আর ছোট নন্দাই।
বড় বউ হলেও বয়সে সবার ছোট
আদিজাকে দেখতে পেয়ে ছোট নন্দাই বলে, ও আমার বুড়ি ভাউজ(ভাবী)
আপনের লাইগা তো আমাগো দিল পোড়ে। আপনে কী এত কাম করতাছেন কন তো!
আদিজা লজ্জায় অবনত হয়ে মাথায় শাড়ির আঁচল তুলে বলে, আইতাছি।
৩)
তিন ননদ, দেবরের বউ আর শ্বাশুড়ির সাথে পুরো সন্ধ্যা পিঠা তৈরী খাওয়া ও পরিবেশন চলে। উঠোনে চাটাই বিছানো হয়েছে। বাড়ির পুরুষেরা আর বাচ্চারা সবাই সেখানে বসেছে। আর আছে আফজলের দুই চাচাতো ভাই, এক মামা।চুলায় পিঠা ভাজছে আদিজা। গরম গরম পিঠা শ্বাশুড়ি প্লেটে সাজিয়ে দিচ্ছেন। ননদেরা কেউ নিয়ে যাচ্ছে। গল্প-গুজব, হাসি ঠাট্টা,বাচ্চাদের খেলাধূলো , হুল্লোড়ের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটা কেটে গেল।
এরপর মেজো ননদ প্রস্তাব তুলল এমন ঝাঁ চকচকে জোছনা রাতে সকলে মিলে নদীর ধারে বেড়াতে গেলে বেশ হয়! আফজলের এই বোনটি ছোট থেকেই একটু উড়ু উড়ু। তবে শৈশবে এই নদী আর নদী তীরের বিস্তৃর্ণ মাঠটা ঘিরে তাদের অনেক অম্ল মধুর স্মৃতি আছে। কাজেই প্রস্তাব সহজেই গৃহীত হল।
আদিজার শ্বশুর শ্বাশুড়ী যাবেনা। ফয়জলের বউ ও মাথা ধরেছে বলে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। বউ যাবে না তাই ফয়জল ও ঘরে থাকবে বলল। আদিজা যাবে কী যাবে না বুঝতে পারছে না। আফজল বলল, যাও। মমতা, আলিয়া সুমা তো যাইতেছে। পশ্চিম পাড়ার বাদলের লগে একটু দেখা করতে হইব। না হইলে আমিও আসতাম।
তিন ননদের চার বাচ্চা। তারা বাড়িতেই থাকবে। নানীর সাথে।ননদ তিনজন আর তাদের স্বামীদের সাথে আফজলের দুই চাচাত ভাই সহ আদিজা নদীর ধারে ঘুরতে চলল।
গ্রাম এখন তো আর নিরব স্তব্ধ থাকে না। আগের দিনের মত সন্ধ্যা হতে না হতেই এখন আর গ্রামের বুকে রাত্রির নির্জনতা নেমে আসে না। ইলেকট্রিসিটি, মোবাইল, নেট, ফেসবুক এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পৌঁছে গেছে। ফলে এখন ছেলে ছোকড়ারা অনেক রাত অবধি মাঠে ময়দানে বসে আড্ডা দেয়, ফেসবুক যারা চালায় নেট ওয়ার্ক পেতে ঘরের বাইরে থাকে দীর্ঘ সময়। কাজেই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেকের সাথেই দেখা হল।কথা হল।
৪)
নদীর ধারে মানুষজন নেই। সাদা জোছনা ঢেউ তুলেছে রুখু জমিনে। কার্তিকের হিম মেশানো বাতাসে সর সর করে দুলে ওঠে শনবন। দূরের কাশ ফুলের গুচ্ছে জোছনার আলো পড়ে একটা অপার্থিব
দৃশ্য সৃষ্টি করেছে।
মাঠের শুষ্ক ঘাসের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে পড়ল সবাই। আফজল এলে একটা নৌকা নিয়ে মাঝনদীতে খানিক বেড়াবে।
আপাতত আড্ডা চলুক।
নদীতে একটা নৌকা বাধা। ওখানে কেউ গান ছেড়ে রেখেছে। হেমন্তের হিম হিম মিঠে হাওয়ায় সে গান ভেসে আসছে। থই থই জোছনা, মৃদু সঙ্গীতের সুরে কেমন মোহময় হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
বড় নন্দাই তার শৈশবের গল্প বলছে। ছোট বেলা সে কত বোকা ছিল। সবাই সে সব শুনছে আর হাসিতে ফেটে পড়ছে।
আদিজার এখন হাসতে ভালো লাগছে না। ওর এখন মন খারাপ করে থাকতে ইচ্ছা করছে। ওর মনে হচ্ছে এই অপরূপ রাত হুল্লোড় নয় খুব নীরবে নিশব্দে উপভোগ করার!এই রাত একা একা নিজের সঙ্গে নিজের থাকার!
সে আস্তে করে উঠে পড়ে। তারপর ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করে আপনমনে, গন্তব্যহীন তবে অবচেতনভাবে কাশবনের দিকেই।
রুপোলী জোছনায় ভিজতে ভিজতে আদিজা ভুলে যায় ও কে, ও কী। কাশবনের ফিনফিনে ছায়ার পাশে মাথার ঘোমটা ফেলে আঁচল ছেড়ে দিলে সে আঁচল বাতাসে উথালপাতাল উড়তে থাকে, নিজেকে কাশফুলের মত মনে হয়।হালকা,নির্ভার!
আকাশ ভরা চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়া হালকা মেঘ গুলো যেন মেঘ নয়, কাশফুল সব উড়ে যাচ্ছে—-এই বুঝি আদিজাকে উড়িয়ে নেবে তাদের সাথে!
আনমনে দুহাত ছড়িয়ে আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল আদিজা। মনে মনে উড়ে যাচ্ছিল মেঘেদের সাথে! কতক্ষণ কে জানে! ছোট নন্দাই এর কণ্ঠে ওর সম্বিৎ ফেরে।সবাই ফিরবে বলে আদিজার খোঁজে সে এসেছে।
বাড়ি যাইবেন না ভাবী?আসমানের দিকে চাইয়া কী দেখেন? ছোট নন্দাই এর গলা শুনে চমকে ওঠে আদিজা। তাড়াতাড়ি আঁচল টেনে ঘোমটা দিতে যায়।
ছোট নন্দাই বলে, আপনে যখন আসমানের দিকে চাইয়া দাঁড়াইয়া ছিলেন মনে হইতেছিল একখান পরী আসমান থেইকা নাইমা আইসা আবার আসমানে উইড়া যাইতে রেডি হইতাছে ! তার কণ্ঠে মুগ্ধতা ঝরে পড়ে।
সে আবার বলে, চাঁন্দের আলোয় আপনারে এত সোন্দর লাগতেছিল —–
আদিজা, সদ্য কৈশোরত্তীর্ণ তরুণী, জীবনে এই প্রথম কোনও পুরুষের মুখে নিজের সৌন্দর্যের প্রশংসা শুনল। হোক সে নন্দাই,হোক পর পুরুষ! তবু বুকের ভেতর হৃৎপিন্ড টা ধুপধুপ শব্দে লাফাতে শুরু করে। গলা শুকিয়ে আসছে যেন! কোনমতে ঢোক গিলে লাজুক কাঁপা কন্ঠে বলে, যাহ্! কী যে কন!
সত্য কইলাম। আপনে পরীর চাইয়াও সোন্দর— জোছনার আলোয় তার চোখের মুগ্ধতা আদিজার চোখ এড়ায় না। চোখের ভেতর সে দৃষ্টি পুরে নিয়ে হইছে আর মিছা কইতে লাগব না, চলেন– বলে আদিজা।
বয়ে যাওয়া হিমেল বাতাসের সাথে যেন কী একটা সুর রিনরিন করে ওঠে বুকের ভেতর ।শুকনো সাদা মাঠ যেন আলোর সমুদ্র, আদিজার মনে হয় পা বাড়ালেই ও ডুবে যাবে !
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।